সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন

কোটালীপাড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধার আত্মহত্যার হুমকি

মিজানুর রহমানর বুলু কোটালীপাড়া ( গোপালগঞ্জ) :
  • আপডেট সময় বুধবার, ৩ মার্চ, ২০২১

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি কর্তৃক দ্বিধাবিভক্ত সিন্ধান্তর তালিকায় নিজের নাম দেখে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব হোসেন হাওলাদার। এই তালিকায় নাম থাকাটা তার জন্য লজ্জা ও অপমানজনক বলে জানিয়েছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। দ্রুত সময়ের মধ্যে তার বিষয়ে সিন্ধান্ত গ্রহণ করা না হলে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিবেন বলে স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের জানিয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব হোসেন হাওলাদার উপজেলার পূর্ণবতী গ্রামের মৃত ছবেদালী হাওলাদারের ছেলে। তাহার গেজেট নং- ১৭৬৫। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, এ উপজেলায় ৬৮২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা গ্রহণ করছেন। এই ৬৮২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে থেকে ৩৩৬ জনের যাচাই বাচাই তালিকায় নাম আসে। এই ৩৩৬ বীর মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ২৬৩ জনের যাচাই বাচাই করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কমিটি কর্তৃক ২৬জন নামঞ্জুর, ১১৮জন দ্বিধাবিভক্ত ও ১১৯জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহিত সিন্ধান্ত তালিকায় রাখা হয়। ৭৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ে অনুপস্থিত থাকায় কমিটি তাদের বিষয়ে কোন সিন্ধান্ত গ্রহণ করেনি। ৪ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটিতে সভাপতি হিসেবে ছিলেন জামুকার প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ লুৎফর রহমান। সদস্য সচিব হিসেবে ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাহফুজুর রহমান। স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক সরদার ও জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়াবুর রহমান সরদার। নামঞ্জুর ও দ্বিধাবিভক্ত তালিকায় থাকা অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানেরা কমিটির বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ এনে যাচাই বাছাই প্রক্রিয়ায় অসস্তোষ প্রকাশ করেছেন। কমিটি কর্তৃক দ্বিধাবিভক্ত সিন্ধান্তের তালিকায় নাম থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব হোসেন হাওলাদার বলেন, আমি একজন প্রকৃত মুুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধে গিয়েছিলাম। আমার সমস্ত বৈধ্য কাগজপত্র আছে। ২০০৯ সাল থেকে আমি ভাতা পাচ্ছি। এখন যাচাই বাছাইয়ের নামে আমাদেরকে হয়রাণি করা হচ্ছে। কমিটির ৪ জনই সম্মানিয় ব্যক্তি। আমি কারো নাম বলে কোন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ছোট করতে চাই না। আমার কাছ থেকে যাচাই বাছাইয়ের নাম করে কমিটির এক সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ২লক্ষ ৬০হাজার টাকা নিয়েছে। আমি অনেক কষ্ট করে এই টাকা জোগাড় করেছি। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও কমিটি কর্তৃক আজ দ্বিধাবিভক্ত সিন্ধান্তের তালিকায় আমার নাম। এটা আমার জন্য অত্যন্ত লজ্জা ও দু:খের বিষয়। আমার বিষয়ে যদি কমিটি নতুন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সিন্ধান্ত গ্রহণ না করে তা হলে আমি আত্মহত্যা করবো। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মো: সামচুল হক মিয়ার ছেলে গোপালগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, আমার চাচা বীর বিক্রম হেমায়েত উদ্দিন। আমার পিতা কোটালীপাড়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলে ভোটে নির্বাচিত সাবেক কমান্ডার। সাবেক এই কমান্ডারের নামটি কমিটি কর্তৃক দ্বিধাবিভক্ত সিন্ধান্তের তালিকায় রাখা হয়েছে। আমি মনে করি এটি কোটালীপাড়ার সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি লজ্জার বিষয়। মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের এই নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোটালীপাড়ার এই যাচাই বাছাই কমিটি কোটি টাকার বানিজ্য করেছে। প্রকৃত অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে দ্বিধাবিভক্ত সিন্ধান্তের তালিকায় রেখেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও যাচাই বাচাই কমিটির সদস্য সচিব এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, অর্থ লেনদেন বা বানিজ্যের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে যদি কেহ সুনির্দিষ্ট ভাবে আমার কাছে অভিযোগ দায়ের করে তা হলে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া আমরা যাচাই বাছাইয়ের যে তালিকা জামুকা বা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি তার বিষয়ে নতুন করে কোন নির্দেশনা এলে আমরা সে মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com