ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর প্রায় দশ মাস পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২ থেকে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাশিমপুর কারাগার-২ এর জেল সুপার আব্দুল জলিল। জেল সুপার জানান, আহমেদ কবির কিশোরের জামিনের কাগজ বেলা ১১টায় কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছায়। পরে তা যাচাই-বাছাই শেষে কিশোরকে মুক্তি দেয়া হয়। এসময় কারাফটকে উপস্থিত ছিলেন কিশোরের স্বজনরা।
এর আগে কিশোরের করা আবেদনের শুনানি শেষে বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে জামিনের আদেশ দেন। মুশতাক আহমেদ ও কার্টুনিস্ট আহমেদ কিশোরকে গত বছর মে মাসে গ্রেপ্তার করে র?্যাব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তারাসহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলার আরেক আসামি মুশতাক আহমেদ গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে কারাগারে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
কারাগারে নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগ কিশোরের:
দশ মাস কারাবন্দী থাকার পর বৃহস্পতিবার মুক্তি পেয়েছেন কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর। কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন একটি সংবাদমাধ্যমে।
কিশোর বলেন, ‘মাত্র কারাগার থেকে বের হয়েছি। বড় ভাইয়ের সঙ্গে হাসপাতালে যাব। তবে, হাসপাতালে যাওয়ার আগে আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার সঙ্গে দেখা করে, পরামর্শ করে, তারপর হাসপাতালে যাব।’ হাসপাতালে যাওয়ার কারণ হিসেবে কিশোর বলেন, ‘আমি তো বাসায় যাওয়ার মতো অবস্থায় নেই। গ্রেপ্তারের পর আমাকে নির্যাতন করা হয়েছে। বাম পায়ে এখনো ব্যথা। ভালোমতো হাঁটতে সমস্যা হয়। দাগ রয়ে গেছে। আমার কানে আঘাত করা হয়েছে। এখনো কান থেকে পুঁজ বের হচ্ছে। শুনতে অসুবিধা হয়।’ কিশোর আরো জানান, ‘আমার অল্প ডায়াবেটিস ছিল। কারাগারে অব্যবস্থাপনার মধ্যে থেকে, চিকিৎসা না পেয়ে সুগার লেভেল অনেক বেড়ে গেছে। শরীর অনেক দুর্বল হয়ে গেছে। শারীরিক ও মানসিকভাবে খুব খারাপ অবস্থায় আছি। এখন বড় ভাইয়ের সঙ্গে হাসপাতালে যাচ্ছি।’ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার কিশোর বৃহস্পতিবার দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে মুক্তি পান।