মেহেরপুরে এবার অন্যান্য সবজির পাশাপাশি পেঁয়াজ চাষ বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পেঁয়াজ চাষীরা লাভবান হবে বলে মনে করছে। মেহেরপুর জেলার ৩টি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে সাথী ফসল হিসাবে চাষীরা পেঁয়াজ চাষ করছে। প্রতি মৌসুমে মেহেরপুর সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে পেঁয়াজ চাষ করে নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশে রপ্তানি করে থাকে। এবারও পেঁয়াজ চাষের পরিমাণ বেড়েছে। তবে পেঁয়াজের ফলন ও মূল্যে ভালো পেলে কৃষকের স্বপ্ন পূরণ হবে কৃষকদের। এদিকে পেঁয়াজ সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা না থাকায় এনিয়েও কৃষকরা সংশয় রয়েছে। কারণ পেঁয়াজ উত্তোলনের সময় মূল্যে কম হয়। তাই সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা না পেয়ে স্বল্প মূল্যেই পেঁয়াজ বিক্রি করতে হয় কৃষকদের। জেলার মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আখ, ভূট্টা ও কলা ক্ষেতের সাথী ফসল হিসাবে পেঁয়াজ চাষ করছে অনেক চাষি। এবার গ্রীস্মকালীন পেঁয়াজের চাষ বেড়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানায়। মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এবছর জেলার তিনটি উপজেলায় পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ১শ হেক্টর। ইতোমধ্য লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী মেহেরপুর সদর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ৯শ হেক্টর। যার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৯শ ৪৫ হেক্টর। গাংনী উপজেলায় ২শ ৮০ হেক্টর ছাড়িয়ে ১১শ হেক্টর পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। এছাড়াও মুজিবনগর উপজেলায় ৯শ ২০ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৯শ ৩৫ হেক্টর পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। মুজিবনগরের পেঁয়াজ চাষী আনারুল ইসলাম জানান সাথী ফসল হিসাবে পেঁয়াজ চাষের সাথে কলা চাষ করছি। এর আগে সাথী ফসলের সাথে পেঁয়াজ চাষ করে লাভ করেছি। গাংনী উপজেলার কোদাইলকাটি গ্রামের পেঁয়াজ চাষি আলী রেজা জানান প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করতে ৬মণ তাহেরপুরী বাল্প প্রজাতির বীজ লাগে। প্রতি বিঘা জমিতে ৭০-৮০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। স্বল্প মেয়াদি ফসল। তাই তিন মাসেই পেঁয়াজ তোলা যায়। তবে জেলায় হিমাঘারের ব্যবস্থা থাকলে, পেঁয়াজ অন্য সময়ও চাষ করা যেতো। গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম শাহাবুদ্দীন আহমেদ বলেন, অন্য বছরে গাংনী এলাকায় সবজি চাষ বেশি হতো। এবার পেঁয়াজের দাম বেশি। উৎপাদন খরচ কম। তাই কৃষকরা এবার পেঁয়াজ চাষ করেছে বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে, উৎপাদিত পেঁয়াজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে সারাদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার খাঁ জানান, মেহেরপুর জেলার মাটি উর্বর। যা সকল ফসলের জন্য উপযোগি। এবার পেঁয়াজের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। আশা করছি আগামীতে আরো বেশি পেঁয়াজ চাষ হবে।