বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ০৬:৩১ অপরাহ্ন

ধানের সোনালি চাদরে মোড়ানো কৃষকের হারানো স্বপ্ন

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২০

চলনবিলসহ সিরাজগঞ্জ জেলায় চলতি রোপা-আমন মৌসুমে সোনালি ধান কাটার উৎসব শুরু হয়েছে। সাধারণ শ্রমিকদের পাশাপাশি চলনবিলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ শ্রমিকরা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে মাঠে মাঠে ধান কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

জেলার মাঠের পর মাঠ এখন পাকা ধানের সোনালি চাদরে মোড়ানো। পর পর পাঁচবারের বন্যায় ক্ষতি হওয়ার পরও কৃষি বিভাগ মনে করছে, জেলায় রোপা-আমন মৌসুমে যে পরিমাণ আমন ধানের ফলন হয়েছে, তাতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন কৃষকরা। সোনালি ধানে হাসি ফিরবে কৃষকের মুখে। এরইমধ্যে গত ক’দিন ধরে শতকরা ১০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। শ্রমিক সংকট না হলে আগামী মাসের মাঝামাঝি জেলার ধানের ফলন কৃষক ঘরে তুলতে পারবেন হবে বলে আশা করছে কৃষি অধিদফতর।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ডিডি) আবু হানিফ জানান, সিরাজগঞ্জ জেলায় পর পর পাঁচবারের বন্যায় প্রায় ৩ হাজার ৪০৬ হেক্টর জমির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জেলার ৯টি উপজেলায় রোপা-আমনের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৬৯ হাজার ২৫০ হেক্টর ধরা হয়। কিন্তু ৫ দফা বন্যার কারণে লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হয়। শেষ পর্যন্ত ৬৮ হাজার ৪০৬ হেক্টর জমিতে রোপা-আমনের চাষাবাদ হয়। বন্যার কারণে জেলার ৯ উপজেলায় প্রায় ৮৪৪ হেক্টর জমিতে আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এবার ফলন বেশ ভাল হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, এবারে রোপা-আমন ধানের ফলন ভালো হওয়ায় ৫ দফা বন্যার ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে কৃষক। এদিকে, ধান কাটা শুরু হওয়ায় খড়ের দাম নামতে শুরু করায় বর্তমানে গো-খাদ্যের সংকট কিছুটা কাটতে শুরু করেছে। গত মাসে খড় আঁটিপ্রতি ১৪/১৫ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৪/৫ টাকায় নেমে এসেছে বলে জানা গেছে।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার খানসোনতলা গ্রামের কৃষক সালামত আলী জানান, আমাদের বিলে এখনও রোপা-আমন কাটা শুরু হয়নি। তবে বন্যা হলেও ধান মোটামুটি ভালো হয়েছে। আবার শ্রমিক সংকট না হয়, সেটাও ভাবছি।
পার্শ্ববর্তী সোনাতলা গ্রামের বর্গাচাষি সিরাজ উদ্দিন বলেন, করতোয়া নদীর পাড়ে পতিত এক বিঘা জমিতে রোপা-আমন লাগিয়েছিলাম। কিন্তু ফলন তেমন হয়নি। আগামী সপ্তাহে ধান কাটা-মাড়াই শুরু হবে। তবে এবার ধানের দাম গতবারের চেয়ে বেশি। চলনবিল অধ্যুষিত দেশীগ্রাম ইউনিয়নের বলদীপাড়া গ্রামের কৃষক সুলতান আলী বলেন, এবার আমার প্রায় ১৫ বিঘা জমির বপনকৃত রোপা-আমন ধান শুরুতেই হলুদ হয়ে নষ্ট হয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী জমিতে নানা ধরনের কীটনাশক প্রয়োগ করেছি, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুল নাহার লুনা বৃহস্পতিবার দুপুরে বলেন, এবারে পাঁচবার বন্যায় জলাবদ্ধতার কারণে ১৫০০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া প্রায় ২০/২৫ বিঘা জমিতে দীর্ঘ সময় পানি থাকার কারণে রোপা-আপন ধান হলুদ হয়ে যায়। পরে অনেক চেষ্টা করেও ওই পরিমাণ ধানের আবাদ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com