গতকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) চীনের বেইজিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে পৃথক পৃথক বৈঠকে এসব চুক্তি করা হয়।
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার বিষয়ে একটি চুক্তি এবং আটটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার চার দিনের চীন সফরের শুক্রবার (২৮ মার্চ) তৃতীয় দিনে দুই দেশের মধ্যে এই দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও স্মারকগুলো স্বাক্ষরিত হয়।
সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে রয়েছে দুই দেশের কালজয়ী সাহিত্য ও শিল্পকর্মের অনুবাদ ও সৃজন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও খবর আদান-প্রদান, গণমাধ্যম, ক্রীড়া এবং স্বাস্থ্য খাতে বিনিময় সহযোগিতা। এর পাশাপাশি, প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় চীন সফরে দুই দেশের মধ্যে পাঁচ বিষয়ে সহযোগিতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এসেছে। এগুলো হলো- বিনিয়োগ আলোচনা শুরু করা, চীনের বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু, মোংলা বন্দরের আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ, একটি রোবট ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ এবং একটি কার্ডিয়াক সার্জারি গাড়ি অনুদান। এর আগে গত বুধবার বিকেলে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতের চীনের হাইনান প্রদেশে পৌঁছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার বোয়াও ফোরামে বক্তব্য রাখেন। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সাধে বৈঠকে মিলিত হন। এদিন রাতে তিনি বেইজিংয়ের পৌঁছেন।
গতকাল শুক্রবার সকালে চীনের রাষ্ট্রপতি শী জিনপিংয়ের সাথে বৈঠকে মিলিত হন। এরপর চীনের ভাইস প্রেসিডেন্টের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বেইজিংয়ের দ্য প্রেসিডেন্সিয়ালে চীনের ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে একটি বিনিয়োগ সংলাপে অংশ নেন। বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সম্পর্কে চীনা বিনিয়োগকারীদের অবহিত করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা একই স্থানে তিনটি গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন, যেগুলোর মূল বিষয়বস্তু Íটেকসই অবকাঠামো ও জ্বালানি বিনিয়োগ, বাংলাদেশ ২.০: উৎপাদন ও বাজারের সুযোগ এবং সামাজিক ব্যবসা, যুব উদ্যোক্তা ও থ্রি জিরো বিশ্ব।
এই আলোচনায় তিনি বিভিন্ন কোম্পানির সিইও, সামাজিক ব্যবসা ক্ষেত্রের অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ, বিখ্যাত চীনা প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেন।
প্রধান উপদেষ্টা চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আয়োজিত নৈশভোজেও অংশ নেন। আজ শনিবার সকালে তিনি পিকিং ইউনিভার্সিটিতে বক্তৃতা করবেন। সেখানে তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হবে। চার দিনের চীন সফর শেষে শনিবারই তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে তার সাথে রয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ; সড়ক পরিবহন ও সেতু; এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফওজুল কবির খান; প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান, এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।