শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:০০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ধনবাড়ীতে আধুনিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে শুরু প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী রৌমারীতে বড়াইবাড়ী সীমান্ত যুদ্ধ দিবস পালিত মাধবদীতে জ্যান্ত কই মাছ গলায় ঢুকে কৃষকের মৃত্যু বদলগাছীতে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী কালীগঞ্জে কৃষক মাঠ দিবস ও কারিগরি আলোচনা লতিফ মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন নড়াইলের কালিয়া উপজেলার শ্রীনগর গ্রামে ভ্যানচালককে পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন বরিশালে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী মেলার উদ্বোধন হাতিয়ায় দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার ক্যাম্পাসে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান বেলায়েত স্মৃতি কর্ণার ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আমিরুল ইসলামের পক্ষে ছাত্রলীগের গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ

বাংলাদেশকে চিঠি দিয়েছে মিয়ানমার

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

বাংলাদেশকে চিঠি পাঠিয়েছে মিয়ানমারের নতুন সরকার। মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের কেন দরকার পড়লো সেটির ব্যাখ্যা দিয়েছে তারা বাংলাদেশকে। গতকাল শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিয়ানমার সরকার আমাদের রাষ্ট্রদূতকে একটি চিঠি দিয়েছে। সেখানে তারা বলেছে কী কারণে তারা ক্ষমতা দখল করেছে। তারা বলেছে, এক কোটির বেশি ভুয়া ভোট হয়েছে। এই ভুয়া ভোটের কারণে তাদের একটি দায়িত্ব চলে এসেছে।’ এই নতুন সরকারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর এসেছে যে মিলিটারি কমান্ডাররা রাখাইনে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে গিয়েছিলেন এবং তাদের সঙ্গে আলাপ করেছেন। রোহিঙ্গারা তাদের অভিযোগের কথা বলেছে যে তারা চলাফেরা করতে পারে না। আর্মি সরকার বলছে, আমরা তোমাদের অবস্থার পরিবর্তন করবো, ধাপে ধাপে অবস্থার পরিবর্তন করবো। এগুলো শুনে কুতুপালং ক্যাম্পে খুব উৎসাহ হচ্ছে। তারা খুশি যে আর্মিরা তাদের অভয় দিচ্ছে।’
রাখাইনে সেনাবাহিনীর ভাবভঙ্গির ওপর নজর রাখছে বাংলাদেশ: সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে মাতৃভূমিতে বসবাসরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি দেশটির সেনাবাহিনীর ভাবভঙ্গির ওপর বাংলাদেশ সতর্ক দৃষ্টি রাখছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। বাসস
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের প্রতি একটি আপসমূলক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে বলে রিপোর্ট পাওয়ার প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। আঞ্চলিক সামরিক কমান্ডাররা শুক্রবার রাখাইনে পরপর তৃতীয় দিনের মতো মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের আবাসস্থল পরিদর্শন করেছে- এমন খবরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি ইতিবাচক। প্রতিবেদন থেকে মনে হয়, ২০১৭ সালের নির্মম সেনা অভিযানের ফলে দশ লাখ লোক বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়ার পর নতুন করে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের কারণে রাখাইনে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মধ্যে সৃষ্ট বর্ধমান উদ্বেগকে সামরিক কমান্ডাররা দৃশ্যত অপনোদন করার প্রচেষ্টা চালায়। সেই সময়কার পরিস্থিতি বাংলাদেশকে বাস্তুচ্যুত এসব মানুষকে কক্সবাজারের সীমান্তবর্তী স্থানে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিতে বাধ্য করে। তবে বাংলাদেশ একইসঙ্গে তাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্যও মরিয়া হয়ে প্রচেষ্টা চালিয়েছে।
