আসন্ন আইপিএল নিলামে সাকিব আল হাসানকে চড়া ভিত্তিমূল্যে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। নিলামে সাকিবের ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ২ কোটি রুপি, যা সর্বোচ্চ ক্যাটাগরিতে থাকা ক্রিকেটারদের জন্য নির্ধারিত।
এই ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশের অলরাউন্ডারের সঙ্গে আছেন আরও ১০ জন ক্রিকেটার। তারা হলেন- হরভজন সিং, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, কেদার যাদব, স্টিভেন স্মিথ, মঈন আলী, স্যাম বিলিংস, কলিন ইনগ্রাম, লিয়াম প্লাঙ্কেট, জেসন রয়, মার্ক উড। আইপিএল নিলামের জন্য সর্বমোট ১০৯৭ জন খেলোয়াড়ের রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। এর মধ্যে ভারতের ৮১৪ জন, ২৮৩ জন খেলোয়াড় বিদেশি। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তালিকাভুক্ত হয়েছেন মোট ৫ জন খেলোয়াড়। টুর্নামেন্টের নিলাম হবে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি চেন্নাইতে। ভারতীয় সময় বিকেল ৩টা থেকে শুরু হবে অনুষ্ঠান।
সাকিবের এক অজানা অবিশ্বাস্য রেকর্ড: বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের কারনে সকল ধরনের ক্রিকেট আপাতত বন্ধ। আইসিসিও তাদের বিভিন্ন বাছাইপর্বের খেলা আগামী জুন মাস পর্যন্ত বন্ধ রেখেছে। লম্বা সময় ক্রিকেট ভক্তদের জন্য থাকছেনা কোনো ক্রিকেট। এই বিশাল ক্রিকেট বিরতিতে চলুন দেখে নেওয়া যাক বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের পুরনো কিছু সাফল্য ও ম্যাচের কথা। আজকে জেনে নেওয়া যাক বাংলাদেশ তথা বিশ্বের সেরা টেস্ট অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের একটি অজানা রেকর্ডের কথা।
সাকিবকে বলা হয়ে থাকে পুরোদস্তুর অলরাউন্ডার। পুরনো রেকর্ড ফিরে দেখার কিছুদিন আগের একটি রিপোর্টে পাঠকরা নিশ্চয়ই পড়েছিলেন এশিয়ার বাইরে একজন অলরাউন্ডার হওয়ার পরও কীভাবে পিউর ব্যাটসম্যানদের টেক্কা দিয়ে অন্যতম সেরা পারফরম্যান্সের রেকর্ড টেস্ট ক্রিকেটে সাকিবের। আজকে তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক একজন বোলার সাকিব কীভাবে পিওর এশিয়ান বোলারদের টেক্কা দিয়ে এশিয়ার বাইরে অসাধারণ রেকর্ড গড়েছেন। এশিয়ার বাইরের বড় চার দেশ অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা এশিয়ার ব্যাটসম্যানদের জন্য যেমন চ্যালেঞ্জিং তেমনি এশিয়ান বোলারদের জন্যও চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে স্পিনারদের জন্য সেইসব দ্রুতগতির উইকেট অনেক সময় বধ্যভূমিতে পরিনত হয়। এশিয়ান স্পিনাররা এশিয়ার মাটিতে উইকেট অর্জন করে পাহাড় গড়তে পারলেও এই চার দেশে বরাবরই অসহায় পারফরম্যান্স করে থাকেন, বিশেষ করে স্পিনাররা। তবে এই দিক দিয়ে ব্যতিক্রম কেবল একজনই। তিনি হচ্ছেন সাকিব আল হাসান।
গত এক যুগে, অর্থাৎ ২০০৮ থেকে বর্তমান ২০২০ পর্যন্ত এই দেশগুলোতে এশিয়ান স্পিনারদের মাঝে সবচাইতে সফল স্পিনার অশ্বিন, জাদেজা, ইয়াসির শাহ বা হেরাথরা নয় রেকর্ড অনুযায়ী। এই সময়ে এই দেশগুলোতে ইনিংসে ৫ উইকেট পাওয়ার সংখ্যায় সবচাইতে এগিয়ে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান। ৮ টেস্টে ৩ বার পাচ উইকেট রয়েছে ইনিংসে সাকিবের। দুইবার দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ও একবার ইংল্যান্ডের মাটিতে।
অন্য দিকে এশিয়ায় প্রচুর উইকেট পাওয়া ইয়াসির শাহ বা অশ্বিন, জাদেজার রেকর্ড সাকিবের তুলনায় অনেক খারাপ। এই চার দেশে ১৭ টেস্ট খেলে একবারও ৫ উইকেট পাননি অশ্বিন, জাদেজা ১১ টেস্ট খেলে ১ বার দেখা পেয়েছেন ইনিংসে ৫ উইকেটের।
ইয়াসির শাহ ১২ টেস্ট খেলে ২ বার দেখা পেয়েছেন ইনিংসে ৫ উইকেটের। অর্থাৎ জাদেজা, ইয়াসির ও অশ্বিন এই ৩ তারকা স্পিনার জন মোট ৪০ টেস্ট খেলে ৩ বার ইনিংসে ৫ উইকেটের দেখা পেয়েছেন, অন্য দিকে সাকিব একা মাত্র ৮ টেস্ট খেলে ৩ বার ৫ উইকেট পেয়েছেন। তিনজনের সমান ইনিংসে ৫ উইকেট একজন অলরাউন্ডার সাকিবের একাই। এইখানে অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন সাকিব বাংলাদেশের হয়ে বল বেশি করে তাই সে উইকেট বেশি পায়। তবে পরিসংখ্যান তা বলছেনা। গত ১২ বছরে এই সকল দেশে কমপক্ষে ১০ উইকেট পাওয়া স্পিন বোলারদের মাঝে সাকিবের বোলিং স্ট্রাইকরেট সবচাইতে সেরা। সাকিবের স্ট্রাইকরেট মাত্র ৫৮। জাদেজার ৮৬, অশ্বিনের ৮৮ ও ইয়াসির শাহের ৯৬। স্ট্রাইকরেট ছাড়াও বোলিং এভারেজ দেখলেও সাকিবই সেরা। এই দেশগুলোতে কমপক্ষে ১০ উইকেট পাওয়া স্পিন বোলারদের মাঝে সাকিবের বোলিং এভারেজ এই সময়ে ৩১, জাদেজার ৩৯, অশ্বিনের ৪২ ও ইয়াসির শাহের ৬৩। তবে সাকিবের ভাগ্য খারাপ বলতেই হয়। এত বছর হয়ে যাওয়ার পরও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট খেলার সুযোগ হয়নি তার। ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকায় ৫ উইকেট আছে ইনিংসে। নিউজিল্যান্ডে ৪ উইকেট আছে, অল্পের জন্য ৫ উইকেট পাওয়া মিস করেন, ইনজুরির কারনে গত সিরিজ খেলতে পারেননি। নাহলে সেখানেই সুযোগ থাকতো নিউজিল্যান্ডেও ৫ উইকেট পাওয়ার। তবে ৫ উইকেট না পেলেও নিউজিল্যান্ডে তার পারফরম্যান্স যথেষ্ট ভালো। আক্ষেপ হয়তো একটাই থাকবে, অবসরের আগে অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট খেলতে না পারা।