এই পরিবর্তনশীল বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য একে অপরের সাথে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ ও অভিন্ন সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে।
এশিয়ার দেশগুলোকে অভিন্ন ভবিষ্যৎ ও সমৃদ্ধির জন্য একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘এই পরিবর্তনশীল বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য একে অপরের সাথে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ ও অভিন্ন সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে।’ গতকাল বৃহস্পতিবার চীনের হাইনান প্রদেশের বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীনে গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী ‘দ্য বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) বার্ষিক সম্মেলন-২০২৫’ এর পর্দা উঠছে শুক্রবার। গত বুধবার বিকেলে চীন সরকারের পাঠানো বিশেষ ফ্লাইটে হাইনান প্রদেশের বোয়াও পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা। বৃহস্পতিবার তিনি বোয়াও সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। শুক্রবার বেইজিংয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সাথে বৈঠক করবেন তিনি। এছাড়া তিনি দেশটির মর্যাদাপূর্ণ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য দেবেন। সেখানে তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেয়া হবে বলে জানা গেছে। শনিবার প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরবেন।
বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এশিয়াকে অবশ্যই একটি টেকসই অর্থায়ন প্রক্রিয়া তৈরি করতে হবে এবং এই প্রচেষ্টায় আঞ্চলিক বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংক (মাল্টিলেটরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক) এবং অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোকে নেতৃত্ব দিতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নির্ভরযোগ্য তহবিল প্রয়োজন যা আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে এবং ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে।’
বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এশিয়া বিশ্বের অন্যতম কম সংযুক্ত অঞ্চল। এই দুর্বল সংযোগ বিনিয়োগ ও বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করছে। আমাদের অবশ্যই বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য অবিলম্বে কাজ করতে হবে।
খাদ্য ও কৃষি সহযোগিতার বিষয়ে তিনি বলেন, এশীয় দেশগুলোকে সম্পদ-সাশ্রয়ী কৃষিকে উৎসাহিত করতে হবে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে এবং স্বনির্ভরতা অর্জন করতে হবে। প্রযুক্তিভিত্তিক টেকসই কৃষি সমাধান সম্প্রসারণ এবং পুনর্জীবনশীল ও জলবায়ু-স্মার্ট কৃষিতে উদ্ভাবন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এশিয়াকে অবশ্যই একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে, যা হবে পুনরুদ্ধারমূলক, সমবন্টিত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের জ্ঞান ও তথ্য ভাগাভাগি করতে হবে এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও ইনকিউবেশনে বিনিয়োগ করতে হবে। ডিজিটাল সমাধানের ওপর সহযোগিতা উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের যৌথ উদ্যোগের কেন্দ্রবিন্দুতে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ও যুবশক্তিকে একত্রিত করতে হবে। আমাদের অবশ্যই একটি নতুন সভ্যতার ভিত্তি স্থাপন করতে হবে- একটি আত্মরক্ষা ও আত্মস্থায়ী সমাজ। আমাদের এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে যা শূন্য-বর্জ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। ভোগবাদের সীমাবদ্ধতা থাকা উচিত শুধু অপরিহার্য চাহিদার মধ্যে। আমাদের অর্থনীতি সামাজিক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে হবে, যেখানে উদ্ভাবন, উদ্দেশ্য ও দায়িত্ব একত্রিত হয়।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বোয়াও ফোরাম এবং এশিয়ার অন্যান্য অনুরূপ উদ্যোগগুলোকে যুবসমাজ ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এশিয়াকে আরো উন্নত স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শূন্য কার্বন নিঃসরণ, শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ এবং সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে শূন্য বেকারত্ব- প্রতিটি তরুণকে এই ‘তিন-শূন্য’ নীতির অনুসারী হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। এটাই সেই অভিন্ন ভবিষ্যৎ, যা আমাদের এশিয়াতে একসাথে গড়ে তুলতে হবে।
বিশ্বব্যাপী আর্থিক বাজারের অস্থিরতা, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, কূটনৈতিক উত্তেজনা এবং বাণিজ্য বাধা অর্থনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, সুদের হার বৃদ্ধি এবং ঋণ পরিশোধের ব্যয় এশিয়ার ঋণ সঙ্কটকে আরো গভীর করছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ২০৩০ এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও অগ্রগতি ধীর। এখন পর্যন্ত মাত্র ২৪ শতাংশ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জিত হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, উন্নয়নশীল এশীয় দেশগুলোর বার্ষিক এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য ২.৫ থেকে ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের আর্থিক ঘাটতি রয়েছে। এসডিজি অর্থায়নের পাশাপাশি, এশিয়ার অবকাঠামো এবং অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যের জন্য দায়িত্বশীল বিনিয়োগের প্রয়োজন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ দুর্নীতি ও অবৈধ আর্থিক লেনদেনের শিকার হয়েছে, যেখানে এসব দুর্নীতির কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো প্রতি বছর আনুমানিক ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার হারায়, যা তারা মোট উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে যা পায় তার অনেকগুণ বেশি। এশিয়াকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সম্পদ পুনরুদ্ধার ও ফিরিয়ে দেয়ার জন্য একটি বহুপক্ষীয় মধ্যস্থতা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তা ক্রমাগত চাপে রয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিম্ন-আয়ের পরিবারের বাজেটে চাপ সৃষ্টি করছে।’
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ এই সঙ্কটকে আরো গভীর করছে এবং খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলা শক্তিশালী করা অপরিহার্য।
