লোহাগাড়ার ইটভাটা মালিক-শ্রমিকরা ভালো নেই। মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে মালিকরা। বেকার হয়ে পড়েছে তিন হাজারেরও বেশি শ্রমিক। এখন দিশেহারা মালিক, শ্রমিক ও মাঝি। ঋণের বোঝা নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে ভাটা মালিকগণ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাইকোর্টের আদেশে গত ২১ ও ২২ ডিসেম্বর’২০ লোহাগাড়ার সাতটি ইটভাড়া গুড়িয়ে দেয় ভ্রাম্যমান আদালত। পূর্ব নোটিশ ছাড়া অতর্কিত এ অভিযানে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয় ভাড়া মালিক ও শ্রমিক। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে এসব ইটভাটার প্রায় তিন হাজার শ্রমিক। ইট উৎপাদন করতে না পেরে কোটি টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে মালিকদের। উৎপাদন বন্ধ থাকায় বেড়েছে ইটের দাম। এতে লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন স্থানীয় নির্মাণপ্রতিষ্ঠানের মালিকরাও। সময়মতো ইট না পেয়ে বিপাকে রয়েছেন ব্যক্তিমালিকানায় নির্মাণাধীন ভবনমালিকরাও। শ্রমিকরা কাঁচা ইট তৈরী করে মালিক পক্ষকে বুঝিয়ে দিলে বিল হয়। অন্যথায় পারিশ্রমিক পায় না। ইটভাটা চালুর তিন মাসপূর্বেই শ্রমিকরা মালিক পক্ষ থেকে টাকা অগ্রিম নেয়। বর্ষাকালে অগ্রিম টাকা দিয়ে সংসার চালায় শ্রমিকরা। গুড়িয়ে দেওয়া ইটভাটার শ্রমিকরা দেনা কিভাবে পরিশোধ করবে ও সংসার চালাবে তা নিয়ে দু:চিন্তায় শ্রমিকগণ। বার আউলিয়া ইটভাটা শ্রমিকের মাঝি ইউনূছ বলেন, মালিকের টাকা লেবাররা অগ্রিম নিয়ে নিয়েছে। মালিককে কিভাবে ফেরৎ দিবো। এ নিয়ে দু:চিন্তায় আছি। জানা যায়, একটি ইটভাটা নির্মাণ করতে তিন কোটি টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করতে হয়। একটি ইটভাটা ৫/৬ জন শেয়ারে বিনিয়োগ করেন। অধিকাংশ ইটভাটা মালিক আর্থিক প্রতিষ্টান থেকে ঋণ ও ফরওয়ার্ড ইট বিক্রয় করে ইট ভাটা চালায়। এমন পরিস্থিতিতে ইটভাটা মালিকগণ উৎকন্ঠায় রয়েছেন। অনেকই দেউলিয়া হয়েছেন।। মমতাজ নামের এক ইটভাটা মালিক স্ট্রোক করেছেন। লোহাগাড়া ব্রীকফিল্ড মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক সরওয়ার আলম বলেন, কেউ আইনের ঊর্দ্ধে নয়। ইটভাটা মালিকগণ বিনিয়োগ করে ফেলেছেন। স্থানান্তরের জন্য সময় দিলে বিনিয়োগগুলো নষ্ট হতো না। মালিকরা পথে বসতো না। তাছাড়া, প্রত্যেক ইটভাটা ট্রেড লাইসেন্স, খাজনা, ভ্যাট, ইনকাম টেক্স পরিশোধ করেন। ইটভাটা আইন সংশোধন হয়েছে। একটি সুনির্দিষ্ট সময় পেলে মালিকগণ ভাটা বন্ধ বা পরিবেশ বান্ধব করতে পারতো। তাই সংশ্লিস্ট প্রশাসনের কাছে জোর দাবী অন্তত চার মাস সময় দেওয়া হোক মানবিক কারণে।