শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১২:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বিশ্বমানের টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে : রাষ্ট্রপতি রাসূল (সা.)-এর সীরাত থেকে শিক্ষা নিয়ে দৃঢ় শপথবদ্ধ হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে—ড. রেজাউল করিম চৌদ্দগ্রামে বাস খাদে পড়ে নিহত ৫, আহত ১৫ চাহিদার চেয়ে ২৩ লাখ কোরবানির পশু বেশি আছে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী রাজনীতিবিদেরা অর্থনীতিবিদদের হুকুমের আজ্ঞাবহ হিসেবে দেখতে চান: ফরাসউদ্দিন নতজানু বলেই জনগণের স্বার্থে যে স্ট্যান্ড নেয়া দরকার সেটিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার মালয়েশিয়ার হুমকি : হামাস নেতাদের সাথে আনোয়ারের ছবি ফেরাল ফেসবুক হামাসের অভিযানে ১২ ইসরাইলি সেনা নিহত আটকে গেলো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অর্থ ছাড় গাজানীতির প্রতিবাদে বাইডেন প্রশাসনের ইহুদি কর্মকর্তার লিলির পদত্যাগ

অজানা উদ্দেশ্যে শিশু রফিকুলকে ট্রেনে তুলে দিলেন আপন ভাই-ভাবি

আওরঙ্গজেব হোসেন রাব্বী রাণীনগর (নওগাঁ) :
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২১

মা-বাবা হারা ১০ বছরের শিশু রফিকুল। বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব না নিয়ে ১০ বছর বয়সী ছোট ভাইকে নিরুদ্দেশ পাঠিয়ে দিলেন তার আপন বড় ভাই ও ভাবি। ‘আমরা তোকে আর রাখব না, তোর মন যেখানে যেতে চায় চলে যাবি’ এই বলে তাকে ট্রেনে তুলে দেন তারা। ১০ বছর বয়সী শিশু রফিকুল যে বয়সে পড়া-শোনা ও হেসে-খেলে বেড়ানোর কথা। সেই বয়সে তার ঠাঁই হয়নি আপন বড় ভাই ও ভাবির সংসারে। একরাশ দু:খ ও কষ্ট নিয়ে পারি জমাতে বাধ্য করা হয়েছে অজানা উদ্দেশ্যে। অনেক আকুতি মিনতি করা হলেও ভাই-ভাবির কঠিন অন্তর গলেনি। ভুক্তভোগী শিশু রফিকুল ইসলাম নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের মৃত বাদেশ মন্ডলের ছোট ছেলে। শনিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টার তাকে রাজবাড়ির বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া যায়। রোববার দুপুরে স্থানীয় সোনার বাংলা সমাজ কল্যাণ ও ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়ক এসএম হেলাল খন্দকার শিশুটিকে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নিয়ে যান। শিশু রফিকুল জানান, তার বয়স ১০ বছর। সে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়তো। তার বাবা-মা প্রায় এক বছর আগে মারা যান। তাদের মৃত্যুর পর থেকে একমাত্র আপন বড় ভাই শফিকুল ইসলামের কাছে থাকতাম। ভাই রাজমিস্ত্রির কাজ করেন এবং নওগাঁর রাণীনগরে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। হঠাৎ শনিবার আমার ভাই-ভাবি আর রাখতে পারবে না তাদের কাছে। এরপর রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রেনে তুলে দেন আমাকে। শিশু রফিকুল আরো বলেন, আমি অনেক কান্নাকাটি করলেও তারা আমাকে জোর করে তুলে দেন ট্রেনের পেছনের বগিতে। সে সময় রাণীনগর স্টেশন খুব ফাঁকা ছিলো আর ট্রেনের শব্দ কারো সাহায্য চাইতে পারিনাই। ভাই-ভাবি আমাকে ভয়ভীতি দেয়াতে চুপ থাকতে হয়েছে। এরপর বালিয়াকান্দি স্টেশনে ট্রেন থামলে আমি নেমেপরি। সেখানকার স্থানীয় সামাজিক সংগঠনের সদস্য এসএম হেলাল খন্দকার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে জানান, শনিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেন চলে যাবার পর স্টেশনে এলোমেলোভাবে ঘুরতে দেখে রফিকুলকে বাড়িতে নিয়ে যান এবং বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে রাতেই বিষয়টি স্থানীয় থানা পুলিশ ও ইউএনওর কাছে অবহিত করেন। পরে রবিবার দুপুরে রফিকুলকে ইউএনওর কার্যালয়ে নিয়ে যান। এ বিষয়ে ফোনে যোগাযোগ করা হলে রাজবাড়ির বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আম্বিয়া সুলতানা বলেন, শনিবার রাতে স্টেশনে এক সমাজকর্মী একটি শিশুকে পেয়েছেন। শিশুটির দেয়া তথ্যানুসারে নওগাঁর সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ বিষয়ে শিশু রফিকুল ইসলামের বড় ভাই শফিকুল ইসলামের সাথে ফোনে তার মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ছোট ভাই উদাসিন টাইপের ছেলে তাকে এক দোকানে কাজে লাগিয়ে দিয়েছিলাম কিন্তু সে কাজ না করে ঘুরে বেড়াতো। আমাদের অভাবের সংসার আমরা নিজেরাই চলতে পারিনা। তার দায়িত্ব নিতে পারবোনা। কেন এভাবে শিশুটিকে ট্রেনে তুলে দিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তার দায়িত্ব নিতে পারবো না বলেই তিনি ফোনটি কেটে দেয়। রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত খাঁন হাসান জানান, শিশুটির মা-বাবা কেউ বেঁচে নাই। বড় ভাইয়ের কাছেই থাকে। তাদের অভাবের সংসার বড় ভাইটিও শারীরিকভাবে অক্ষম। শিশুটিকে নিয়ে ভাই-ভাবির মাঝে সমস্যা লেগেই থাকতো। জানতে পারলাম শিশুটি রাজবাড়ির বালিয়াকান্দিতে অবস্থান করছে। সেখানকার ইউএনও স্যারের সাথে কথা হয়েছে। আমাদের রাণীনগরের ইউএনও স্যারও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন। আমরা সোমবার তাকে ফিরে এনে একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করানোর ব্যবস্থা গ্রহন করবো। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাণীনগর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল মামুন জানান, শিশুটিকে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। বর্তমানে সে রাজবাড়ির বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হেফাযতে আছেন। শিশুটির পবিারের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। শিশুটির সাথে কথা বলে অভিযুক্ত পরিবারে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাছাড়া যদি তারা শিশুটির দায়িত্ব না নিতে চায় তবে শিশুটির সুরক্ষার ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করবো।অজানা উদ্দেশ্যে শিশু রফিকুলকে ট্রেনে তুলে দিলেন আপন ভাই-ভাবি
আওরঙ্গজেব হোসেন রাব্বী রাণীনগর (নওগাঁ)
মা-বাবা হারা ১০ বছরের শিশু রফিকুল। বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব না নিয়ে ১০ বছর বয়সী ছোট ভাইকে নিরুদ্দেশ পাঠিয়ে দিলেন তার আপন বড় ভাই ও ভাবি। ‘আমরা তোকে আর রাখব না, তোর মন যেখানে যেতে চায় চলে যাবি’ এই বলে তাকে ট্রেনে তুলে দেন তারা। ১০ বছর বয়সী শিশু রফিকুল যে বয়সে পড়া-শোনা ও হেসে-খেলে বেড়ানোর কথা। সেই বয়সে তার ঠাঁই হয়নি আপন বড় ভাই ও ভাবির সংসারে। একরাশ দু:খ ও কষ্ট নিয়ে পারি জমাতে বাধ্য করা হয়েছে অজানা উদ্দেশ্যে। অনেক আকুতি মিনতি করা হলেও ভাই-ভাবির কঠিন অন্তর গলেনি। ভুক্তভোগী শিশু রফিকুল ইসলাম নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের মৃত বাদেশ মন্ডলের ছোট ছেলে। শনিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টার তাকে রাজবাড়ির বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া যায়। রোববার দুপুরে স্থানীয় সোনার বাংলা সমাজ কল্যাণ ও ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়ক এসএম হেলাল খন্দকার শিশুটিকে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নিয়ে