রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বিগত বছরগুলোতে সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ কম থাকলেও এখন সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়ছেন চাষিরা। সরিষা চাষে সরকারি প্রণোদনাসহ নানা রকম সহযোগিতার কারণে চলতি রবি মৌসুমে গত বছরের তুলনায় ১৫ হেক্টর বেশি জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। ভালো দামের আশায় সরিষা ক্ষেত পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তিস্তাপাড়ের চাষিরা। নদীর বুকে জেগে ওঠা বালুচরের কোলঘেঁষা মেঠোপথ আর চরাঞ্চলের কৃষিতে দোল খাচ্ছে সরিষা। সবুজের আগায় ভরা সরিষা ফুলে ঘুরপাক খাচ্ছে মৌমাছি। দেখে মনে হয় বসন্তের হিমেল বাতাস আর মিষ্টি রোদে হাসছে কৃষকের স্বপ্ন। সরিষার বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি। তিস্তার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় এ বছর সরিষার চাষ হয়েছে বেশি। উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের মাদ্রাসা পাড়া এলাকার কৃষক আব্দুল গফুর বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার আমার ১০০ শতাংশ জমিতে সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। এক সপ্তাহ পরই এ ফসল ঘরে উঠবে। গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় এবারও সরিষার আবাদ করেছি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বীজ সার সহ সকল ধরনের সুবিধা পাচ্ছি। গজঘণ্টা ইউনিয়নের কিসামত হাবু গ্রামের আব্দুল মতিন বলেন, এ বছর ৬৬ শতক জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। গত বছরের চেয়ে জমি বেড়েছে। আবাদও ভালো হয়েছে। গত বছর ২২ শতক জমিতে সরিষা চাষ করে যা লাভ হয়েছিল, এবার ফলন ভালো হওয়ায় তার কয়েকগুণ বাড়তে পারে। সব কৃষকের চোখে ভালো দামে সরিষা বিক্রির আশা। এক মাস পর সরিষা ঘরে তোলার সময় ন্যায্যমূল্য দাম পেলে আগামীতে গঙ্গাচড়া উপজেলায় সরিষার চাষাবাদ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন কৃষকরা। তারা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলন ভালো হয়। ন্যায্যমূল্য পেলে আমাদের মুনাফা হয়। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সরিষা চাষে সরকারি প্রণোদনার আওতায় কৃষকদের বিনামূল্যে সরিষা বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত বছরের তুলনায় এবার গঙ্গাচড়া উপজেলায় সরিষার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বছর ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ১৫ হেক্টর বেশি। গঙ্গাচড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, এ বছর সরিষা চাষে কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়ার কারণে আবাদ কিছুটা বেড়েছে। অন্য ফসলের চেয়ে সরিষা উৎপাদনে খরচ অনেক কম। লাভ বেশি হওয়ায় সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। এ কারণে দিন দিন সরিষা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা।