শুরু হয়েছে দিনাজপুর হিলিতে আমান ধানের কাটা-মাড়াই। বর্ষা আর ধানে পোকার আক্রমণে ধানের কিছুটা ক্ষতি এবং বাহির থেকে ধান কাটা শ্রমিক না আসায় বেশি দামে স্থানীয় শ্রমিকদের নিতে হচ্ছে, এমনটিই বলছেন কৃষকেরা। জেলায় ২ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন আমন চাষীরা, বিষয়টি জানিয়েছেন দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তর। সপ্তাহ ধরে শুরু হয়েছে জেলার ১৩ টি উপজেলায় আমন ধানের কাটা-মাড়াই। গেলো বর্ষায় নিচু জমির ধানগুলো মাটির সাথে পড়ে গেছে। আবার কিছু জমিতে আক্রমণের শিকার হয়েছে পোকামাকড়ের। আর পোকার আক্রমণে অনেক ধান সাদা হয়ে পাতানে পরিণত হয়েছে। তবে ধানের ফলন কম হলেও খড়ের চাহিদা থাকায় খড় বিক্রি করে ক্ষতি পুষিয়ে নিচ্ছেন ধান চাষীরা। প্রতি বছর ধান কাটার মৌসুমে নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধা থেকে আসে ধান কাটা শ্রমিকরা। প্রায় ধানাজমিতে ধান পাক ধরেছে। কিন্তু শ্রমিক সংকট, যার কারণে স্থানীয় শ্রমিকদের বিঘা প্রতি ৪ হাজার টাকা দিয়ে ধান কাটা-মাড়াই করতে হচ্ছে কৃষকদের। গত আমন মৌসুমে ৩ হাজার টাকা দিয়ে ধান কাটা-মাড়াই করা হয়েছিল। স্থানীয় ধান কাটা শ্রমিক রাজু মিয়া বলেন, আমরা ৯ জন মিলে এক সাথে ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ করছি। দিনে ৩ থেকে ৪ বিঘা জমির ধান কাটছি। প্রতি বিঘায় ৪থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা করে নিচ্ছি। বিরামপুরের কেটরা গ্রামের বাদল মিয়া বলেন, আমি এই ১৮ বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করছি। আমার কিছু জমিতে ধান কাটার উপযুক্ত হয়েছে। ধান কাটা শুরু করেছি। লোক সংকট থাকার কারণে বেশি মুল্যে তা কাটা-মাড়াই করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মাঠে ধান কেটে ৪থেকে ৫ দিন ফেলে রাখি শুকানোর জন্য। পরে শুকিয়ে গেলে বাড়ির খোলায় নিয়ে মাড়াই করে ঘরে তুলি। হিলি হরিহরপুরের কৃষক এনামুল হোসেন বলেন, ৬ বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছি, ফলন ভাল হয়েছে, তবে পোকার আক্রমণে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। জমির সব ধানী পাক ধরেছে। বাহির থেকে আসা শ্রমিকরা এখনও আসাতে শুরু করেনি। কিন্তু কি করার,ধান তো কাটতে হবে,তাই বাধ্য হয়ে বিঘাপ্রতি ৪ হাজার টাকা দিয়ে ধান কাটা-মাড়াই করছি। বিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার নিক্সোন চন্দ্র পাল জানান, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় মোট ১৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন কৃষকেরা। কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। আশা করছি ভাল ফলন পাবে কৃষকেরা হাকিমপুর উপজেলা কৃষি উপ-সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আরজেনা বেগম জানান, ৮ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে উপজেলায় আমন ধানের চাষ হয়েছে। মাঠে প্রায় ধান পাক ধরেছে। কিছু ধান ক্ষেতে পোকার আক্রমণে শিকার হয়েছিল। গেলো বন্যায় তেমন কোন ক্ষতি হয়নি আমন ধানের। আশা করছি গত বোরো ধানের মতো দাম ভাল পাবে কৃষকরা আমন ধানের। এবিষয়ে দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তৌহিদ ইকবাল জানান, জেলার ১৩ টি উপজেলায় আমন ধানের কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। এইবার জেলায় মোট ২ লাখ ৬০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে।