বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যে তাকে যেন দেশনায়ক বা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে উল্লেখ করা না হয়। গতকাল মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘আপনাদের নেতা হিসেবে, একজন সহকর্মী হিসেবে অনুরোধ রইলো আজকের পর থেকে দয়া করে আমার নামের সাথে দেশনায়ক বা রাষ্ট্রনায়ক উপাধি ব্যবহার করবেন না।’
কর্মশালায় নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দেন বিএনপির শীর্ষনেতা। এসময় তিনি ৩১ দফা, বাংলাদেশের ভবিষ্যত শাসন, বেকারত্ব দূর করাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। ৩১ দফা সম্পর্কে তারেক রহমান জানান, ভবিষ্যতে বিএনপি কীভাবে দেশ পরিচালনা করতে চায় তার এটি তার প্রস্তাবনা।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গার্মেন্টস ও রেমিট্যান্স শিল্পের বাইরে নতুন কর্মমুখর সেক্টর তৈরি করার সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে। আউটসোর্সিংয়ে অধিকাংশ মানুষ যেন বেশি যুক্ত হতে পারে সরকারিভাবে আমরা তা এনকারেজ করবো।’ সংস্কার প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে দেশ ও জাতি নিয়ে যে চিন্তা, যখন দেশে এই বিষয়গুলো নিয়ে কেউ চিন্তা করেনি, তখন বিএনপি ২৭ দফা দিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি দল যারা দেশ পরিচালনা করেছে। হয়তো অনেক কিছু করতে পারিনি। হয়তো অনেক কিছু করেছি।’ এসময় তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সরকারের অবদান ও সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করেন। এসময় তিনি ৩১ দফাকে প্রান্তিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। গ্রামপর্যায়ে ৩১ দফা নিয়ে উঠান বৈঠক করার আহ্বান জানান বিএনপির শীর্ষনেতা।
তারেক রহমান বলেন, ‘জনগণের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তি যদি না হয়, তাহলে যে সংস্কারই করি, কোনোটিই কাজে লাগবে না। রাজনৈতিক মুক্তি হচ্ছে জনগণের কাছে জবাবদিহি। যার যা ইচ্ছা করে যাবে, সেটা হবে না। সেটা সরকারি দল হোক, বিরোধী দল, এমপি হোক, মন্ত্রী হোক, জনগণের কাছে এর জবাব দিতে হবে। এটি নিশ্চিত করতে হলে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’ ভোটের মাধ্যমেই জবাবদিহিতা তৈরি হয় বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
কর্মসংস্থানের বিষয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশে এক কোটির বেশি বেকার রয়েছেন। আমাদের গার্মেন্টস ও রেমিট্যান্সের বাইরে নতুন সেক্টর তৈরির সম্ভাবনা সৃষ্টি করার সুযোগ আছে। আমি চেষ্টা করি, অতি দ্রুত পারবো না, অনেকাংশে সমস্যা কমিয়ে আনতে সক্ষম হবো। রাতারাতি সব হবে না। দেশ সবার, প্রত্যেকের অবস্থান থেকে একটু একটু এগিয়ে আসি। প্রত্যেকে যদি চেষ্টা করি ইনশাআল্লাহ ভালো কিছু করতে সক্ষম হবো।’ প্রশিক্ষণসভায় জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বক্তব্য রাখেন। মতামত দেন ঢাকা বিভাগীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।