প্রকৃতিতে এখন শীতের আমেজ। আর শীতকালকে বলা হয় সবজির ভরা মৌসুম। এ সময় হরেক রকম শাকসবজির স্বাদ নেওয়ার সুযোগ মেলে। শীত আসতে এখনো খানিকটা সময় বাকি, এ সময় নওগাঁর মাঠে মাঠে চাষ পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি। টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। চলতি বছরে অতি বৃষ্টি ও বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছেন তারা। ফলে অল্প কিছুদিনের মধ্যে তাদের উৎপাদিত সবজি বাজারে চলে যাবে এবং শীতকালীন সবজি বিক্রি করে অধিক লাভবান হবে বলে আশা করছেন তারা। ধনবাড়ী উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, প্রতিবছর এ জেলায় উৎপাদিত সবজি জেলার চাহিদা পূরণ করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা পূরণ করে থাকে। জানা যায়, ধনবাড়ী উপজেলায় সব ধরনের শীত কালীন সবজি চাষ হয়ে থাকে। বৈরান ও ঝিনাই নদী থাকায় এই উপজেলার ভুমি বিন্যাস উর্বর হাওয়ায় বিশেষ করে উপজেলার উঁচু ও সমতল উপজেলায় প্রচুর শীত কালীন শাক-সবজি চাষ হয়ে থাকে। এ ছাড়া উঁচু জায়গায় ও প্রচুর পরিমাণে শীতের সবজি চাষ হয়ে থাকে। উপজেলার কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, এ বছর আগের তুলনায় জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে অনেক বেশি । কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সবজির ভালো ফলনের জন্য কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। চলতি বছর বন্যা ও অতি বৃষ্টির কারণে সবজি চাষে কিছুটা বিঘœ ঘটে। নষ্ট হয়ে যায় বীজ ও চারা। এর বিরূপ প্রভাব পড়ে ধনবাড়ী উপজেলার বাজারগুলোতে। হঠাৎ বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম বেড়ে যায়। বর্ষা মৌসুম কেটে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শুরু করেছেন শীতকালীন সবজি চাষ। সরেজমিনে দেখা যায়, ধনবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে চাষ করা সবজির মধ্যে রয়েছে ফুলকপি, পাতাকপি, মুলা, টমেটো, শিম, লাউ, পালংশাক, লালশাক সহ হরেক রকমের সবজি। কৃষকদের মধ্যে কেউ জমি তৈরি করছেন, কেউ জমিতে বীজ বা চারা রোপণ করছেন। কেউ আবার জমিতে গজিয়ে ওঠা সবজির চারা গাছের পরিচর্যা করছেন। সব মিলিয়ে কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। ক্ষেতের পর ক্ষেত যেদিকে চোখ যায় শুধু শীতের সবজি চাষাবাদের দৃশ্য। সবজি ক্ষেত নিংড়ানো, আগাছা পরিষ্কার ও পানি দিতে ব্যস্ত কৃষক ও কৃষাণিরা। অনাগত ফসলের দিকে তাকিয়ে তাদের মুখে তৃপ্তির হাসি। ধনবাড়ী উপজেলার মুশুদ্দি ইউনিয়নের মুশুদ্দি পশ্চিম পাড়ার জলিল বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে আমাদের এলাকায় প্রতি বছরই বাড়ছে শীতকালীন সবজি চাষের জমির পরিমাণ। এই অঞ্চলে এক সময় ধানের চাষ হতো। এখন সে জায়গায় নতুন নতুন বসতি হওয়াতে চাষের জমিগুলো সংকুচিত হয়ে পড়েছে। সেই ধান চাষের পরিবর্তে এখন এ এলাকায় হচ্ছে সবজির আবাদ। বীরতারা ইউনিয়নের বীরতারা গ্রামের কৃষক মজিদ মিয়া বলেন, অন্যান্য ফসলের চেয়ে শীতকালীন সবজি আবাদ করে বেশি লাভবান হওয়া যায়। এ কারণে আমি প্রতি বছরই সবজি চাষ করি। তাতে বাজারে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদাও থাকে, আবার লাভবান হওয়া যায়। বলিভদ্র ইউনিয়নের কৃষক জালাল বলেন, আমাদের এই আগাম সবজি বাজারে উঠার পরই কমে যাবে সবজির দাম। একই সঙ্গে বাজারে সবজির সংকটও কেটে যাবে। আশা করছি, এ বছর সবজি চাষে লাভবান হবো।