ড. মোমেন বলেন, ঢাকা যথাসময়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে নতুন মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরমধ্যে চীন একটি ত্রিপক্ষীয় আলোচনার মধ্যস্থতাকারী হতে হাত বাড়িয়েছিল। মিয়ানমারের সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানের কারণে ৪ ফেব্রুয়ারি ত্রিপক্ষীয় কার্যনির্বাহী গ্রুপের সভাটি স্থগিত হয়ে যায়। ঢাকা নেপিদোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। তবে তারা ১৯ জানুয়ারি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সচিব পর্যায়ের সর্বশেষ ত্রিপক্ষীয় আলোচনার সময় তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছিল।
কক্সবাজারের ত্রাণ কর্মকর্তা ও রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তারা সীমান্তের ওপারে তাদের পরিচিতজনদের কাছ থেকে খবর পেয়েছেন যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ডাররা ২০১২ সালে রোহিঙ্গা বিরোধী সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর বুধবার রাখাইনে ১৯টি বিচ্ছিন্ন আইডিপি ক্যাম্পের একটি সিত্তেউয়ের অং মিংলার কোয়ার্টার পরিদর্শন করেন। এটিকে অনেকে একটি সমঝোতামূলক মনোভাব হিসেবে দেখছেন।
তারা বলেন, সামরিক কমান্ডাররা গতকাল (বৃহস্পতিবার) দু’টি মসজিদ- হাজী আলী মসজিদ ও শাহ সুজা মসজিদ, পরিদর্শন করে এবং আজ রোহিঙ্গা বাড়িঘর ঘুরে দেখে এবং কারফিউর সময় বাড়ির ভেতরে থাকতে বলে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, রাখাইনের একজন আঞ্চলিক সেনা কমান্ডার সামরিক বাহিনী ধাপে ধাপে রোহিঙ্গাদের সমস্ত সমস্যা সমাধান করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয় এবং ২০১৯ সালে তাদের ওপর যা ঘটেছে তার জন্য ক্ষমতাচ্যুত অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন এনএলডি সরকারকে দায়ী করে। মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তারা রাখাইনে রোহিঙ্গাদের চলাফেরার ওপর বিদ্যমান বিধিনিষেধ খুব শিগগিরই শিথিল করা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
ঢাকার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কূটনৈতিক ও অন্যান্য চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের সংগ্রহ করা তথ্য সীমান্তের ওপার থেকে আসা প্রতিবেদনের সত্যতা প্রতিপন্ন করে। মিয়ানমারের নতুন সামরিক প্রশাসন দেশটির সর্বশেষ সাধারণ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলকে সাংবিধানিক দায়িত্ব হিসাবে এটির ন্যায্যতা প্রমাণের প্রয়াসে বাংলাদেশ দূতাবাসসহ নেপিদোতে সমস্ত বিদেশি মিশনে চিঠি দিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের নতুন সামরিক শাসন আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়ছে, এমন একটি পরিস্থিতি বিশেষত পশ্চিমা বিশ্বের চাপ কমাতে তাদের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।
ড. মোমেন বলেন, এই ধরনের প্রচার কার্যক্রমকে রাখাইন রাজ্যে ধীরে ধীরে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে সামরিক জান্তার সদিচ্ছা হিসাবে দেখা যেতে পারে। তবে তিনি বলেন, এই ধরনের ভাবভঙ্গি রোহিঙ্গাদের প্রতি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নমনীয় মনোভাবের পরিচায়ক কি না- তা বলার সময় এখনো আসেনি। কিন্তু এটি পরবর্তী সময়ে আপস-মীমাংসার জন্য তাদের মধ্যে আস্থা তৈরির জন্য করা হয়ে থাকতে পারে।
বাংলাদেশ যখন প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার নিরাপদে প্রত্যাবাসনের জন্য মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল তখন হঠাৎ করে এ পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। মিয়ানমারে অবস্থানরত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বাকি অংশের উপর সামরিক অভ্যুত্থানের প্রভাব নিয়ে জল্পনা-কল্পনার প্রেক্ষাপটে নতুন করে আরও রোহিঙ্গার আগমন রোধে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা নজরদারি জোরালো করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী যদি উত্তর ও মধ্য রাখাইনের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে এটি কক্সবাজার শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে ইতিবাচক বার্তা পাঠাবে এবং তাদের স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের পথ সুগম করবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com