সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:২১ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
পুঁইশাক চাষে সফল সুফিয়া, আগ্রহী হচ্ছে অন্য কৃষকরাও অতিরিক্ত টোল আদায় করলেই ইজারা বাতিল-ভোলায় উপদেষ্টা সাখাওয়াত কৃতি ফিরোজীকে বাঁচাতে সাভারে চ্যারিটি কনসার্ট আওয়ামী লীগের সাথে দ্বন্দ্ব নাই, যারা অন্যায় করেছে তাদের বিচার চাই-আব্দুল আউয়াল মিন্টু জলঢাকায় গণঅধিকার পরিষদের গণসমাবেশ সোনারগাঁওয়ে মাসব্যাপি লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব শুরু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানে ৮৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আগৈলঝাড়া বিএনপি’র উদ্যোগে আনন্দ র‌্যালি পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্তুদের অবস্থান কর্মসূচি জামালপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজনে দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ ভুট্টা চাষে দেশের শীর্ষে চুয়াডাঙ্গা: ৫৯,৬৫৬ হেক্টর জমিতে আবাদ

মুচকি হাসি মুমিনের ভূষণ

তোফায়েল আহমেদ রামীম:
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

ইসলামের দৃষ্টিতে মুচকি হাসির গুরুত্ব অপরসীম, মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে হাসি এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

হাসি মানব চরিত্রের একটি বৈশিষ্ট্য, মানুষের অন্তরের অভ্যন্তরীণ উৎফুল্লতা প্রকাশ করার একটি মাধ্যম, হাসি সৌন্দর্যের প্রতীকও বটে। কখনো কখনো হাসি ভুলিয়ে দেয় আমাদের মনের সব যাতনা, যারা হাসতে জানে তাদের সবাই ভালোবাসে। হাসির দ্বারা পরস্পরের মধ্যে খুব সহজে আন্তরিকতা ও বন্ধুত্বের বীজ বপন হয়, একটুখানি হাসির পরশে শত্রুও বন্ধুত্বে রূপ নেয়। নিজের মুখের হাসি অন্যের জন্যও আনন্দ বয়ে আনে, হাসি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষের দুঃখের বোঝা হালকা করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। কারণ হাসি মানুষের হৃদয়ের চাপা ব্যথা দূরীভূত করে, জীবন চলার পথে, কাজে কর্মে বহু মানুষের সাথে আমাদের সাক্ষাৎ হয়, তখন মুখ মলিন না রেখে হাসিমুখে তাদের সাথে কথা বলাই উত্তম। সিগমুন্ড ফ্রয়েড বলেন, হাসি আমাদের মনের উদ্বেগ দূর করে, রাগ আর দুঃখ দূর করে, তাই হাসির গুরুত্ব অনেক। প্রকারভেদে হাসির বহুমাত্রিক উপকারিতা রয়েছে। যেমন- হাসি মানসিক চাপ দূর করে, ব্যথা জ্বালা কমায়, রোগ প্রতিরোধ করে, চিন্তাভাবনা সতেজ ও শাণিত করে। সম্পর্কের বিকাশ ও উন্নতি করে, আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে ইতিবাচক ভাবনা শেখায়। নরওয়েতে এক গবেষণায় দেখা গেছে, হাসি মানুষকে দীর্ঘায়ুও করে। রাসূল সা:-এর অনুপম আদর্শের মধ্যে অন্যতম একটি মহৎ আদর্শ হলো তিনি হাজার দুঃখের মধ্যেও মুচকি হাসতেন। অট্টহাসি কখনো দিতেন না, অট্টহাসি অভদ্রতা ও অহঙ্কারের পরিচায়ক। আর মুচকি হাসি রাসূল সা:এর সুন্নাত। মুচকি হাসি মুমিন বান্দার সৌন্দর্য প্রদর্শন করে।
সাধারণত হাসি তিন প্রকার-
এক. তাবাসসুম- মৃদু বা মুচকি হাসি, এ হাসিতে দাঁতও দেখা যায় না, শব্দও হয় না। নবী সা: সর্বদা মুচকি হাসি হাসতেন, এ হাসিই উম্মতের জন্য সুন্নাত।
দুই. দিহক- এ হাসিতে দাঁত দেখা যায় কিন্তু শব্দ হয় না, এভাবে হাসা জায়েজ আছে তবে না হাসাই উত্তম। তিন.কহকহা- এ হাসি হলো অট্টহাসি, এটি নির্লজ্জ লোকদের হাসি এবং এতে চেহারার আকৃতি পরিবর্তন ঘটে। তাই ইসলামে অট্টহাসি নিষেধ করা হয়েছে। কারণ এতে অন্তর মরে যায়। এ ছাড়াও নামাজে উচ্চস্বরে হাসলে অজু ও নামাজ উভয় নষ্ট হয়ে যায়। প্রিয় নবী সা: সর্বদা হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন, তাকে কখনোই কেই অকারণে মুখ মলিন করে থাকতে দেখেননি। হাসি সম্পর্কে রাসূল সা:-এর কয়েকটি হাদিস নিচে উল্লেখ করা হলো। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে হারিস রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এমন কাউকেই দেখিনি যিনি রাসূল সা:-এর থেকে অধিক হাসি মুখে থাকতেন। (তিরমিজি) হজরত আবু জর রা: থেকে বর্ণিত, রাসূল সা: বলেছেন, তোমার ভাইয়ের প্রতি তোমার হাসিও তোমার জন্য সদকা। (তিরমিজি) রাসূল সা: বলেন, প্রতিটি ভালো কাজ সদকা, আর গুরুত্বপূর্ণ একটি ভালো কাজ হলো অন্য ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা। (তিরমিজি : ১৯৭০)
উপরের হাদিস পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় যে, হাসির দ্বারা আল্লাহ ও রাসূল সা:-এর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। মুচকি হাসির মাধ্যমেই আমাদের মধ্যে গড়ে ওঠা হিংসার দেয়ালের পতন ঘটে এবং আমরা একে অন্যের কাছাকাছি আসতে পারি। আমাদের প্রিয় নবী সা: সবসময় মুচকি হাসতেন, মুচকি হাসি ছিল তার চিরাচরিত ভূষণ। প্রতিটি হাদিসগ্রন্থে তাঁর হাসির ব্যাপারে আলোচনা এসেছে। বস্তুত হাসির মতো সাধারণ একটি আমলে আল্লাহ তায়ালা এত বড় পুরস্কার দেবেন, ভাবতেই অবাক লাগে। হাসি মুখে কথা বলার দ্বারা মুমিন বান্দা খুশি হয়, সাথে আল্লাহও খুশি হন, এর বিনিময়ে আল্লাহ বান্দাকে কিয়ামতের দিন আনন্দিত ও খুশি করবেন।
তাই আসুন আমরা মুচকি হাসির অভ্যাস গড়ে তুলি, রাসূল সা:-এর সুন্নাতকে সমাজে সমুন্নত রাখি।
লেখক : ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা কলেজ, ঢাকা।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com