শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর রিট আরেক হত্যা মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান উৎপাদনে ফিরলো কর্ণফুলী পেপার মিল ২০৫০ সালের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণে দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, দলবল নিয়ে ঘুরছেন পার্কে পিআইবির নতুন ডিজি ফারুক ওয়াসিফ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আবদুল্লাহ ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পোশাক শিল্প আইন আপনার হাতে তুলে নেয়ার কারো কোনো অধিকার নেই :স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বললেন মির্জা ফখরুল

দুই বছরে ১৮০০ সিলিন্ডার বিস্ফোরণ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২১

মানহীনতার কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনা, ঘটছে প্রাণহানি
গাজীপুরের গ্যাস সিলিন্ডার থেকে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে চারজনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, গ্যাসভর্তি সিলিন্ডারের রেগুলেটরটি বিকল হয়ে ছিল। সেখান থেকে সারারাত গ্যাস নিঃসৃত হয়েছে। পরদিন সকালে চুলা ধরানোর জন্য আগুন জ্বালাতেই বিকট শব্দে সিলিন্ডারটি বিস্ফোরণ হয়ে পুরো বাসাতে আগুন ধরে যায়। মানহীন সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহের কারণে গত দুই বছরে প্রায় ১৮০০ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪০ জন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত সিলিন্ডারের মান পরীক্ষার ব্যবস্থা করা না গেলে এমন দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে না।
ফায়ার সার্ভিসের হিসাব মতে, ২০১৯ সালে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে ৮১৮টি। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৫ জন। আহত হয়েছেন ৬৯ জন। আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১২ কোটি টাকার ওপরে। পরের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে এ দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫৭টিতে। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০ জন। আহত হয়েছেন ১০৭ জন। আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৪ কোটি টাকা। গত বছরে সারা দেশের মোট অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ২১ হাজার ৭৩টি। এর মধ্যে ইলেকট্রিক, গ্যাস ও মাটির চুলার আগুন ছিল ৩ হাজার ৫৬৪টি। এটি মোট আগুনের ১৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। এ আগুনের অধিকাংশই ছিল গ্যাস চুলা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সৃষ্ট।
চলতি বছরের ২৯জানুয়ারি পর্যন্ত অন্তত দুটি এলপিজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণ হারিয়েছে পাঁচজন। আহত হয়েছেন আরো ১০ জন। গড় হিসাবে দেখা যায়, প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও তিনটি করে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে রান্নাঘরে। এর বাইরে যানবাহনেও এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহারের ফলে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটছে।
গাজীপুরের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক (ঢাকা) দেবাশীষ বর্ধন। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে আমরা জানতে পেরেছি ওই বাসায় যে সিলিন্ডারটি ব্যবহার করা হচ্ছিল, তা দুর্ঘটনার ঠিক একদিন আগে আনা। সিলিন্ডারের রেগুলেটরটি নষ্ট ছিল। সেখান থেকে গ্যাস বের হচ্ছিল। বাসার ভাড়াটিয়ারা বিষয়টি সিলিন্ডার সরবরাহকারীদের জানিয়েছিলেন। কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ায় সরবরাহকারীরা সেদিন আসতে পারেননি। পরে কোনো উপায় না পেয়ে গামছা দিয়ে সিলিন্ডারের মুখ বেঁধে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সারা রাত সেখান থেকে গ্যাস বের হতে থাকে। পরে সকালে আগুন জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে।
তিনি আরো বলেন, দেশে এলপি গ্যাসের ব্যবহার বেড়েছে। কিন্তু যেসব সিলিন্ডারে এ গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে, সেগুলোর অধিকাংশই মানহীন। এসব সিলিন্ডার যথাযথ প্রক্রিয়ায় মানপরীক্ষা ছাড়া ব্যবহার করা ঠিক নয়। এমনকি সিলিন্ডারের ব্যবহূত ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সচেতন হতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, পয়সা বাঁচানোর জন্য গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সিলিন্ডারে নিম্নমানের রেগুলেটর ও পাইপ ব্যবহার করে থাকেন। এর ফলে এমন অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা ঘটছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, গ্যাস সিলিন্ডারের স্বাভাবিক আয়ুষ্কাল ১৫ বছর। অথচ ২৮ বছরের পুরনো সিলিন্ডারেও এলপিজি বিপণন হচ্ছে। মূলত মেয়াদোত্তীর্ণ এসব সিলিন্ডারে গ্যাস বিপণনের কারণেই দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছে। বর্তমানে ব্যক্তি খাতের হাতে এলপি গ্যাস বাজারের ৮০ ভাগের নিয়ন্ত্রণ। বেশকিছু প্রতিষ্ঠান এলপি গ্যাস সমুদ্রপথে আমদানির পর সিলিন্ডারে ভর্তি করে বিপণন করছে। কিন্তু গ্যাসভর্তি এসব সিলিন্ডার বাজারে সরবরাহ এবং সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে রয়েছে গুরুতর অনিয়ম।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com