নওগাঁর রাণীনগরে চলতি মৌসুমে গমের সবুজ শীষে স্বপ্ন বুনছেন কৃষক। গমের ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় উপজেলার কৃষকরা দিন দিন গম চাষের দিকে ঝুঁকছেন। যার কারণে চলতি রবি মৌসুমে উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে গমের চাষ হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে চলতি মৌসুমে উপজেলায় গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিলো ৫৫০হেক্টর জমি। কিন্তু গম চাষ করা হয়েছে ৭১০হেক্টর জমিতে যা বিগত সময়ের তুলনায় দ্বিগুন। গত বছর বাজারে গমের চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়ায় চলতি মৌসুমে কোন কোন কৃষক কৃষি অফিসের সহযোগিতা নিয়ে ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্বিগুন পরিমাণ জমিতে গমের চাষ করেছেন। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে মিরাট, কাশিমপুর, গোনা ও সদর ইউনিয়নে সব চেয়ে বেশি গম চাষ হয়েছে। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গমের সবুজ শীষের সঙ্গে কৃষকদের স্বপ্ন বাতাসে দোল খাচ্ছে। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় ও বর্তমান আবহাওয়া অব্যাহত থাকলে চলতি মৌসুমে গমের বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামের গম চাষী এসএম লোকমান হোসেনের গমের খেত পরিদর্শন করেছেন কৃষি বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি ড. এসএম হাসানুজ্জামান, ডিটিও ড. রবিআহ নূর আহমেদ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম, উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবিব, শরিফুল ইসলাম প্রমুখ। গমচাষী এসএম লোকমান হোসেন বলেন এক সময় এই এলাকায় কম পরিমাণ জমিতে গম চাষ হতো। ধান চাষে বার বার লোকসান হওয়ার কারণে অনেক কৃষকই এখন উন্নত জাতের অধিক ফলনশীল গম চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এতে করে নিজেদের চাহিদা পূরণ করে বাকিটা বাজারে বিক্রি করে অধিক লাভবান হওয়া যায়। আশা রাখি বিগত সময়ের চেয়ে চলতি মৌসুমে গমের বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন গম অধিক পুষ্টিকর ও শক্তিশালী খাদ্যপণ্য। এক সময় আমাদের দেশে গমের অনেক চাষ হতো কিন্তু ফলন কম হওয়া, ভালো বাজার না থাকা ও দাম ভালো না পাওয়ার কারণে কৃষকরা গম চাষ করা থেকে বিরত ছিলেন। কিন্তু সরকার গম চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। যার কারণে বাজারে গমের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আগ্রহী গম চাষী কৃষকদের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বারি গম-৩০জাতের অধিক ফলনশীল গমের বীজ ও সারসহ অন্যান্য উপকরন বিনামূল্যে প্রদান করছেন। যার কারণে গম চাষে কৃষকদের খরচ অনেকটাই কম হচ্ছে এবং অধিক লাভবান হচ্ছেন। এছাড়াও একই জমিতে প্রতি মৌসুমে একই ফসল চাষ না করে বিভিন্ন রকমের ফসল চাষ করলে সেই জমির উর্বরতা শক্তিও বৃদ্ধি পায়।