অনলাইন মুভি ও টেলিভিশন শো স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম নেটফ্লিক্স ‘স্লিপ টাইমার’ নামে নতুন একটি ফিচারের পরীক্ষা চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে সুবিধামতো সময়ে পছন্দের কনটেন্ট দেখতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। প্রাথমিকভাবে শুধু অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের জন্য ফিচারটির পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। দ্য ভার্জ এ খবর জানিয়েছে।
জেনে নির নেটফ্লিক্স নিয়ে আরো অজানা কিছু তথ্য: নেটফ্লিক্স এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অন-ডিমান্ড ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিস। প্রায় সব ধরনের মুভি আর টিভি শো পাবেন নেটফ্লিক্স এ। নিজেদের প্রডিউস করা প্রোগ্রামগুলোও নেটফ্লিক্স প্ল্যাটফর্মে ব্যাপক জনপ্রিয়। এগুলোকে নেটফ্লিক্স অরিজিনালস বলা হয়। মাসিক ৮ থেকে ১২ ডলার সাবস্ক্রিপশন চার্জ থাকলেও বাংলাদেশেও এটি কম জনপ্রিয় নয়।
বাংলাদেশের গ্রাহকদের কথা বিবেচনা করে সম্প্রতি সরকার নেটফ্লিক্সকে বাংলাদেশে ক্যাশ সার্ভার বসানোর সুযোগ দিয়েছে। এর মাধ্যমে নেটফ্লিক্স বাংলাদেশী গ্রাহকদের আরো দ্রুত ও উন্নত স্ট্রিমিং সুবিধা দিতে পারবে।নেটফ্লিক্স কী এটা হয়ত অনেকেরই অজানা নয়। তবে নেটফ্লিক্স সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানার পর আপনিও হয়তো চমৎকৃত হয়ে যাবেন। তাহলে চলুন নেটফ্লিক্স সম্পর্কে কিছু চমকপ্রদ তথ্য জেনে নেয়া যাক।
নেটফ্লিক্স এর নাম কিন্তু নেটফ্লিক্স ছিল না: নেটফ্লিক্স কো-ফাউন্ডার মার্ক র্যান্ডলফ জানান, প্রথমদিকে নেটফ্লিক্স এর নাম নেটফ্লিক্স ছিল না। তাদের কোম্পানির নাম ছিল “কিবল”। শুরুতে তারা ডিভিডি ভাড়া দিত। কোম্পানিটি ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিস শুরু করার পর নেটফ্লিক্স নামে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
“হাউজ অব কার্ডস” নেটফ্লিক্স প্রযোজিত প্রথম প্রোগ্রাম নয়: অনেকে মনে করেন “হাউজ অব কার্ডস” নেটফ্লিক্সের প্রযোজিত প্রথম প্রোগ্রাম। আসলে তা নয়। এটি তাদের প্রথম বাণিজ্যিক প্রোগ্রাম হলেও তাদের প্রথম নেটফ্লিক্স অরিজিনাল ছিল “এক্সাম্পল শো” নামক একটি প্রোগ্রাম। এটি ২০১০ সালে করা তাদের একটি টেস্ট প্রজেক্ট ছিল। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে এটি গ্রাহকদের জন্য রিলিজ করা হয়েছিলো। আপনি চাইলে সেই হাস্যরসাত্মক ১১ মিনিটের প্রোগ্রামটি সম্পর্কে এই লিঙ্ক থেকে জানতে পাবেন।
