উদ্বৃত্ত ধান উৎপাদনের জেলা নওগাঁ। এ জেলার অন্যতম প্রধান ধানের সময় এই অমন মওসুম। হেমন্তের এই সময় জেলার অবারিত মাঠ জুড়ে সোনালী ধানের বিছানা। চোখ জুড়ানো মনোরম দৃশ্য আর কৃষকের মুখে হাসি। জেলার মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে আমন ধান কাটা’র ধুম। ধানের ক্ষেতে কৃষকের হাতে কাস্তের কচাকচ শব্দ। আর ধান বিক্রি করে পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজনীয় কাপড় চোপরসহ বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রী কেনার রঙিন স্বপ্ন। কৃষকরা জমি থেকে ধান কেটে বাড়ির আঙিনায় নিয়ে এসে বিশেষ কৌশলে ধানগাছ থেকে ধান গুলোকে আলাদা করতে এবং গৃহিনীরা সেই ধান ঝেড়ে পুঁচে গোলায় ভরতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্র মোতাবেক মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলার মোট জমির শতকরা ২৫ ভাগ ক্ষেতের ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর নওগাঁ’র উপ পরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন চলতি খরিপ-২/২০২৪-২৫ মওসুমে মোট ১ লক্ষ ৯৬ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা। জেলার ১১টি উপজেলায় উপজেলা ভিত্তিক আমন ধান চাষের পরিমাণ হচ্ছে নওগাঁ সদর উপজেলায় ১১ হাজার ২৫০ হেক্টর, রানীনগর উপজেলায় ১৮ হাজার ৪৫০ হেক্টর, আত্রাই উপজেলায় ৬ হাজার ৯৭০ হেক্টর, বদলগাছি উপজেলায় ১৪ হাজার ৪৮৫ হেক্টর, মহাদেবপুর উপজেলায় ২৮ হাজার ৯২৫ হেক্টর, পতœীতল্ াউপজেলায় ২৩ হাজার ৪২০হেক্টর, ধামইরহাট উপজেলায় ২১ হাজার ১০ হেক্টর, সাপাহার উপজেলায় ৯ হাজার ৮শ হেক্টর, পোরশা উপজেলায় ১৫ হাজার ২৯০ হেক্টর, মান্দা উপজেলায় ১৬ হাজার ১০০ হেক্টর এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় ৩০ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা। জেলার কৃষকরা কৃষি বিভাগের পরামর্শ মোতাবেক চলতি মওসুমে স্বর্না, ব্রি-ধান-৩৪, ব্রি-ধান-৫১, ব্রি-ধান-৫২, ব্রি-ধান-৪৯, ব্রি-ধান-৭৫, ব্রি-ধান-৮৭, ব্রি-ধান-৯০, ব্রি-ধান-৯৩, ব্রি-ধান-৯৪, ব্রি-ধান-৯৫, ব্রি-ধান-১০৩ এবং স্থানীয় জাতের মধ্যে বিন্নাফুল, বিনা ধান-১৭ এবং চিনি আতপ জাতের ধান চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগের সূত্রমতে উল্লিখিত পরিমাণ জমি থেকে চলতি মওসুমে ৯ লক্ষ ৮২ হাজার ৫৯৫ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হবে। চালের আকারে যার পরিমাণ ৬ লক্ষ ৫৫ হাজার ৭০ মেট্রিকটন।