গাজীপুরের কালীগঞ্জে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মাছের মেলার আয়োজন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) পৌষ মাসের শেষে দিন উপজেলার জামালপুর, বক্তারপুর ও জাঙ্গালীয়া ইউনিয়নের মধ্যে বিনিরাইল গ্রামে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলাকে গিড়ে সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত (দিনব্যাপী) চলে নানা রকম আনন্দ-উৎসব। এই দিনটির জন্য সারাটি বছর অপেক্ষায় থাকেন উপজেলাবাসী। মূলত এটা শীতকালীন জামাই মেলা। কিন্তু সবাই এটাকে বলে মাছের মেলা। তাছাড়া এই মেলাকে ঘিরে এলাকার জামাইদের মধ্যে চলে এক নীরব প্রতিযোগীতা। কোন জামাই সবচেয়ে বড় মাছটি ক্রয় করে শশুরবাড়ীতে নিয়ে যেতে পারে। এ বছর মেলায় সবচেয়ে বড় ৫০ কেজি ওজনের একটি বাগাইর তুলেন কমল চন্দ্র দাস, যার মুল্য হাকাচ্ছেন ৬০ হাজার টাকা। বিনিরাইল গ্রামের মেয়ে শ্যামলী আক্তার ও তার স্বামী ৪০ হাজার টাকা দাম হাকাচ্ছেন ক্রেতা – বিক্রেতার মাঝে চলছে দর কষাকষী। মেলায় সরেজমেনে গিয়ে দেখা যায়, এ বছর সামদ্রিক চিতল, বাঘাড়, আইড়, বোয়াল, ইলিশ, কালী বাউশ, পাবদা, গুলসা, গলদা চিংড়ি, বাইম, কাইকা, রূপচাঁদা মাছের পাশাপাশি স্থান পেয়েছে নানা রকমের দেশী মাছ। উপজেলার সর্ববৃহৎ এই মাছের মেলায়। গাজীপুর, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ থেকে অনেক মানুষ কেবল এই মেলা উপলক্ষেই কালীগঞ্জে এসেছেন। প্রতি বছর পৌষ-সংক্রান্তিতে অনুষ্ঠিত হয় এ মেলা। এবারের মেলায় প্রায় ৮ শতাধিক মাছ ব্যবসায়ী বাহারি মাছের দোকান সাজিয়ে বসেছেন। মেলায় মাছ ছাড়াও আসবাবপত্র, খেলনা, মিষ্টির দোকান বসে। বিনিরাইলের মাছের মেলার আয়োজকরা জানান, এই মেলাটি প্রথম অনুষ্ঠিত হতো খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে এটি অগ্রহায়ণের ধান কাটা শেষে পৌষ-সংক্রান্তি ও নবান্ন উৎসবে আয়োজন করা হতো। প্রায় ২৫২ বছর যাবৎ মেলাটি আয়োজন হয়ে আসছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ মেলাটি একটি সর্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। এ মেলা গাজীপুর জেলার সবচেয়ে বড় মাছের মেলা হিসেবে স্বীকৃত।