সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামোর নির্মাণ কাজ শতকরা ৯২ ভাগ এবং পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণ কাজের ৮৪ ভাগ শেষ হয়েছে। এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশের যোগাযোগ খাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর সর্বশেষ অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘২০২২ সালের জুনের মধ্যে সম্পূর্ণ অবকাঠামোর কাজ শেষ করে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এটি শুধু সেতু নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহস ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। কেননা মিথ্যা অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক এতে অর্থায়ন বন্ধে করে দেয়। প্রধানমন্ত্রী শত প্রতিকূলতা ও নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও নিজের অর্থায়নে এ সেতু করার সিদ্ধান্ত নেন। এর কারণে কিছু সমস্যা, এমনকি দেশের উন্নয়নমূলক কর্মকা-েও কিছুটা ছন্দপতন হয়। এরপর চীনের যারা কাজ করছিলেন তারা করোনার কারণে দেশে ফিরে গিয়েছিলেন। যদিও পরে ফিরে কোয়ারেন্টিন মেনে তারা কাজে যোগ দেন। স্রোতের কারণে স্প্যান বসানো যাচ্ছিল না। কিন্তু সব বাধা অতিক্রম করে ফুল দিয়ে মালা গাঁথার মতো এ সেতুতে একে একে এখানে ৪১টি স্প্যান বসেছে। এটি আজ দৃশ্যমান। এটি আমাদের অহঙ্কার এবং সক্ষমতার প্রতীকও বটে। এ সেতুকে ঘিরে দেশের আগামী দিনের উন্নয়ন আবর্তিত হবে।’ মন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা বদলে দিচ্ছেন বাংলাদেশ। তার উদাহরণ এখানকার এক্সপ্রেস ওয়ে। এখানে দুই পাশের সংযোগ সড়কের কাজ আগেই শেষ হয়েছে। এ সেতুর পাশেই নির্মাণ করা হচ্ছে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন। টোল প্লাজা কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এ সেতুর নিচে রেল লাইন তৈরির কাজ ৭৮ ভাগ শেষ হয়েছে। চার লেনের সড়কের কাজ শেষ হয়েছে ৬১ ভাগ। স্থাপিত হচ্ছে রোড ও রেল স্ল্যাব।’ তিনি জানান, পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংযোগ রেখে লেবুখালী-কালনা সেতুর কাজ এগিয়ে চলছে। পরিকল্পনায় আনা হয়েছে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল-খুলনা-মঙলা মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ। এর ফলে দক্ষিণের ১৯ জেলার সঙ্গে সংযোগ ছাড়াও মোংলা বন্দর, পায়রা বন্দর, বেনাপোল ও ভোমরা স্থলবন্দর এবং কুয়াকাটাকে ঘিরে গড়ে উঠবে নতুন প্রাণচাঞ্চল্য। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার আর নতুন কোনও স্বপ্ন নেই। শেখ হাসিনার স্বপ্নের সঙ্গে নিজের স্বপ্ন মিশিয়ে দিয়েছি। তিনি যেসব উন্নয়ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে চাই। ব্যক্তিগতভাবে আমার প্রথম চ্যালেঞ্জ- সড়ক ও পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। দ্বিতীয়ত, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের পথযাত্রায় ভিশন-২০২১, ভিশন-২০৪১ ও ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে উপযুক্ত শক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগকে সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত করা।’