তিনি আরো বলেন, শক্তি নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যেসব উন্নয়নশীল দেশ জ্বালানির জন্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল। জ্বালানি সরবরাহে বিঘœ ঘটলে মুদ্রাস্ফীতি, অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং ঋণের চাপ বাড়ে। আমাদের টেকসই জ্বালানি সমাধান খুঁজে বের করতে হবে এবং নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় বিনিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যা মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘যেসব দেশ সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবায় বিনিয়োগ করে, তারা অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতায় ভালো ফলাফল পায়।’
তিনি বলেন, ভবিষ্যতের চাকরির জন্য আমাদের যুবসমাজকে প্রস্তুত করতে ডিজিটাল শিক্ষা এবং কারিগরি প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণ করতে হবে।
বিশ্বব্যাপী সঙ্কট সম্পর্কে বক্তব্য দিতে গিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে, জলবায়ু পরিবর্তন তীব্র হচ্ছে, ঋণের বোঝা অসহনীয় হয়ে উঠছে এবং মানবিক সংকট বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা দুর্বল হচ্ছে এবং বিশ্ব সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতার ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ব জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ এবং বৈশ্বিক জিডিপির ৫৫ শতাংশের আবাসস্থল এশিয়া এখন এই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
তিনি বলেন, উদীয়মান নীতিমালা, নিয়মকানুন এবং প্রযুক্তি প্রশাসন ও অর্থনৈতিক নীতিকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করছে। এক দশক আগে নীতিগুলো যে অনুমানগুলোর ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল, সেগুলো এখন আর প্রাসঙ্গিক নয়। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার প্রয়োজন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এশীয় নেতাদের সামনে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ গত সাত বছর ধরে ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে, যারা মিয়ানমারের নাগরিক। তিনি বলেন, ‘আমরা বিপুল সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ব্যয় বহন করে চলেছি।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সম্প্রতি সংহতির নিদর্শনস্বরূপ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ‘যদিও বৈশ্বিক প্রচেষ্টা নাটকীয়ভাবে হ্রাস পাচ্ছে, তবে তা চলমান রয়েছে। এশিয়ার নেতাদের অবশ্যই একসাথে এগিয়ে আসতে হবে এবং তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে হবে।’
বিশ্ব সঙ্কটের ওপর আলোকপাত করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বর্তমান বিশ্ব বহুমুখী সঙ্কটে ভুগছে, যেখানে যুদ্ধ ও সংঘাত মানবাধিকারের ক্ষতি এবং অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বব্যাপী নিন্দা চলমান থাকলেও গাজায় গণহত্যা এখনো চলছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘ফিলিস্তিন সঙ্কট শুধু আরব বা মুসলিমদের বিষয় নয়, এটি একটি মানবিক সমস্যা।’
প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, ইউক্রেন সঙ্কটের দীর্ঘায়িত উত্তেজনা বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থাকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং মিয়ানমারের দীর্ঘস্থায়ী সঙ্কট আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এশিয়ার সম্ভাবনা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এশিয়ার ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম, উদ্ভাবন ও উৎপাদনশীলতার চালিকা শক্তি হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই তরুণদের উদ্যোক্তা কার্যক্রম ও টেকসই সমাধানের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মানবসম্পদে বিনিয়োগ এবং বিশ্ববাজারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা এশিয়ার ভবিষ্যত প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা নির্ধারণ করবে।’
তিনি বলেন, এশিয়ায় নারীদের শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ এখনো কম এবং নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য বিদ্যমান রয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর এবং তাদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এশিয়ার সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য- যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ভাষা, ঐতিহ্য, দর্শন ও রীতিনীতি- মানব সভ্যতার স্থিতিশীলতা যা সৃজনশীলতার সাক্ষ্য বহন করে।
তিনি বলেন, ‘ইসলাম, কনফুসিয়ানবাদ, বৌদ্ধধর্ম এবং হিন্দুধর্মের দর্শন বিশ্ব চিন্তাধারাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে, যা নৈতিকতা, শাসন ও মানবিক চেতনার ওপর অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছে।’
অধ্যাপক ইউনূস আরো বলেন, ‘বহু শতাব্দী ধরে এশিয়ার সভ্যতা বৈচিত্র্যকেগ্রহণ করে সমৃদ্ধ হয়েছে। সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের এই গতিশীল বিনিময় শুধু এই অঞ্চলকেই নয়, পুরো বিশ্বকে প্রভাবিত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আজ এশিয়ার সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি তার বৈশ্বিক প্রভাবকে আরও শক্তিশালী করছে। ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সংমিশ্রণ, প্রাচীন জ্ঞানের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা এবং আধুনিক উদ্ভাবনের সংযুক্তি একসাথে এক শক্তিশালী গতি তৈরি করেছে, যা অঞ্চলটিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং তার গভীর ঐতিহাসিক শিকড়কে সম্মান জানাচ্ছে।’
সম্মেলনে তিনি বিশ্ব নেতাদের বাংলাদেশ পরিস্থিতিও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে জনসাধারণের আস্থা পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে। আমাদের যুব সমাজ এবং নাগরিকরা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পুনর্গঠনে অসাধারণ দৃঢ়তা ও শক্তি প্রদর্শন করেছে। জনসাধারণের আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।’
নির্বাচনী ব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা, বেসামরিক প্রশাসন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংস্কারের জন্য স্বাধীন কমিশন গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হলে আমাদের জাতির মৌলিক রূপান্তর ঘটবে। আমরা যখন নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলছি, তখন আমাদের একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে, যা অন্যান্য এশীয় দেশগুলোর সাথে সম্পর্কিত।’
সম্মেলনে জাতিসঙ্ঘের সাবেক মহাসচিব ও বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার চেয়ারম্যান বান কি-মুন, চীনের স্টেট কাউন্সিলের নির্বাহী উপ-প্রধানমন্ত্রী ডিং শুয়েশিয়াং এবং বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার মহাসচিব ঝাং জুন বক্তব্য দেন।