রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন

ভালুকা মুক্ত দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

ময়মনসিংহের ভালুকায় ৮ ডিসেম্বর ভালুকা মুক্ত দিবস উপলক্ষে র?্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর (রবিবার) সকালে একটি বর্ণাঢ্য র?্যালি উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাসস্ট্যান্ড শহীদ স্মৃতিসৌধে এসে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপজেলা প্রশাসন ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। পরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া প্রার্থনা করা হয়। ১৯৭১ সালে ১৭ এপ্রিল ১টি মাত্র রাইফেল ও ৮ সদস্য নিয়ে একটি গেরিলা মুক্তিবাহিনী দল গঠন করেন মেজর আফসার উদ্দীন। পরবর্তীতে ভালুকা থানা দখল করে সংগ্রহ করেন ১৫/১৬টি রাইফেল ও প্রচুর গোলাবারুদ। ওই ৮ সদস্যের দল পরে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মুক্তিযোদ্ধার বিশাল বাহিনীতে রুপ নেয়। এফ জে ১১নং সেক্টরের ময়মনসিংহ সদর দক্ষিণ ও ঢাকা সদর উত্তর সাব সেক্টর অধিনায়ক মেজর আফসার ব্যাটেলিয়ন নামে পরিচিতি লাভ করে। যুদ্ধকালীন আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য ডাক্তার রমজান আলী তরফদারের তত্বাবধানে ৫জন ডাক্তার ১০জন সহকারী চিকিৎসক ও ৪জন নার্সের সমন্বয়ে আফসার ব্যাটেলিয়ান হাসপাতাল নামে একটি ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল পরিচালিত হয়। ১৯৭১ এর ২৫জুন শুক্রবার সকাল হতে ভালুকা-গফরগাঁও সড়কের ভাওয়লিয়াবাজু এলাকার শিমুলিয়া নদীর পাড়ে পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে আফসার বাহিনী সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হন। টানা ৩৬ ঘণ্টা একটানা যুদ্ধ হয়। শুক্রবার শুরু হওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পাক বাহিনী চারিদিকে পানি বেষ্টিত নদীর পূর্বপারে গোয়ারী যোগীপাড়া নামক স্থানে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সারাদিন সারারাত তিন দিক থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে অনেক পাকসেনা নিহত হয়। পরেরদিন শনিবার সন্ধ্যার দিকে যুদ্ধক্ষেত্রের ৪ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে ধলিয়া গ্রামে ধলিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হেলিকপ্টার থেকে পাক বাহিনী নামিয়ে দিলে মুক্তিযোদ্ধারা ডিফেন্স ছেড়ে চলে আসেন। এই যুদ্ধে আফছার বাহিনীর তরুন যোদ্ধা অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মল্লিকবাড়ি গ্রামের আব্দুল মান্নান মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। মজিবর রহমানসহ আহত হন আরও ৫জন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধারা নদীর পশ্চিম দিক হতে একটানা দু‘দিন সম্মুখ যুদ্ধ করায় শতাধিক পাক সেনা নিহত হয়। ঐতিহাসিক ওই যুদ্ধের খবর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র হতে সম্প্রচার করা হয়। ওই যুদ্ধের পরে ভালুকা থানা ও বাজার এলাকায় পাক বাহিনীর ক্যাম্পটি শক্তিশালী করা হয়। আফসার বাহিনী যুদ্ধকালীন বিভিন্ন সময়ে একাধিক বার ভালুকা পাক হানাদার ক্যাম্পে আক্রমণ চালিয়েছে। এছাড়া আমলীতলা যুদ্ধ, বল্লা যুদ্ধ, ত্রিশাল, গফরগাঁও, ফুলবাড়ীয়া, শ্রীপুর, মল্লিকবাড়ি, মেদুয়ারীসহ বিভিন্ন স্থানে পাক বাহিনী ও রাজাকারদের সাথে আফসার বাহিনীর অসংখ্য যুদ্ধ হয়। দীর্ঘ ৯ মাসের বিভিন্ন যুদ্ধে ৪৭জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com