মানিকগঞ্জ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রেখে ব্ল্যাক আউট কর্মসূচী পালনের মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগে মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চার কর্মকর্তাকে যৌথ বাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মূলজান পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ভিতরে ব্ল্যাক আউট কর্মসূচী পালনের সময় তাদেরকে যৌথ বাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়। যৌথ বাহিনীর হেফাজতে নেওয়া ব্যক্তিরা হলেন- মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম রাজিবুল হাসান, এজিএম গিয়াস উদ্দিন খান শাকিল, এজিএম হাসিবুল ইসলাম ও হরিরামপুরের ডিজিএম সামিউল কবির। পরে যৌথ বাহিনীর হস্তক্ষেপে সাড়ে তিন ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ–সংযোগ চালু হয়। মানিকগঞ্জ সদর থানা-পুলিশ ও জেলা পবিস সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন ধরে দুই দফা দাবিতে সারা দেশে পবিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করছেন। তাঁদের দাবি, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে একীভূত করে অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করা। এদিকে দুর্নীতির দায়ে আজ সারা দেশে পবিসের ২০ জন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এর প্রতিবাদে ও দুই দফা দাবিতে সকালে মানিকগঞ্জ সদরের বাগজান এলাকায় পবিসের প্রধান কার্যালয় প্রাঙ্গণে কর্মবিরতি পালন করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে পুরো জেলায় বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তাঁরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন জেলাবাসী। খবর পেয়ে বেলা একটার দিকে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। যৌথ বাহিনীর সদস্যরা বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়ার জন্য পবিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হয়। বেলা একটার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, সেনাবাহিনীর দুটি ট্যাংকসহ সেনাসদস্যরা জেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রধান কার্যালয়ে যান। এ ছাড়া পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা পবিস কার্যালয়ে যান। জেলা প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আলী মিয়া সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পবিসের জেলার জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক মো. সুলতান নাছিমুল হকসহ পবিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা আলোচনা করেন এবং পরে বিদ্যুৎ–সংযোগ চালু করেন। যৌথ বাহিনীর নেতৃত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আলী বলেন, সারা দেশে পবিসের কর্মকর্তাদের বরখাস্তের প্রতিবাদে এবং দাবিদাওয়া নিয়ে বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ রেখে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন জেলা পবিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। যৌথ বাহিনীর সদস্যদের হস্তক্ষেপে সাড়ে তিন ঘণ্টা পর বেলা আড়াইটার দিকে বিদ্যুৎ–সংযোগ চালু করা হয়।