হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ:-এর স্বাভাবিক মৃত্যুকে অস্বাভাবিক আখ্যা দিয়ে মিথ্যা মামলা করে একটি কুচক্রী মহল কওমী অঙ্গনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে। আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যু স্বাভাবিক হয়েছিল, এটি একটি মীমাংসিত বিষয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত ডেথ সার্টিফিকেটেও তার মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলা হয়েছে। হজরতের মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করা নির্জলা মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়। গতকাল শনিবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমিরগণ এসব কথা বলেন।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীর পাঠানো এ বিবৃতিতে হেফাজতের নায়েবে আমিরগণ আরো বলেন, শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ: দারুল উলূম হাটহাজারী’র দীর্ঘ সময়ের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর ছিলেন। তিনি হাটহাজারী মাদরাসাসহ বাংলাদেশের সর্বস্তরের কওমী মাদরাসাগুলোর মুরুব্বি ও অভিভাবক ছিলেন। তার ইন্তেকালে দেশের আলেমসমাজ, মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক ও ধর্মপ্রাণ জনসাধারণ যখন গভীরভাবে শোকাহত তখন তার মৃত্যু নিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের যে অপচেষ্ঠা করা হচ্ছে সকলের কাছে তা স্পষ্ট হয়ে গেছে।
তারা বলেন, একটি নির্দিষ্ট দালালগোষ্ঠী তাদের হীন স্বার্থ উদ্ধারে আল্লামা আহমদ শফী রহ:-এর লাশ নিয়ে রাজনীতি করছে এবং কওমী অঙ্গনে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে মাদরাসা বন্ধ করার পাঁয়তারা করছে। বিবৃতিতে হেফাজতের নায়েবে আমিরগণ বলেন, মাওলানা আনাস মাদানীর দীর্ঘ দিনের স্বেচ্ছচারিতা, অনিয়ম, ছাত্র-শিক্ষকদের প্রতি জুলুম-নির্যাতন, নানা দুর্নীতি ও ছাত্রদের নানাভাবে হয়রাণির কারণে বিক্ষুদ্ধ হয়ে ছাত্ররা তাদের দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছে। যার প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী মাদরাসার শূরার সদস্য, শিক্ষকম-লী, কর্মচারীবৃন্দ, প্রশাসন ও স্থানীয় জনগণ। সুতরাং এই ছাত্র আন্দোলনে মাদরাসার শিক্ষক, বাইরের কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের কোনো ধরণের উস্কানি বা সম্পৃক্ততা ছিল না।
কিন্তু হজরতের মৃত্যুর তিন মাস পর একটি মহল দেশ ও জাতিকে বিভ্রান্ত করার জন্য তার মৃত্যুকে অস্বাভাবিক আখ্যায়িত করে ৩৬ জন আলেমের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও চক্রান্তমূলক মামলা করেছে। দায়েরকৃত মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে এবং বিবরণে যাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, তারা কেউ এর সাথে সম্পৃক্ত নয়। সুতরাং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা সম্পূর্ণ মিথ্যা ষড়যন্ত্র ও উদ্দেশ্যমূলক।
হেফাজত নেতৃবৃন্দ বলেন, এই মামলাবাজরা জনবিচ্ছিন্ন একটি চিহ্নিত দালালগোষ্ঠী ও জাতির কাছে এরা প্রত্যাখ্যাত। সুতরাং আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান করছি এই বিচ্ছিন্ন সুবিধাবাদী গোষ্ঠী থেকে দূরে থকুন এবং অনতিবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাধ্য হবে। বিবৃতিদাতা হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমিরগণ হলেন সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা হাফেজ আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী, নায়েবে আমির আল্লামা শায়খ আহমদ হাটহাজারী, আল্লামা মুফতি আহমদুল্লাহ পটিয়া, আল্লামা নুরুল ইসলাম অলিপুরী, আল্লামা আবদুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপুর) আল্লামা মুফতি আরশাদ রহমানী, আল্লামা মোহাম্মদ ইয়াহইয়া হাটহাজারী, মাওলানা সাজেদুর রহমান বিবড়ীয়া, মাওলানা সালাহ উদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা মুফতি মাহফুজুল হক, মাওলানা মুহিবুল হক গাছবাড়ী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা সরোয়ার কামাল আজিজী, মাওলানা আবদুল আউয়াল, ড. মাওলানা আ ফ ম খালিদ হোসেন, মাওলানা হাবিবুর রহমান হাজী সাহেব, মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা মুফতি হাবিবুর রহমান কাসেমী, মাওলানা ফোরকানুল্লাহ খলিল, মাওলানা মুফতি জসিম উদ্দিন, হাফেজ তাজুল ইসলাম (পীর সাহেব ফিরোজশাহ) মাওলানা আনোয়ারুল করিম (পীর সাহেব যশোর) মাওলানা মোশতাক আহমদ, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা আনাস ভোলা, মাওলানা রশিদ আহমদ কিশোরগঞ্জ, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, মাওলানা নুরুল ইসলাম খান, মাওলানা নেজাম উদ্দিন, মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব বরিশাল, মাওলানা মোহাম্মদ ইউনুস, মাওলানা আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ হাসান (পীর সাহেব বাহাদুরপুর), মাওলানা আব্দুস সবুর বগুড়া, মাওলানা আফজালুর রহমান ফেনী, মাওলানা আব্দুল বাছির সুনামগঞ্জ, মাওলানা আইয়ুব বাবুনগর, মাওলানা মহিউল ইসলাম বোরহান রেঙ্গা মাদরাসা, মাওলানা আব্দুল বাছেত আজাদ হবিগঞ্জ, মাওলানা আব্দুল হালিম (বরিশাল) মাওলানা জাহেদুল্লাহ ইছাপুর।