মৌলভীবাজারে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতি মৌলভীবাজার জেলা শাখা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ১২ আগষ্ট ২০২০ইং এর পত্রটি প্রত্যাহার পূর্বক অধিগ্রহণকৃত বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক (চাকুরীর শর্তাদি নির্ধারণ) বিধিমালা ২০১৩ এর ধারা-২ এর উপধারা (গ)-তে বর্ণিত বেসরকারী চাকুরীর ৫০% কার্যকর চাকুরীকালের ভিত্তিতে টাইমস্কেলসহ অন্যান্য আর্থিক সুবিধাদি প্রদান এবং জেষ্ঠ্যতা ও পদোন্নতি বহালকরনের দাবীতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালণ করা হয়। ২৪ জানুয়ারী বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি মৌলভীবাজার জেলা শাখার আহ্বায়ক নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আব্দুস শহীদ এর সঞ্চালনায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতি মৌলভীবাজার জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ মামুনুর রশিদ ভূঁইয়া, যুগ্ন আহবায়ক রামকুমার কৈরী, মাওলানা মাসুক আহমদ, গোলাম মাহমুদ চৌধুরী, রহিমা বেগম, লুৎফুর রহমান, মোঃ আইয়ুব আলী, রুফিয়া বেগম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। আর, প্রাথমিক শিক্ষাই হচ্ছে শিক্ষার মুল ভিত্তি। এ বাস্তবতা অনুধাবন করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশের দূর্বল অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যেও ১৯৭৩ সালে দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রায় ৩৭ হাজার বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কর্মরত শিক্ষকদের চাকুরী জাতীয়করণ করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯১ সাল থেকে সরকারের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে মাত্র ৫০০ টাকা বেতনে কর্মরত শিক্ষকদের শ্রমের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতির পিতার সুযোগ্য উত্তরসুরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও ২০১৩ সালের ০৯ জানুয়ারী শিক্ষক মহাসমাবেশের মাধ্যমে দেশের ২৬ হাজার ১শ ৯৩টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কর্মরত শিক্ষকদের চাকুরী জাতীয়করনের ঐতিহাসিক ঘোষনা দিয়ে ১ লাখ ৪ হাজার ৭শ ৭২ জন শিক্ষক ও তাদের পরিবারের মাঝে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। শিক্ষানীতি প্রণয়নসহ উপরোক্ত ২টি সময়পযোগী ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করায় প্রাথমিক শিক্ষার আমূল পরিবর্তন এসেছে। প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এ বিশাল সাফল্য বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ যেন এককভাবে ঘরে তুলতে না পারে সেজন্য বর্তমান প্রশাসনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা ভিন্নমতাদর্শের কিছু সংখ্যক আমলা জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে আপনার সরকারের প্রতি বিরুপ মনোভাব সৃষ্টির লক্ষ্যে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আকষ্মিভাবে বিধিমালার ভুল ব্যাখ্যা নিয়ে ৮ বছর পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের বর্তমান প্রশাসন গত ১২ আগষ্ট ২০২০ইং এর এক পত্রে শিক্ষকদের টাইমস্কেল বাতিল করে ৮ বছর পূর্ব থেকে গৃহিত অর্থ ফেরৎ দেয়ার নিদের্শনা দিয়ে ৪৮ হাজার ৭শ ২০ জন শিক্ষক ও তাদের পরিবারের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি করা হয়েছে। ওই পত্র অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১৫ নভেম্বর ২০২০ইং এর পত্রটিতে শিক্ষকগণ জেষ্ঠ্যতা পদোন্নতির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। অথচ, বাস্তবতার নীরিখেই অর্থ মন্ত্রণালায়ের ১২ আগষ্ট ২০২০ইং এর পত্রটি প্রত্যাহার পূর্বক অধিগ্রহণকৃত বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক (চাকুরীর শর্তাদি নির্ধারণ) বিধিমালা ২০১৩ এর বিধি ২ এর উপবিধি (গ)-তে বর্নিত বেসরকারী চাকুরীর ৫০% কার্যকর চাকুরীকালের ভিত্তিতে টাইমস্কেলসহ অন্যান্য আর্থিক সুবিধাদি বহাল রাখা প্রয়োজন। শিক্ষক (চাকুরীর শর্তাদি নির্ধারণ) বিধিমালা ২০১৩ এর বিধি-২ এর উপবিধি (গ)-তে বর্ণিত ৫০% কার্যকর চাকুরী কালের ভিত্তিতে জেষ্ঠ্যতা পদোন্নতির সুযোগ দেয়া প্রয়োজন। ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক প্রধান শিক্ষক পদে নিযোগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকগণকে সরকারীভাবে গেজেটভূক্ত করা প্রয়োজন। আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের বর্তমান প্রশাসনের জারিকৃত ১২ আগষ্ট ২০২০ইং এর পত্রটি প্রত্যাহার পূর্বক টাইমস্কেল, পিআরএল জেষ্ঠ্যতা ও পদোন্নতি বহাল রাখার দাবীতে নি¤œবর্ণিত ৩টি সমস্যা সমাধানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।