সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে মিয়ানমারে বিক্ষোভ চলছেই। বৃহস্পতিবার ইয়াঙ্গুনের শহরতলির ব্যস্ত সংযোগ সড়ক থেকে শুরু থেকে পুরনো রাজধানী বাগান সবখানে সব শ্রেণী পেশার হাজার হাজার মানুষ নেমে এসে সেনা শাসনের প্রতিবাদ জানিয়েছে। প্রতিদিনকার এই বিক্ষোভ ও ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে বহু সরকারি দফতর। সেনা শাসকদের হুমকি সত্ত্বেও বিক্ষোভ প্রশমিত হওয়ার কোনও ইঙ্গিতই পাওয়া যাচ্ছে না। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটিতে নতুন নির্বাচন আয়োজনে প্রতিশ্রুতি দিলেও তা উপেক্ষা করে রাস্তায় নামছে মানুষ। বিক্ষোভকারীরা সামরিক জান্তার আশ্বাসের ব্যাপারে ব্যাপক সন্দিহান। দেশটির সামরিক বাহিনীর ভাষ্য, গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতে জনগণের সমর্থন আছে। তবে সেই ভাষ্যকে মিথ্যে প্রমাণ করে বুধবারও বড় ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিতে ইয়াঙ্গুনে জড়ো হয়েছেন অভ্যুত্থানবিরোধী কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনের কেন্দ্রস্থলে সুলে প্যাগোডার সামনে সমবেত হয় বিপুল সংখ্যক মানুষ। এছাড়া প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছের একটি সড়ক সংযোগেও বড় জমায়েত দেখা যায়। মূলত শান্তিপূর্ণ এই বিক্ষোভ ও নাগরিক অসহযোগ আন্দোলনের কারণে আক্রান্ত হচ্ছে বেশিরভাগ সরকারি বাণিজ্য।
সেনা শাসনের প্রতিবাদ জানাতে ইয়াঙ্গুনের বহু গাড়ি চালক খুব ধীর গতিতে গাড়ি চালাচ্ছেন। এভাবে প্রতিবাদ করা কো সোয়ে মিন বলেন, আমি স্বৈরশাসনের মধ্যে জেগে উঠতে চাই না। বাকি জীবন আমরা ভয়ের মধ্যে পার করে দেবো না। সরকারি কর্মকর্তারা দেরি করে কাজে গেলে কিংবা একেবারেই না গেলেই আমি খুশি হবো।’ এছাড়া দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় এবং পুরনো রাজধানী বাগানেও রং বেরংয়ের ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ করে সেনা শাসনের প্রতিবাদ জানাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। নাগরিক অসহযোগ আন্দোলন বন্ধ করাকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে দেশটির সামরিক সরকার। সরকারি চাকরিজীবীদের অসহযোগ আন্দোলনে উৎসাহিত করায় বুধবার রাতে ছয় সেলিব্রেটির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে জান্তা সরকার। এসব অভিযোগে তাদের দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।