প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠক
পায়রা সমুদ্র বন্দরের টোটাল ওয়ার্কপ্ল্যান তৈরী করে আগামী একনেক সভায় উপস্থাপন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ দেশের বড় সড়কগুলোতে টোল আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিনা পয়সায় সেবার দিন শেষ। গতকাল মঙ্গলবার শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এই সব নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা গণভবণ থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভাশেষে অনুষ্ঠানিক ব্রিফিংএ সাংবাদিকের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ও অনুশাসন তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। মন্ত্রী বলেন, সভায় নতুন ও সংশোধিত মিলে মোট ৯টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। বর্ধিত ব্যয়সহ এই ৯ প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হবে ১৯ হাজার ৮৪৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। যার মধ্যে সরকারী অর্থায়ন ৬ হাজার ৫৯৯ কোটি ৮৮লাখ টাকা এবং বিদেশী ঋণ ১৩ হাজার ২৪৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর প্রকল্প অনুমোদনকালে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, তার (প্রধানমন্ত্রী) ধারণা-বিনা পয়সায় সেবার দিন শেষ। আমাদের এমন মনোভাব, সবকিছুর সেবা চাই, কিন্তু পয়সা দিতে রাজি না। বিশেষ করে যাদের পকেটে পয়সা আছে, তারা দেয় না। এটা আমাদের কালচার। এ থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। প্রধানমন্ত্রী চান-বড় সড়ক যেগুলো নির্মাণ করা হয়েছে, এগুলোতে টোল আদায় করা হবে।
সরকার প্রধানের বক্তব্য তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ঢাকা-সিলেটে যে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে, সেটা নিয়ে আজ আলোচনা হয়েছে।
এগুলো থেকে আমরা টোল আদায় করব। এ ব্যাপারে আজ আবার তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন। মন্ত্রী জানান প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই টোল আদায় করে শুধু সরকারের রাজস্ব আদায়ের জন্য নয়, ইয়ারমার্ক একটা অ্যাকাাউন্ট থাকে। যাতে ওই সড়কগুলোর মেরামতে এই টাকা ব্যয় করা যায়।
এমএ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই যে সড়ক বানাচ্ছি, যাওয়ার পথে যেন বিশ্রামের জায়গা থাকে। কফি খাওয়ার জায়গা থাকে। একটু বসে হালকা হওয়ার জায়গা থাকে। একটা সুন্দর ওয়াশরুম থাকে। নারীদের চেঞ্জিং রুম ও বসার জায়গা যেন থাকে। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক বা ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে এগুলো করতেই হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অপর এক প্রকল্পের অনুমোদন দিতে গিয়ে প্রধামন্ত্রী বলেছেন, হালদা নদীতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে সতর্ক হতে হবে। যেন মা মাছের কোনো ক্ষতি না হয়। এ বিষয়ে মৎস্যবিজ্ঞানীদের সাথে কাজ করতে হবে। বৈঠকে নদীগুলোতে ড্রেজিং করতে হলে কাজ শুরু হওয়ার পর শেষ না হওয়া পর্যন্ত যেন কাজ বন্ধ না হয়, সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, মাঝ পথে কাজ বাকি রেখে চলে যাওয়া যাবে না। পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি সোমবারের মন্ত্রিসভার বৈঠক ও মঙ্গলবারের একনেক বৈঠকের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। তবে মন্ত্রিসভার বৈঠকের চেয়ে একনেক বৈঠকের জন্যই বেশি অপেক্ষা করেন। কেননা, এই বৈঠক থেকেই দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই বৈঠকেই বাংলাদেশের উন্নয়নসহ আশা-আকাক্সক্ষা সবকিছুই নির্ভর করে। প্রকল্পে পরামর্শক খাতে বিরাট অর্থ খরচ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ঋণের শর্ত হিসেবে এসব মানতে হবে। আমাদের সক্ষমতা আগের তুলনায় বেড়েছে। কিন্তু আমাদের টাকার সংকট এখনো আছে। কম সুদে ঋণ পেতে হলে ঋণ দাতার কিছু শর্ত মানতেই হবে।