বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১৮ পূর্বাহ্ন

বাবা-মা’র সঙ্গে ছেলের প্রতারণা

তোফায়েল হোসেন জাকির (সাদুল্লাপুর) গাইবান্ধা
  • আপডেট সময় সোমবার, ৩ মার্চ, ২০২৫

বৃদ্ধ আব্দুর রহমান বাশদ। বয়সের ভারে নুয়ে পড়ছেন। চলতে হয় লাঠিতে ভর করে। আর তার স্ত্রী রহিমা বেগম চলেন হুইল চেয়ারে। এই দম্পতির বয়স ৮০ ঊর্ধ্বে। দিন কাটে খেয়ে না খেয়ে। শেষকালে আরাম-আয়েশে থাকার প্রলোভন দেন তাদের ছেলে আব্দুর রহিম। ফুসলিয়ে লিখে নেয় জমি। এরপর লাপাত্তা রহিম। এখন ভরণ-পোষণের অভাবে দুর্বীসহ জীবনযাপন বয়স্ক এই দম্পত্তির। তাদের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ইসবপুর গ্রামে। সম্প্রতি এই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়- বয়স্ক দম্পতির করুণ দৃশ্য। তাদের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ। নির্বাকভাবে করছিলেন আহাজারি। জীবন-জীবিকার তাগিদে কাঁদছিলেন অঝোরে। স্বজনরা বলছেন, বৃদ্ধ আব্দুর রহমান তার স্ত্রী রহিমা বেগম বয়সের ভারে প্রায় অচলাবস্থা। নানা রোগে বাসা বেঁধেছে তাদের। শেষকালে শারিরীক সুস্থতাসহ ভালোভাবে খেয়ে-পড়ে থাকার আকুতি। এই ইচ্ছেপূরণের প্রলোভন দেখিয়ে বাবার কাছ থেকে ২৮ শতক জমি লিখে নেওয়াসহ গচ্ছিত সাড়ে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ছেলে আব্দুর রহিম। এই টাকা দিয়ে রহিম বানিয়েছেন পাকা বাড়ি। এরপর স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পাড়ি দিয়েছেন ঢাকায়। এখন খোঁজ রাখেন না বাবা-মায়ের। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছেন এই বৃদ্ধ দম্পতি। এসব তথ্য নিশ্চিত করে ভুক্তভোগী আব্দুর রহমান বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী ঠিকমতো চলতে পারি না। আমাদের তিন ছেলে রয়েছে। এর মধ্যে বড় ছেলে আব্দুর রহিম আমাদের ভরণ-পোষণ দিবে মর্মে ২৮ শতক লিখে জমি নিয়েছে। তবে এই জমি তিনজনের নামে সমানভাবে লিখে নেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে রহিম তার নিজের নামেই ২৮ শতক লিখে নিয়েছে। এছাড়া আমার গচ্ছিত সাড়ে ৫ লাখ টাকাও হাতিয়ে নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে। এখন আমার ও আমার স্ত্রীর খোঁজ রাখে না আব্দুর রহিম। এ বিষয় আদালতে মামলা দেওয়াসহ স্থানীয় ইউপিতে অভিযোগ করেছি। এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুর রহিম বলেন, আমি বাবার সঙ্গে কোন ধরণের প্রতারণার করিনি। তিনি সজ্ঞানে আমাকে জমি লিখে দিয়েছেন। সেই থেকে তার ভরণ-পোষণ ও চিকিৎসাসহ যাবতীয় খরচ বহন করে আসছি। বর্তমানে আমার সংসারের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বাবার চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারায় আমার বিরুদ্ধে অপ্রচার চালাচ্ছেন। সাদুল্লাপুরের ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আব্দুর রহমান নামে ব্যক্তির অভিযোগের বিষয়টি ঠিক জানা নেই। যদি পরিষদে অভিযোগপত্র দাখিল করে থাকেন তাহলে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com