পাবনার ভাঙ্গুড়া প্রেস ক্লাবের অবৈধ পকেট কমিটি বাতিলের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ভাঙ্গুড়া প্রেসক্লাবের ৬ জন যুগ্ন আহবায়ক সহ ১২ জন সদস্যের স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন সাংবাদিকবৃন্দ। জানা যায় , ভাঙ্গুড়ায় কর্মরত সকল সংবাদ কর্মীকে একত্রিত করে একটি বৈষম্য বিরোধী প্রেসক্লাবের কমিটির গঠনের উপলক্ষে ১৭ আগস্ট ২০২৪ এ ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। আহবায়ক কমিটি ১১নভেম্বর পর্যন্ত সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেন। বাবলু আহবায়ক কমিটির আহবায় হবার পর থেকে প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী ও স্বেচ্ছাচারিতা শুরু করেন। সে মিটিংয়ে আহবায়ক কমিটির সকলকে না জানিয়ে তার পছন্দের পাঁচ ছয় জনকে নিয়ে সকল সিদ্ধান্ত নেন। আনেক সাংবাদিকের আবেদন জমা না নেওয়ার অভিযোগ রয়েছ তার বিরুদ্ধে। তিনি আহবায়ক কমিটির মিটিং না করে আবেদনকারীদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই না করে আবেদনকারীদের সদস্য পদ বৈধতা না দিয়ে গত ১৪ নভেম্বর রাত আটটার দিকে উপজেলা সদরের বাইরে দিলপাশার ইউনিয়নের পাটুল গ্রামে একটি ভাতের হোটেলে তার নিজস্ব লোকজন নিয়ে একটি পকেট কমিটি করেন। এই পকেট কমিটির বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানা জানি হয়। এনিয়ে ভাঙ্গুড়া সংবাদ কর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এই অবৈধ কমিটি প্রত্যাখ্যান করে ক্ষমতালোভী কথিত সভাপতি মাহবুব উল আলম বাবলু তথা কথিত কমিটিকে সরকারি সকল দপ্তর থেকে আমন্ত্রন সহ অন্যান্য সহযোগিতা না করার দাবি ভাঙ্গুড়ার কর্মরত সকল সাংবাদিকের। আরো জানা যায়, ১৯৯০ সালে প্রেসক্লাবের সভাপতি পদ লাভ করার পর থেকেই প্রেস ক্লাবের কোন নিয়ম না মেনে উনার কাছের আত্মীয়-স্বজনদের বিভিন্ন পত্রিকার নাম ব্যবহার করে প্রেসক্লাব গুরুত্বপূর্ণ পদে সদস্য রেখে নির্বাচন ছাড়াই সভাপতি থেকেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছর পাবনা ৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মকবুল হোসেনের শ্যালক পরিচয়ে এমপির নাম ভাঙ্গিয়ে ক্ষমতার দাপটে নির্বাচন ছাড়াই কমিটি রেনু করার মাধ্যমে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সভাপতি পদ বহাল রাখেন,। প্রেসক্লাবের ১৬ নম্বর সদস্য ও প্রতিদিনের সংবাদের ভাঙ্গুড়া উপজেলা প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম আপন তার ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন, পোস্টে লেখা ছিলেন প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুব আলম নিজের সভাপতির পদ টিকিয়ে রাখতে প্রেসক্লাবের ১৬ জন সদস্যর মধ্যে নিজের ভাগ্নে সহ ৭ জন ভুয়া সাংবাদিকে গোপনে অন্য পত্রিকার নাম ব্যবহার করে প্রেসক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ পদসহ সদস্য বানিয়ে রেখেছেন। যে সকল পত্রিকার নাম ব্যবহার করা হয়েছে সে সকল পত্রিকার সম্পাদক মন্ডলীদের নজরে আসে। সম্পাদক মন্ডলীরা ক্লাবের সভাপতি মাহবুব আলমকে প্রেসক্লাবের কমিটিতে পত্রিকার নাম সংশোধন করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। অন্যথায় মামলা করবেন বলে জানিয়ে দেন। মাহবুব আলম বাবলু উপায় না পেয়ে প্রেসক্লাবে জরুরী মিটিং তলপ করেন। সকল সদস্যের উপস্থিতিতে রেজুলেশনের মাধ্যমে কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করেন। ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন এবং পরবর্তীতে ঐ সকল ভুয়া সদস্যদের বাদ দিয়ে মূল ধারার সাংবাদিকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়।৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বাবলু সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মকবুল হোসেনের শ্যালক থেকে হয়ে যায় পাবনা জেলা বিএনপি সদস্য সচিব মাসুদ খন্দকারের দুলাভাই। সে তার প্রভাব খাটিয়ে আবারো প্রেসক্লাবে সভাপতি হতে শুরু করেন স্বৈরাচারিতা। এক নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক বিকাশ চন্দ্র চন্দ বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনকালে এমপি আলহাজ্ব মকবুল হোসেনের প্রধান উপদেষ্টা এখন বিএনপি হয়ে তার আত্মীয় নাম ভাঙ্গে প্রেস ক্লাবের গঠনতন্ত্র না মেনে রাতের আঁধারে একটি পকেট কমিটি গঠন করেছে যা অতি দুঃখজনক এই পকেট কমিটি ভাঙ্গুড়ার সকল কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ বর্জন করেছে। এ বিষয়ে প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও যুগ্ন আহবায়ক মোঃ রায়হান আলী এই অবৈধ কমিটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, স্বৈরাচারী বাবলু ১৫ বছর এমপি আলহাজ্ব মোঃ মকবুল হোসেনের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন, বর্তমানে তার আত্মীয় জেলা বিএনপি সদস্য সচিব সেই ক্ষমতা খাটিয়ে আবারো আমাদের হয়রানি করছে। স্মারকলিপি প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা: নাজমুন নাহার অভিযোগ প্রাপ্তি স্বীকার করে বলেন, দীর্ঘদিন যাবত এ রকম চলে আসছে বিষয়টি আমি দেখছি। আপনারা পাবনা প্রেসক্লাবকেও অবগত করেন।