ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন ও বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
গতকাল শনিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ওয়াসা ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে আয়োজিত ‘বিল কালেকশন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯-২০২০’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। এসময় তাদের মধ্যে মতের অমিল রয়েছে, এবিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, তাপস ও সাঈদ খোকন দুইজন ভিন্ন মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই দুজনের দৃষ্টিভঙ্গি কোথাও কোথাও পার্থক্য হতে পারে। আমরা আশা করি একটা সময়ের ব্যবধানে এই ভুল বোঝাবুঝির শেষ হয়ে যাবে। দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হতেই পারে। কোথাও যদি দুর্নীতি হয় বা যদি দুর্নীতি পাওয়া যায় রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডেঙ্গু ইস্যুতে নিজেদের সফল দাবি করে মন্ত্রী বলেন, এডিশ মশায় ডেঙ্গু রোগ হয়। গত বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজ লাগিয়ে এবার কাজ করছি। আমাদের কার দায়িত্ব কী এটা আমরা প্রচার করেছি। আইইডিসিআর বলেছিলো, এ বছর ডেঙ্গু বেশি হবে। আমাদের কী করা দরকার আমরা সে কাজটা করেছি। জনগণ অংশগ্রহণ করেছে। তারা তাদের আঙিনায় যেখানে মশার প্রজনন হয় তা ধ্বংস করার জন্য কাজ করেছে। এ বছর আমি যে প্রতিবেদন পেয়েছি, তাতে একজন ডেঙ্গুতে মারা গেছেন। আরও তিনজন ডেঙ্গুতে মারা গেছেন। তবে তাদের ডেঙ্গুর সঙ্গে অন্য রোগও ছিলো। আমরা বলতে পারি আমরা তুলনামূলকভাবে সফল। পানি সরবরাহে ওয়াসার সফলতার কথা তুলে ধরেন মন্ত্রী। বলেন, আজ পানি সরবারহ নিশ্চিত হয়েছে। যা উৎপাদন হয়, তা চাহিদার চেয়ে বেশি। পাশাপাশি গুণগত মান অনেক ভাল।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার পাশাপাশি ওয়াসা ও বিদ্যুতের সিস্টেম লস আগের তুলনায় কমেছে জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের অর্জন নাই সেটা ঠিক না। আমরা অনেক সমস্যাকে সংকুচিত করে এনেছি। ঢাকার রাস্তায় ধীরে ধীরে রিকশা কমে যাচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, রাস্তায় ট্রাফিক অনেক বেশি। রিকশা আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। এটা হচ্ছে আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তনের একটা চিহ্ন। আমাদের নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ হবে। গ্রাহকদের থেকে বিল কালেকশনের কারণে ব্যাংকগুলোকে ধন্যবাদ জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী। তিনি বলেন, আপনারা আমাদের গ্রাহকদের থেকে যে বিল কালেকশন করেন। যারা যত বেশি করেছেন তাদেরকে সম্মাননা দেয়া হচ্ছে। এটা করার জন্য ধন্যবাদ। ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান ড. ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা ও স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং ওয়াসা বোর্ডের সদস্য মোহাম্মদ ইব্রাহিম। তাকসিম এ খান বলেন, প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৪৭ হাজার মানুষ বসবাস করে। প্রতিদিন ২৬৪ কোটি লিটার পানি আমরা উৎপাদন করি। কোনো একটা শহরে একটা প্রতিষ্ঠান আর এতো উৎপাদন করে না।
ওয়াসা তাদের আয় ব্যয়ের হিসাবে বিশ্বমানের প্রক্রিয়ার চেয়েও এগিয়ে গেছে জানিয়ে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ওয়াটার ইউটিলিটির আয় ব্যায়ের যে হিসাব আছে, আন্তর্জাতিকভাবে সবচেয়ে ভালো যে অবস্থান সেটা হচ্ছে দশমিক ৬৫। অর্থাৎ ১০০ টাকা আয় হলে যেখানে ৬৫ টাকা খরচ হয়। কিছু দিন আগে আমরা সেটিকে দশমিক ৬২ এ নিয়ে এসেছি। যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো।