তাহসান খান একই সঙ্গে দেশের জনপ্রিয় গায়ক ও অভিনেতা। তবে এই তারকাখ্যাতি কেবল দেশেই নয়, পশ্চিমবঙ্গেও রয়েছে তার অসংখ্য ভক্ত। সম্প্রতি ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাতকারে নিজের ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি সৃজিত, মিথিলা ও মেয়ে আয়রাকে নিয়ে কথা বলেছেন তাহসান। সেখানেই তিনি জানালেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে তিনি ভীষণ পছন্দ করেন।
দৈনিক খবরপত্রের পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটির কিছু অংশ তুলে ধরা হলো-
প্রশ্ন : ভারতের সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলার কারণ কী?
তাহসান : আসলে আমি একটু কম সোশ্যাল। তাই সাংবাদিক বন্ধুদের সঙ্গে সে রকম যোগাযোগ রাখতে পারি না। এছাড়া এখনো পর্যন্ত ভারতে গিয়ে কোনো কাজ করা হয়নি। ফলে সেখানকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও ইন্ডাস্ট্রির কারও সঙ্গে আলাপ নেই। তাই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ আসেনি।
প্রশ্ন : ভারতে আপনার এত অনুরাগী, কাজের সুযোগও এসেছে নিশ্চয়…
তাহসান : আসলে আমি যে ধরনের কাজ করতে চাই, সে ধরনের কাজের জন্য এখনো ডাক পাইনি। তাই কনসার্ট বা অভিনয়ের জন্যও যাওয়া হয়নি কখনো। তবে এখন কলকাতায় যাওয়ার একটা বড় কারণ পেয়েছি। আমার মেয়ে আয়রা সেখানে তার মায়ের সঙ্গে থাকে। তাই কলকাতা আসার জন্য আমার মন এখন উড়ছে! জীবনের এমন একটা জায়গায় আছি, কলকাতায় যে কাজই পাব, লুফে নিয়ে চলে যাব।
প্রশ্ন : কাজ ছাড়া কলকাতায় আসা যায় না?
তাহসান : আমার জীবনটা এতটাই কাজের মধ্যে দিয়ে কাটে যে বাইরে ঘুরতে যাওয়াটাও কাজের মাধ্যমেই হয়। গান, অভিনয়, ব্র্যান্ড এন্ডরসমেন্ট, এসব কিছু নিয়ে এমনভাবে সময় কেটে যায় যে কাজ ছাড়া ঘুরতে যাওয়া হয় না।
প্রশ্ন : এত কাজ নিয়ে থাকেন, কিন্তু প্রচারে তো খুব একটা দেখা যায় না?
তাহসান : অনেকেই আমাকে বলেন ‘স্টারডম’ ধরে রাখার জন্য আমার প্রচারে থাকা উচিত, মিডিয়ার সঙ্গেও কথা বলা উচিত। কিন্তু আমি মনে করি, কাজের মাধ্যমে ভক্তদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি কানেক্ট করা যায়। শুধু খবরে থাকার জন্য কোনো কাজ করতে বা কথা বলতে আমি বিশ্বাসী নই। এছাড়াও বিগত কয়েক বছরে বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম আমাকে নিয়ে এমন কিছু কথা লিখেছে, যেগুলো হয় তো আদৌ সত্যি নয়। সে কারণে আমি আরও একটু প্রচারবিমুখ হয়ে পড়েছি।
প্রশ্ন: আপনি সুযোগ পেলে ভারতের কোন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে চাইবেন?
তাহসান : আমি এ রকম রিজিড চিন্তাভাবনা করি না। আগে দেখি গল্পটা কেমন। তবে এখন সৃজিত আমার খুবই প্রিয়, কারণ আমার মেয়েরও খুব ভালো লাগে তাকে। যদিও আগে থেকেই তার কাজ বেশ পছন্দ করতাম। এছাড়াও রাজ চক্রবর্তীর কাজ দেখে বেশ ভালো লেগেছে।
প্রশ্ন: আপনার প্রথম ছবি ‘যদি একদিন’ কিন্তু ভারতীয় নায়িকার সঙ্গেই
তাহসান : হ্যাঁ। শ্রাবন্তী খুব মিষ্টি মেয়ে। শুটিংয়ের প্রথম দিক থেকেই খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়েছিল তার সঙ্গে। এখন হয়তো যোগাযোগ রাখা হয় না। কিন্তু খুব ভালো কাজ করছে সে।
প্রশ্ন: গায়ক তাহসান না অভিনেতা তাহসান?
তাহসান : আমি কাউকেই এগিয়ে রাখব না। সেটা মানুষ ঠিক করবে। আমি তাদের এন্টারটেন করার চেষ্টা করি। এই যেমন ধরুন লকডাউনে কাজ ছিল না সে রকম, তাই বাড়িতে বসে নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে বই লিখে ফেললাম। আমার অভিজ্ঞতার কথা পড়ে হয়তো আমার সঙ্গে তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্কটা আরও দৃঢ় হবে।
প্রশ্ন : মিথিলার সঙ্গে বন্ধুত্বটা কীভাবে বজায় রেখেছেন?
তাহসান : এটা আসলে খুব কঠিন একটা প্রশ্ন। আমাদের প্রত্যেকেরই তো কিছু দোষ-গুণ আছে। আমাদের একটা সম্পর্ক ফেল করেছে মানে এই নয় যে বন্ধুত্ব থাকবে না। আমাদের মেয়েকে আমরা দু’জনেই খুব ভালোবাসি। আমার মেয়ের মায়ের নামে তাই একটি শব্দও খারাপ বলব না। আমি মনে করি, আমরা দু’জন আলাদা থেকেও আয়রাকে সুন্দরভাবে বড় হওয়ার সুযোগ করে দিতে পারি। এছাড়াও বিচ্ছেদের তিন বছর পেরিয়ে গেছে। তখন আমার জীবনের কঠিন সময় ছিল। কিন্তু আমরা কেউই বাইরের মানুষের কথায় আমাদের বন্ধুত্ব নষ্ট করিনি। তাই বোধ হয় আমাদের সম্পর্কটা এতটা সহজ।
প্রশ্ন : কথা হয় মিথিলার সঙ্গে?
তাহসান : আমাদের প্রতিনিয়ত যোগাযোগ আছে। ওরা তো এখন সিকিমে। আয়রা বরফ দেখে ওখান থেকেই আমাকে ভিডিও কল করেছিল।
প্রশ্ন : ভিডিও কল তো হলো, এবার মেয়েকে দেখতে নিজে যাবেন তো?
তাহসান : হ্যাঁ। এই অতিমারির জন্য ভিসার সমস্যা কাটলেই যাব। এছাড়া আমি নতুন বছরে কলকাতায় গিয়ে কাজ করার রেজোলিউশন নিয়েছি।
প্রশ্ন : বেশির ভাগ মানুষই কিন্তু রেজোলিউশন রাখতে পারেন না
তাহসান : না না। আমি রাখব। ২০২১ কলকাতার সঙ্গে আমার প্রেমের বছর!