শেখ হাসিনাকে জনগণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করেছে, তাই তার পদত্যাগপত্রের কোন ভূমিকা নেই বলে দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। গতকাল সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ এ দাবি করেন। তিন লিখেছেন, ‘হাসিনাকে উৎখাত করা হয়েছে; একটি অবৈধ সরকারকে জনগণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করেছে। এখানে পদত্যাগপত্রের কোনো ভূমিকা নেই।’ প্রসঙ্গত, তীব্র গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন কি না, তা নিয়ে বিভিন্ন সময় আলোচনা হয়েছে।
শুরুতে প্রাসঙ্গিকভাবে এ আলোচনা সামনে এলেও পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেখ হাসিনার একটি ফোন রেকর্ড ফাঁসের ও কথিত ‘পদত্যাগপত্র’ ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়। অডিও কলে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, দেশ ছাড়ার আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেননি। তবে সে সময় সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মুখে কোনো সরকারপ্রধানই ঘোষণা দিয়ে পদত্যাগ করেন না। তারা বেশিরভাগ সময় পালিয়ে যান অথবা গ্রেপ্তার হয়ে থাকেন।
নতুন করে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে আলোচনা সামনে আসে দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির কথোপকথনে। রাষ্ট্রপতি সেই সময়ের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘চারদিকে অস্থিরতার খবর। কী হতে যাচ্ছে জানি না। আমি তো গুজবের ওপর নির্ভর করে বসে থাকতে পারি না। তাই সামরিক সচিব জেনারেল আদিলকে বললাম খোঁজ নিতে। তার কাছেও কোনো খবর নেই। আমরা অপেক্ষা করছি। টেলিভিশনের স্ক্রলও দেখছি। কোথাও কোনো খবর নেই। এক পর্যায়ে শুনলাম, তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। আমাকে কিছুই বলে গেলেন না। যা সত্য তাই আপনাকে বললাম।’
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘যাই হোক, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার যখন বঙ্গভবনে এলেন তখন জানার চেষ্টা করেছি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন কি না। একই জবাব। শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। মনে হয় সে সময় পাননি জানানোর। সব কিছু যখন নিয়ন্ত্রণে এলো তখন একদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব এলেন পদত্যাগপত্রের কপি সংগ্রহ করতে। তাকে বললাম, আমিও খুঁজছি।’ কথোপকথনের এক পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট বললেন, ‘এ নিয়ে আর বিতর্কের কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রী চলে গেছেন এটাই সত্য। তারপরও কখনো যাতে এ প্রশ্ন না ওঠে, সেজন্য সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়েছি।’