জুলাই-আগস্ট গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলামকে আগামী ১৭ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদনসহ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলন রোধে নিউমার্কেট এলাকায় সংঘটিত হত্যাকা-ের ঘটনায় দায়ের করা এক মামলায় তাদের দুইজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তদন্তে প্রাপ্ত অভিযোগসমূহ ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয়। সে আবেদন মঞ্জুর করে তাদেরকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ করার আদেশ দেয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বিগত ১৯ জুলাই ১৪-দলের মুখপাত্রদের সাথে গণভবনে বৈঠক করে বিগত সরকার। সেখানে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি এবং আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।’
‘আমির হোসেন আমু আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে সেই বৈঠকে উপস্থিত থেকে এইসব নির্দেশ দেন এবং পরবর্তীতে তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করেন। সেই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০ জুলাই থেকে দেশে কারফিউসহ নির্বিচারে গুলি করে ছাত্র জনতা হত্যার ঘটনা ঘটে’, তিনি বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘২০ জুলাই থেকে ঢাকা-২ আসন এর সংসদ সদস্য কামরুল ইসলাম এর সংসদীয় আসনের অন্তর্গত নিউমার্কেট থানা এলাকায় ছাত্র জনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যাকা- চালানো হয়, যার দায় তিনি চাইলেও এড়াতে পারেন না।’
প্রসিকিউটর তামিম বলেন, ‘কামরুল ও আমু আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য থাকাকালীন অবস্থায় দলীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে আওয়ামী লীগ ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং দলীয় ক্যাডার বাহিনী দিয়ে নিধনযজ্ঞ চালায়, যার সুস্পষ্ট প্রমাণ ট্রাইব্যুনালের হাতে আছে। অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে আরও প্রমাণ এর সাথে যোগ হবে।’
গতকাল বুধবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে প্রোডাকশন ওয়ারেন্টে আমির হোসেন আমু এবং কামরুল ইসলামকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এর আগে, ২ ডিসেম্বর এক আদেশে তাদেরকে আজ হাজির করতে আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
এজলাসে আমু ও কামরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনান প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম ও এবিএম সুলতান মাহমুদ। এসময়, আমুর আইনজীবী নাজমুস সাকিব আদালতে উপস্থিত ছিলেন।