হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বদ নজরের বিষয়টি সত্য। বদ নজর হলো হিংসুকের বিষাক্ত দৃষ্টি। অন্যের অর্জনে জ্বলতে থাকা হিংসুকের বিষাক্ত দৃষ্টিতে অনেক সময় মানুষের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যায়। তাই রাসুল (সা.) তার উম্মতদের বদ নজর সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, বদ নজর লাগা সত্য একটি ব্যাপার। (আবু দাউদ) অর্থাৎ মানুষের কুদৃষ্টি আসলেই প্রভাব ফেলে। তাই নিজেকে এবং নিজের সন্তানসন্ততি ও সম্পদকে মন্দ লোকের কুদৃষ্টির আড়ালে রাখার চেষ্টা করতে হবে। সকাল-সন্ধ্যা মহান আল্লাহর কাছে মন্দ লোকের কুদৃষ্টি থেকে আশ্রয় চাইতে হবে। অনেক সময় বদনজরের প্রভাবে কোমলমতি শিশুদেরও বিভিন্ন রকম রোগব্যাধি দেখা দেয়। উম্মে সালামা (রা.) বলেন, একদিন রাসুল (সা.) তার ঘরে এক মেয়েকে মলিন চেহারায় দেখলেন। তখন তিনি বলেন, তাকে ঝাড়ফুঁক করাও, কেননা তার ওপর (বদ) নজর লেগেছে। (সহিহ বুখারি) বদ নজর, জাদুটোনা ইত্যাদি থেকে বাঁচতে রাসুল (সা.) বিভিন্ন কোরআনি আমল করতেন। পবিত্র কোরআনের আমলের মাধ্যমে বদ নজর থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। পবিত্র কোরআনের দুটি সুরা আছে, সেটার ওপর নিয়মিত আমল করলে বদ নজর থেকে রক্ষা পাওয়া সহজ হয়। আবু সাঈদ (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) সুরা ফালাক ও সুরা নাস নাজিল না হওয়া পর্যন্ত জিন ও বদ নজর থেকে পানাহ চাইতেন। পরে সুরা দুটি নাজিল হওয়ার পর এই দুটিকেই গ্রহণ করেন, তা ছাড়া অন্য সব ছেড়ে দেন। (তিরমিজি)
রাসুল (সা.) এই দুটি সুরা পড়ে বিশেষ পদ্ধতিতে পুরো শরীরে মুছে নিতেন। বিভিন্ন হাদিসে এই দুটি সুরার মাধ্যমে বদ নজর থেকে বাঁচার আমলের পদ্ধতি পাওয়া যায়। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন আপন বিছানায় আসতেন, তখন তিনি তার উভয় হাতের তালুতে সুরা ইখলাস ও ফালাক-নাস পড়ে ফুঁক দিতেন। তারপর উভয় তালু দ্বারা আপন চেহারা ও দুই হাত শরীরের যত দূর পৌঁছায় তত দূর পর্যন্ত মাসাহ করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, এরপর রাসুল (সা.) যখন অসুস্থ হন, তখন তিনি আমাকে অনুরূপ করার নির্দেশ দিতেন। (সহিহ বুখারি) অন্য হাদিসে অবশ্য সুরা ইখলাস পড়ার বর্ণনাও পাওয়া যায়।