যান। শিশু রফিকুল জানান, তার বয়স ১০ বছর। সে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়তো। তার বাবা-মা প্রায় এক বছর আগে মারা যান। তাদের মৃত্যুর পর থেকে একমাত্র আপন বড় ভাই শফিকুল ইসলামের কাছে থাকতাম। ভাই রাজমিস্ত্রির কাজ করেন এবং নওগাঁর রাণীনগরে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। হঠাৎ শনিবার আমার ভাই-ভাবি আর রাখতে পারবে না তাদের কাছে। এরপর রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রেনে তুলে দেন আমাকে। শিশু রফিকুল আরো বলেন, আমি অনেক কান্নাকাটি করলেও তারা আমাকে জোর করে তুলে দেন ট্রেনের পেছনের বগিতে। সে সময় রাণীনগর স্টেশন খুব ফাঁকা ছিলো আর ট্রেনের শব্দ কারো সাহায্য চাইতে পারিনাই। ভাই-ভাবি আমাকে ভয়ভীতি দেয়াতে চুপ থাকতে হয়েছে। এরপর বালিয়াকান্দি স্টেশনে ট্রেন থামলে আমি নেমেপরি। সেখানকার স্থানীয় সামাজিক সংগঠনের সদস্য এসএম হেলাল খন্দকার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে জানান, শনিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেন চলে যাবার পর স্টেশনে এলোমেলোভাবে ঘুরতে দেখে রফিকুলকে বাড়িতে নিয়ে যান এবং বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে রাতেই বিষয়টি স্থানীয় থানা পুলিশ ও ইউএনওর কাছে অবহিত করেন। পরে রবিবার দুপুরে রফিকুলকে ইউএনওর কার্যালয়ে নিয়ে যান। এ বিষয়ে ফোনে যোগাযোগ করা হলে রাজবাড়ির বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আম্বিয়া সুলতানা বলেন, শনিবার রাতে স্টেশনে এক সমাজকর্মী একটি শিশুকে পেয়েছেন। শিশুটির দেয়া তথ্যানুসারে নওগাঁর সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ বিষয়ে শিশু রফিকুল ইসলামের বড় ভাই শফিকুল ইসলামের সাথে ফোনে তার মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ছোট ভাই উদাসিন টাইপের ছেলে তাকে এক দোকানে কাজে লাগিয়ে দিয়েছিলাম কিন্তু সে কাজ না করে ঘুরে বেড়াতো। আমাদের অভাবের সংসার আমরা নিজেরাই চলতে পারিনা। তার দায়িত্ব নিতে পারবোনা। কেন এভাবে শিশুটিকে ট্রেনে তুলে দিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তার দায়িত্ব নিতে পারবো না বলেই তিনি ফোনটি কেটে দেয়। রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত খাঁন হাসান জানান, শিশুটির মা-বাবা কেউ বেঁচে নাই। বড় ভাইয়ের কাছেই থাকে। তাদের অভাবের সংসার বড় ভাইটিও শারীরিকভাবে অক্ষম। শিশুটিকে নিয়ে ভাই-ভাবির মাঝে সমস্যা লেগেই থাকতো। জানতে পারলাম শিশুটি রাজবাড়ির বালিয়াকান্দিতে অবস্থান করছে। সেখানকার ইউএনও স্যারের সাথে কথা হয়েছে। আমাদের রাণীনগরের ইউএনও স্যারও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন। আমরা সোমবার তাকে ফিরে এনে একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করানোর ব্যবস্থা গ্রহন করবো। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাণীনগর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল মামুন জানান, শিশুটিকে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। বর্তমানে সে রাজবাড়ির বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হেফাযতে আছেন। শিশুটির পবিারের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। শিশুটির সাথে কথা বলে অভিযুক্ত পরিবারে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাছাড়া যদি তারা শিশুটির দায়িত্ব না নিতে চায় তবে শিশুটির সুরক্ষার ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করবো।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com