শীতের পূর্ব প্রস্তুতি চলছে দিনাজপুরের হিলির তুলা মার্কেটে। তবে এখনও শীতের গরম পোষাক বিক্রি শুরু হয়নি বাজারের গার্মেন্টসগুলোতে। এদিকে শীতের আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাকিমপুর (হিলি) পৌর মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত। হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পোষাক মার্কেটে শীতের গরম কাপড় কেনার ধুম এখনও পড়েনি। স্বাভাবিক কাপড় ক্রয় করতে এসেছেন ক্রেতারা। তবে প্রতিটি দোকানিরা বলছে, শীতে তেমন বেচা-কেনা এখনও শুরু হয়নি। দিনে দুই-চারটি করে গরম কাপড় বিক্রি হচ্ছে। বাজারের প্রতিটি দোকানে শীতের জন্য বিভিন্ন প্রকার বিদেশি কম্বল, ভারতীয় চাদর, জ্যাকেট, ছুয়েটারসহ দেশি শীতের গরম পোশাক সাজানো রয়েছে। এদিকে তুলা বাজারে শুরু হয়েছে তুলার বেচা-কেনা আর লেপ তৈরির ধুম। ব্যস্ত সময় পার করছেন লেপ-তোষক তৈরি কারিগররা। বড় আকারের লেপ তৈরির মজুরি নিচ্ছে ২৫০ টাকা আর মাঝারি আকারের লেপ তৈরি ১৫০ টাকা। এর মধ্যে তুলা ব্যবসায়ীরা সেই মজুরি থেকে কারিগরদের নিকট প্রতি লেপে নিচ্ছে ৫০ টাকা। কেননা কারিগররা ঐ তুলা ব্যবসায়ীর দোকানে থেকে কাজ করে এবং লেপ সেলাইয়ের সকল সরঞ্জাম ব্যবসায়ী দিয়ে থাকেন। লেপ সেলাই কারিগর আলামিন, সুলতান ও হোমায়ন বলেন, আমরা তিনজন মিলে এক সাথে লেপ-তোষক সেলাইয়ের কাজ করি। ১০ থেকে ১২ দিন থেকে লোকজন লেপ সেলাই করতে আসছেন। প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ টি লেপ সেলাই করছি। তোষকের কাজ এখনও আসা শুরু হয়নি। বড় লেপ ২০০ টাকা আর মাঝারিটা ১০০ টাকা করে মজুরি পাই এবং এই টাকা তিনজন ভাগাভাগি করে নিয়ে থাকি। লেপ তৈরি করতে আসা মরিয়ম বেগম বলেন, বাড়িতে যে লেপ আছে তা দিয়ে আগের লোকসংখ্যার চাহিদা পুরন হয়েছে। এখন বর্তমার ছোট বাচ্চারা বড় হয়েছে, তাই ওদের জন্য আলাদা লেপের প্রয়োজন হবে, তাই তাদের জন্য দুইটি লেপ বানাচ্ছি। তুলা ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক খাঁন বলেন, এখন শীতের কাজ পুরোদমে শুরু হয়নি। শীতের প্রভাব এখনও পড়েনি। তবে শীতের পূর্ব প্রস্তুতির জন্য লোকজন আগাম লেপ তৈরি করছেন। আরও কয়েকনি পর কাজ-কাম বেশি হবে। আমার দোকানে আঙ্গুরী, উল, কাপাস, শিমুল ও কালার জাতের তুলা রয়েছে। হিলি বাজার মার্কেটে চাদর কিনতে আসা জেসমিন আক্তারের সাথে কথা হয়, তিনি বলেন, আমি মার্কেটে আসছি একটা ভাল মানের চাদর কিনতে। কয়েকটি দোকানে ঘুরেছি, চাদর আছে, পছন্দও হচ্ছে তবে দামটা একটু বেশি চাচ্ছে দোকানিরা। কথা হয় হিলি বাজারের লাবণ্য ফ্যাশানের মালিক আনারুল ইসলামের সাথে, তিনি বলেন, দোকানে শীতের সব ধরনের পোষাক রাখা হয়েছে। শীতে প্রভাব এখনও বেশি পড়েনি, তাই শীতের কাপড় কিনতে কেউ আসছেন না। প্রতিদিন এখন বর্তমান ৫ থেকে ৭টি শীতের কাপড় বিক্রি করছি। হিলি বাজারের বৃষ্টি গার্মেন্টেসের দেলোয়ার হোসেন বলেন, এখনও শীতের তেমন প্রভাব নেই। গরম কাপড়ের বেচা-কেনা তেমন শুরু হয়নি। আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যে গরম পোষাকের কেনা-বেচা বাড়বে।হাকিমপুর (হিলি) পৌর মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত বলেন, পৌরবাসীর জন্য শীতের পূর্ব প্রস্তুতি নিয়েছি। শীতের তেমন প্রভাব এলাকায় পড়েনি। প্রতি বছর শীত মৌসুমে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে থাকি। এবছরেও শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে। হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুর রাফিউল আলম জানান, শীতের আগাম সকল প্রকার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শীতার্তদের জন্য সরকারি বরাদ্দ রয়েছে। শীতের প্রভাব পড়লে, তাদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।