টাংগাইলে ধনবাড়ী পৌর শহরের ঐতিহ্যবাহী বিলাশ পুর হামিল বিলে শীতের অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। পাখির কিচিরমিচির শব্দ, ঝাঁক বেঁধে ওড়ে বেড়ানো ও বিলের পানিতে ঝাঁপাঝাঁপি- এ যেন অন্যরকম সৌন্দর্যে সেজেছে। এ সব দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন ছুটে আসছেন অসংখ্য পর্যটক। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শীত মৌসুমে অতিথি পাখির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে ধনবাড়ী উপজেলার সর্ববৃহৎ বিল ধনবাড়ীর হামিলবিল। আর হামিলবিলের প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে চোখ জুড়ানো দৃশ্যের একটি অন্যতম বিভিন্ন প্রজাতির নানা আকৃতির পাখি। বিলে পাখিদের কোলাহল, কলরব, ডানা মেলে অবাধ বিচরণ, ঝাঁকে ঝাঁকে শীতের শুরুতে অতিথি পাখিদের আগমন সকলেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তাই পুরো হামিলবিল এলাকাতেই এখন অতিথি পাখির আগমন যেন লক্ষ্যণীয়। জানা যায়, ধনবাড়ী ও যদুনাথ পুর ইউনিয়নের কিছু অংশ বিস্তৃত এই হামিলবিল। বিশেষ করে ধনবাড়ী পৌর শহরে অধিকাংশ স্থানজুড়ে এর অবস্থান। মেইন সড়ক থেকে নামলেই চোখ-মন ছুঁয়ে যায় সবুজের সমারোহ, বক ও বালিহাসসহ অসংখ্য অতিথি পাখির উড়াউড়ি, দূরের গ্রাম, জল-মাটি-মানুষসহ আরও কত কী! আর মাছে ভরপুর হাটু পানিতে প্রতিদিন ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখিদের মিলন মেলায় যেন স্বর্গীয় পরিবেশ তৈরি হয়েছে হামিলবিল জুড়ে। দিনের আলোতে হামিলবিলজুড়ে দলবদ্ধ অতিথি পাখির বিচরণ করার চিত্র যে কাউকেই মুগ্ধ করবে। হামিলবিল পারের প্রকৃতিক প্রেমিক খোকন জানান, প্রতি বছর এই সময় মৎস্য ভান্ডার খ্যাত হামিলবিলে নিজেদের আহার যোগাতে বক, বালিহাস, প্রাণকৌড়ি, শামুককলসহ বিভিন্ন প্রজাতির ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির আগমন ঘটে। আর থাকে ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত। ধনবাড়ী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিল খসরু জানান, শীত এলেই হামিলবিলের বিভিন্ন এলাকায় অতিথি পাখি ভিড় করে। আর এসময় পাখি শিকারিদের কোলাহলও বেড়ে যায়। এতে করে বিলের সৌন্দর্য্যও জীব-বৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। হামিলবিলের পাখি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার বিষয়ে তৃণমূল পর্যায়ে গণসচেতনতা নিশ্চিতকরতে হবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন কাজ করতে হবে। বিল পাড়ের মানুষের মধ্যে অসচেতনতার কারণে ডাহুক, তীরশুল, নলকাক, ভাড়ই, রাংগাবনী, গাংচিল, রাতচড়া, হুটটিটি, হারগিলা, উল্লেখযোগ্য বেশকিছু পাখি বিলিন হয়ে গেছে।
বিল পাড়ের মানুষ দের এই অতিথি পাখিদের বাঁচানোর জন্য উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে হবে বলে জানান তিনি। এলাকাবাসী জানান, বর্ষার শেষ ভাগে বিলে পানি কমতে শুরু করায় ফসলী আবাদী জমি পানির নিচ থেকে বের হয়ে আসে আর ওসব জমিতে স্বল্প পরিমাণ পানি থাকায় পানি থাকায় ছোট মাছ, শামুক, পোকা-মাকড়ের আমদানী বেশি হয়। সেসব খাওয়ার জন্য নানা ধরণের পাখি ঝাঁক বেঁধে ছুটে আসে এই হামিল বিলে। যার ফলস্বরূপ হামিলবিল এলাকা হয়ে ওঠে মনমুগ্ধকর প্রাকৃতিক লীলার এক অভয়াশ্রম। এসব অতিথি পাখি যাতে কোন শীকারীর কবলে না পড়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট এমনটাই আশাবাদী এলাকার প্রকৃতিপ্রেমীরা।