ব্লকবাস্টার সস্তায় পেয়েও নেটফ্লিক্সকে কিনেনি: ২০০০ সালে ডিভিডি ও ভিডিও রেন্টাল সার্ভিস ব্লকবাস্টারকে ৫০ মিলিয়ন ডলারে নেটফ্লিক্স কিনতে অনুরোধ করেন নেটফ্লিক্স কো-ফাউন্ডার রিড হ্যাস্টিংস। কিন্তু ব্লকবাস্টারের কাছে এটা তেমন একটা সম্ভাবনাময় মনে হয়নি। অবশ্য তখন নেটফ্লিক্স এর এত দাপটও ছিল না। তারা তখন শুধুমাত্র ডিভিডি রেন্টাল সার্ভিসের ব্যবসা করতো। এখন ব্লকবাস্টারের অবস্থা খুব একটা ভালনা, আর নেটফ্লিক্স দুনিয়া কাঁপাচ্ছে।
বিশ্বের ১৫ ভাগ ইন্টারনেট ট্রাফিক নেটফ্লিক্স দিয়েই আসে: ফেসবুক কিংবা গুগলের গ্রাহক অনেক বেশি হলেও নেটফ্লিক্স ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিস হওয়াতে অনেক বেশি ব্যান্ডউইডথ ব্যবহার করে। মূলত বিশ্বে প্রতি সেকেন্ডে ব্যবহৃত ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ এর ১৫ ভাগই নেটফ্লিক্স এর জন্য ব্যবহৃত হয়।
নেটফ্লিক্স একবার নিজেরা একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিল: ২০১৩ সালে নেটফ্লিক্স একাডেমী কিংবা গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড এর আদলে “দ্য ফ্লিক্সিস” নামক অ্যাওয়ার্ড আয়োজন করেছিলো। অবশ্য এটা পুরোটাই একটি মজার অনুষ্ঠান ছিল। অ্যাওয়ার্ডগুলোও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ন কিছু ছিল না।
নেটফ্লিক্স এর বয়স কিন্তু গুগল থেকে বেশি: শুরুর দিকে নেটফ্লিক্স ডাকের মাধ্যমে ডিভিডি ডেলিভারির কাজ করতো। তাদের সেই কার্যক্রম ১৯৯৮ থেকে শুরু হলেও কোম্পানি হিসেবে তারা আত্মপ্রকাশ করে ১৯৯৭ সালে। সেই হিসেবে তাদের বয়স টেক জায়ান্ট গুগল এর চেয়েও এক বছর বেশি।
নেটফ্লিক্সের সাবস্ক্রাইবার ১৯৫+ মিলিয়ন: ২০২০ এর ৩য় প্রান্তিক পর্যন্ত, সারা বিশ্বে নেটফ্লিক্স এর সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ১৯৫ মিলিয়নেরও বেশি। অবশ্য এদের মাঝে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের গ্রাহক সংখ্যাই ৭৩ মিলিয়ন। বিশ্বের ১৯০ টির বেশি দেশের মানুষ নেটফ্লিক্স সেবা পায়।
নেটফ্লিক্সে ৭৬০০০ সাব-ক্যাটেগরি আছে: সাধারণত ধরন অনুযায়ী মুভি বা টিভি সিরিজকে কিছু জনরা তে ভাগ করা হয়। কিন্তু নেটফ্লিক্স এদিক থেকে এক ধাপ এগিয়ে। তারা তাদের প্রোগ্রামগুলোকে ৭৬০০০ জনরা তে ভাগ করেছে। এগুলোকে তারা বলছে মাইক্রো-ক্যাটেগরি।
সারাদিন বসে বসে ভিডিও দেখার জন্যও বেতনভুক্ত কর্মী আছে নেটফ্লিক্সে: আমাদের মাঝে অনেকেই সারাদিন শুয়ে বসে মুভি বা সিরিজ দেখতে ওস্তাদ। নেটফ্লিক্স কিন্তু এমন মানুষদেরকে বেতন দিয়ে রাখছে সারাদিন তাদের শো-গুলো দেখার জন্য। অবশ্য তাদের কাজটা এতটা সহজও নয়। দেখার পাশাপাশি তাদেরকে যথাযথ মেটাড্যাটা দিয়ে ট্যাগ করে শোগুলোকে ক্যাটেগরি অনুযায়ী সাজাতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে ছবির ডিরেক্টর সহ অন্যান্য কলাকুশলীদের নামও খুঁজে বের করে যুক্ত করতে হয়।