সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম ভাগে প্রকৃতিতে রাঙিয়ে ফুটছে শিমুল ফুল। গ্রাম বাংলার মেঠো পথের ধারে, ভিটা বাড়ির পতিত জমিতে দেখা মিলছে রক্ত লাল শিমুল ফুল। গাছে গাছে সবুজ পাতা, ফুল আর কোকিলের ডাক মনে করিয়ে দেয় বসন্তের আগমনী বার্তা। কালের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে শিমুল গাছ। প্রতিনিয়ত বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে শিমুল গাছ। গ্রাম বাংলার বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে রক্তরাঙা এসব শিমুল গাছ। সেই সাথে কমেছে মনোমুগ্ধকর শিমুল ফুল।প্রস্ফুটিত শিমুল ফুলের অপরুপ দৃশ্য জানান দিত পুরো এলাকা।ঋতুরাজ বসন্তে আগের মত চোখে পড়ে না শিমুল গাছ।এর ফলে মান সম্মত ও স্বাস্থ্য সম্মত তুলা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে এ এলাকার মানুষ।শিমুল গাছ কেউ তেমন রোপন করে না। কারন আধুনিক ও প্রযুক্তির সাথে পাল্লা দিয়ে শিমুল কাঠের দাম কম। বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির গাছের প্রতি মানুষ ঝুঁকে পড়ায় শিমুল গাছসহ বিভিন্ন দেশীয় গাছ আস্তে আস্তে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। প্রাকৃতিক ভাবে গজিয়ে ওঠা এ সব শিমুলের তুলা দিয়ে লেপ, তোষক, বালিশ ইত্যাদি তৈরি করা হত। যা ব্যবহার খুবই আরাম দায়ক ও স্বাস্থ্যসম্মত হতো। শুধু তাই নয়, শিমুল গাছ অনেক রোগ প্রতিরোধের ওষধি গাছ হিসেবে ভেষজ-হারবাল ব্যবসায়ীদের কাছে পরিচিত ছিল। সোনাখাড়া ইউপির বাসাইল গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব বয়সী কিসামত আলী জানান, এই তো দেখলাম ১৫/১৬ বছর আগে শিমুল তুলা বিক্রি হতো ৫০-৬০ টাকা কেজি। সেই তুলা এখন বিক্রি হয় ৪০০-৪৫০ টাকা কেজি। চান্দাইকোনা ডিগ্রী কলেজের অধ্যাপক জানান, শিমুল ফুল না ফুটলে যেন বসন্তই মনে হয় না। বাংলাদেশের ভৌগলিক পরিবেশের সঙ্গে সংস্কৃতি চর্চার একটি যোগসুত্র রয়েছে। গান, কবিতা, নাটকে বাংলার প্রকৃতি উঠে আসে বারবার। তেমনি বসন্ত এলেই চলে আসে শিমুল ফুলের কথা। তাই ঋতু বৈচিত্রের এসব অনুসঙ্গকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্বও আমাদের।