দিনাজপুরের হিলিতে ঘন কুয়াশা হিমেল হাওয়ায় আর কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত। হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে সব ধরনের যানবাহন। ঘন কুয়াশা আর ঠা-ায় মোটা কাপড় পড়েও ঠেক মানছে না শীতের তীব্রতা। কাজ না পেয়ে দিশেহারা দিনমজুরেরা। জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, জানিয়েছেন জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তর। দিনাজপুর আবহাওয়া অফিস ইনচার্জ তোফাজ্জল হোসেন জানান, মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) জেলায় ভোর রাতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সকালে তাপমাত্রা ছিলো ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি আরও জানান, কয়েক দিনের চেয়ে আজকে শীতের প্রভাবটা অনেকটাই কম। শৈত্য প্রবাহ নেই, যার কারণে শীত কম। কিন্তু ভোর থেকে ঘন কুয়াশার পরিমান অনেক বেশি। মঙ্গলবার সকালে হিলি শহর ঘুরে দেখা যায়, কয়েক দিনের চেয়ে আজকে শৈত্যপ্রবাহের তীব্রতা তেমন নেই। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে ঘর থেকে ঠিক মতো বের হতে পারছে না খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষগুলো। ছোট থেকে বড় সব ধরনের যানবাহন লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে জুবুথুবু হয়ে হাত-পা গুটিয়ে কর্মহীন হয়ে বসে আছে দিন আনা, দিন খাওয়া শ্রমিকরা। কনকনে শীতে রিকশা-ভ্যান চালকরা মারতে পারছে না রিকশা, ভ্যানের প্রেটেল। তীব্র শীতে অনেকেই জটলা বেঁধে আগুন জ্বালিয়ে গরম অনুভব করছে। বেলা ১১ টার পরও কাটেনি কুয়াশার তীব্রতা। যানবাহনগুলো লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে।ঘন কুয়াশায় দ্রুতগতিতে যাতায়াত করতে পারছে না এইসব যানবাহন। ঠা-া আর কুয়াশায় দোকানপাট সহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়ছে। আবার তীব্র শীতে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সীরা সর্দি-জ্বর, কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। দিনাজপুর থেকে ছেড়ে আসা ধান বোঝায় ট্রাক চালক রবিউল হুসাইন বলেন, সকালে দিনাজপুর থেকে রওনা দিয়েছি। ঘন কুয়াশার কারণে গাড়ি জোরে চালায়তে পারিনি। হিলিতে আসতে প্রায় ডবল সময় লাগলো। হিলি থেকে দিনাজপুর গামী যাত্রীবাহী বাসচালক আজিজ রহমান বলেন, আজ শীত অনেকটা কম কিন্তু কুয়াশা প্রচুর। বেশি জোরে যাওয়া যাবে। লাইট জ্বালিয়ে যেতে হবে। হিলি চারমাথায় হাত গুটিয়ে নিজ ভ্যানে বসে থাকা আফজাল হোসেন বলেন, প্রতিদিন ভোর বেলায় ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। কয়েক দিন থেকে কুয়াশা আর ঠা-ায় বের হতে পারছি না। আবার বের হয়ে কি করবো যাত্রী তো হয় না। বসে বসে আছি। কথা হয় একজন রিকশা চালক ওবায়দুর রহমানের সাথে, তিনি বলেন, খালি ঘুরে বেড়াচ্ছি, ভাড়া পাচ্ছি না। যে শীত, এতো সকালে কে বাড়ি থেকে বের হবে। কিন্তু ভাড়া না হলে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে চলবো কি করে? হিলি বাজারে কাজের সন্ধানে বসে থাকা কয়েক জন দিনমজুরের সাথে কথা হয়,তারা বলেন, কাজ পাওয়ায় আশায় সকাল থেকে বাজারে বসে আছি। এখন পর্যন্ত কেউ কাজে ডাকছে না। কুয়াশা শীতের কারণে কেউ বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না, আর আমরা কাজও পাচ্ছি না। কাজ কাম না হলে বাড়ি খরচ করবো কি দিয়ে? হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ হারুন জানান, কয়েক দিন যাবৎ শীতের তীব্রতা অনেক বেশি। শীতের শুরু থেকে আমরা শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে আসছি। এছাড়াও হিলির কয়েকটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন আমাদের সহযোগিতায় অসহায় শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে যাচ্ছে। শীত থাকাকালীন আমাদের শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত থাকবে।