পার্বতীপুর রেল জংশন স্টেশনের অদুরে রকেট মেইল ও কাঞ্চন ট্রেন মুখোমুখী সংঘর্ষের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ায় দু’টি ট্রেনের প্রায় দেড় হাজার যাত্রী হতাহতের হাত থেকে রক্ষা পায়। দায়ী কে ? সুইচ কেবিন মাস্টার নাকি ট্রেনের চালক ? জানা গেছে গতকাল রবিবার সকালে পার্বতীপুর রেল স্টেশন থেকে পঞ্চগড়গামী কাঞ্চন এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার সময় সৈয়দপুর থেকে আসা খুলনাগামী রকেট মেইল ট্রেনটি পার্বতীপুরে দ্রুত বেগে প্রবেশ করতে থাকে। এসময় অজ্ঞাত কারনে (লেভেল ক্রসিং গেট সংলগ্ন স্থানে) পঞ্চগড়গামী কাঞ্চন এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয় নাকি কাঞ্চন এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাইনচ্যুত করা হয়েছে এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের। পার্বতীপুর রেল স্টেশনের সুইচ কেবিনে কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কাঞ্চন এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক সিগন্যাল না পেয়ে ট্রেন নিয়ে গেলে এ ঘটনা ঘটে। কাঞ্চন এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক আব্দুল্লাহেল বারী জানান ট্রেন ছাড়ার সিগ্যানাল ক্লিয়ার ছিল। এদিকে, এর আগে একাধিকবার এরকম ঘটনা ঘটলেও কর্তব্যরত সুইচ কেবিন মাস্টার বারবার ট্রেন চালকের দোষ দিয়ে আসছেন। অনেকেই মনে করছেন যত দোষ, নন্দ ঘোষের মত দোষ চালকের! অপরদিকে একই সময়ে আসা রংপুর থেকে বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনের ড্রাইভার আঃ ছাত্তার জানান তিনি ডেঞ্জার সিগন্যাল পেয়ে ধীরে ধীরে হোম সিগন্যালে এসে ট্রেনটি দাড় করান। পরে শহরে প্রবেশের সড়ক পথ বন্ধ হলে ট্রেনটি রংপুর গেটের বাইরে নিয়ে অবস্থান নেন। এঘটনায় রবিবার দুপুরে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিএস) আনিছুর রহমানকে আহবায়ক করে ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর তিন সদস্যরা হলেন, বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ডিএমই/লালমনিরহাট) রাসেল আলম, বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী (ডিএসপিই) বিমান বিশ^াস ও বিভাগীয় ট্রেন কন্ট্রোলার (ডিইএলএন) আনোয়ার হোসেন। কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এদিকে, পার্বতীপুর থেকে রংপুর-লালমনিরহাট-কুড়িগ্রাম মিটারগেজ সেকশনে আন্তঃনগরসহ সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হওয়ার পর বগিগুলো সরিয়ে নেয়া হয়। সকালে পার্বতীপুর লোকোসেড থেকে রিলিফ ট্রেন (উদ্ধারকারী গাড়ী) এনে দুপুর ১টার দিকে লাইনচ্যুত ইঞ্জিনটি উদ্ধার করে। দুপুর দুই টার দিকে লাইন ক্লিয়ার হওয়ার পর থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে, কমিউটার ৬২ আপ ট্রেন পার্বতীপুর রেল স্টেশন থেকে সকাল ৯টা ১০ মিনিটের পরিবর্তে সাড়ে ৪ ঘন্টা দেরিতে ১টা ৪০ মিনিটে বিরলে উদ্যোশ্যে ছেড়ে যায়। অন্যদিকে, পার্বতীপুর-ঠাকুরগাঁও কাঞ্চন এক্সপ্রেস ট্রেনটি বাতিল করে রেল কর্তৃপক্ষ। লালমনিরহাট থেকে ছেড়ে আসা কমিউটার ৬২ আপ লোকাল ট্রেনটি রংপুর রেলগেটে সাড়ে ৪ ঘন্টা আটকা পড়ে থাকে। পার্বতীপুর স্টেশন মাস্টার জিয়াউল আহসান এ ঘটনায় ৪ সদস্যের কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।