রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
জামালপুর জেলার তিন হাজার প্রান্তিক পরিবারকে উন্নত আর্থ-সামাজিক অবস্থাকে উপভোগ্য করে তোলার লক্ষ্যে ইসলামপুরে সিডস কর্মসূচির অবহিতকরণ সভা কে হচ্ছেন নগরকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কেশবপুরে সংবাদ সম্মেলন চিলাহাটি প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক মেয়াদের কমিটি গঠন বদলগাছীতে কৃষকের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে কম্বাইন হারভেস্টার বিতরণ উলিপুরে ইউড্রেনের দুই পাশের সংযোগ সড়ক হওয়ায় এলাকাবাসী আনন্দিত কালীগঞ্জে সরকারি স্থান থেকে ফুলের হাট স্থানান্তর: বিপাকে প্রতিবন্ধী ইজারাদার পিআইবি,র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলো নগরকান্দা ও সালথার সাংবাদিক বৃন্দ গজারিয়া স্বপ্নপূরণে ছেলেকে হেলিকপ্টারে বিয়ে করালেন স্কুলশিক্ষক বাবা বরিশালে প্রচন্ড তাপদাহে বাড়ছে তালপাখার চাহিদা

রেমিট্যান্সে ভর করে রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১ জানুয়ারী, ২০২১

করোনাকালে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তো। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স সেই বিপর্যয় থেকে দেশকে রক্ষা করেছে। শুধু আর্থিকভাবেই নয়, করোনা মোকাবিলায় সরকারের মনোবল ধরে রাখতেও বড় ভূমিকা রেখেছে প্রবাসীদের পাঠানো রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স। রেমিট্যান্সের কারণেই তারল্য সংকট কাটাতে পেরেছে ব্যাংকগুলো। ২০১৯ সালের শেষে এবং ২০২০ সালের শুরুতে ব্যাংকে তারল্যের যে সংকট ছিল তা দূর হওয়ায় সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করাও সহজ হয়েছে। রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ায় করোনাকালেও মানুষ বিভিন্ন ব্যাংকে স য় অব্যাহত রাখতে পেরেছে। রেমিট্যান্সের টাকায় তৈরি হয়েছে ছোট ছোট উদ্যোক্তাও। শক্তিশালী অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে গ্রামীণ অর্থনীতি। রেমিট্যান্সে ভর করে বাংলাদেশের রিজার্ভ এখন ৪৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘রেমিট্যান্স যে গতিতে এসেছে, এর জন্য অবশ্যই প্রবাসীরা ধন্যবাদ পাওয়ার দাবি রাখেন। তাদের রেমিট্যান্সের কারণে রিজার্ভ এখন ৪৩ বিলিয়ন ডলারের। বেড়েছে ব্যাংকের তারল্য। গ্রামীণ অর্থনীতিও শক্তিশালী হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘এই সংকটকালে প্রবাসীদের পাশাপাশি সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংককেও ধন্যবাদ দিতে হয়। কারণ, রেমিট্যান্স আসার ক্ষেত্রে সরকার প্রণোদনা দিয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকও নিয়ম-কানুন সহজ করেছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘ডিজিটাল মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কারণে রেমিট্যান্স দ্রুত বাড়িতে পৌঁছেছে। কমে গেছে হুন্ডি।’ আরও কিছু দিন এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি মনে করেন।
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারির কারণে গত মার্চ থেকে কয়েক ধাপে ৬৬ দিনের ছুটি ঘোষণা করে সরকার। সে সময় অর্থনীতির চাকা প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলেও প্রবাসীদের আয় বাড়তে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২০ সালে ২১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর আগে এক বছরে বাংলাদেশে এত রেমিট্যান্স আর কখনও আসেনি। ২০১৯ সালে ১৮ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, ১ ডিসেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত (২৯ দিনে) ১৯১ কোটি ২০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত বছরের একই সময়ে এসেছিল ১৫৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। মহামারির মধ্যেই চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে, যা এযাবৎকালের সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বি আইডিএস) গবেষক ড. জায়েদ বখত মনে করেন, ‘একদিকে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স, অন্যদিকে রফতানি আয়ে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া আমদানি কমে যাওয়া এবং বিদেশি ঋণ-সহায়তা বৃদ্ধিও রিজার্ভ বাড়ানোতে ভূমিকা রেখেছে।’ এই রিজার্ভই মহামারি মোকাবিলায় সরকারকে সাহস জোগাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত ১৫ ডিসেম্বর রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। গত এক বছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে ১১ বিলিয়ন ডলারের মতো। ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার। দশ বছর আগে ২০০৯-১০ অর্থবছরের জুন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। ২০১৩-১৪ অর্থবছর শেষে সেই রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। ৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে গত বছরের অক্টোবরে। চলতি বছরের ৩০ জুন সেই রিজার্ভ বেড়ে ৩৬ বিলিয়ন ডলারে ওঠে। ৮ অক্টোবর ছাড়ায় ৪০ বিলিয়ন ডলার। এক্ষেত্রে রেমিট্যান্স ছাড়াও রফতানি আয় ও বিদেশি ঋণের অবদানও রয়েছে। জুলাই-নভেম্বর (৫ মাসে) সময়ে পণ্য রফতানি থেকে ১৫ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১ শতাংশ বেশি। একই সময়ে ১৯৮ কোটি ডলারের বিদেশি ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৮ দশমিক ২৪ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) আমদানি ব্যয় কমেছে ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com