মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪৯ পূর্বাহ্ন

প্রয়াত ডেপুটি স্পিকারের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলে এলাকায় সমালোচনার ঝড়

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১২ মার্চ, ২০২১

জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত আকতার হামিদ সিদ্দিকী নান্নুর বীর মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করা হচ্ছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে তার পক্ষে করা আবেদন নামঞ্জুর করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। আকতার হামিদ সিদ্দিকী নান্নুর পক্ষে তার বড় ছেলে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী জনি আবেদনটি করেছিলেন।
মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, সাবেক এমপি প্রয়াত আকতার হামিদ সিদ্দিকী নান্নুর বীর মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাই-বাছাইয়ের আবেদনটি অধিকতর যাচাই করা হয়। তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর আবেদনটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাচাই-বাছাই কমিটি। এই প্রতিবেদন জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে। জানা গেছে, আকতার হামিদ সিদ্দিকী (১৯৪৭-২০১৭) মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৯১ সাল থেকে শুরু করে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাকে ২০০১ সালে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মনোনীত করা হয়। নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করায় এলাকার মানুষের কাছে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন নেতা ছিলেন। তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সারাদেশের মত গত ৬ ফেব্রুয়ারি মহাদেবপুরেও বেসামরিক গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই করা হয়। এতে ৮২টি আবেদন জমা পড়ে। যাচাই-বাছাই শেষে ৭৫ জনের আবেদন সঠিক পাওয়া যায়। তিনজনের নাম লাল মুক্তিবার্তায় থাকায় যাচাইয়ের প্রয়োজন হয়নি। একজন যাচাইয়ে উপস্থিত হননি। অপর একজনের ব্যাপারে কমিটির সদস্যরা দ্বিধাবিভক্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। বাকি দুইজনের নামে অভিযোগ থাকায় আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। এদের মধ্যে একজন লক্ষ্মণপুর গ্রামের আলতাফ হোসেন ফারুক ও অপরজন উত্তরগ্রামের আকতার হামিদ সিদ্দিকী।
যাচাই-বাছাইয়ে চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে ছিলেন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) চেয়ারম্যান মনোনীত সভাপতি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বাদউজ্জামান বদি, স্থানীয় সংসদ সদস্যের মনোনীত সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম নূরানী আলাল, জেলা প্রশাসকের মনোনীত সদস্য সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মহসীন আলী সরদার ও সদস্য সচিব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মিলন। কমিটির সভাপতি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বাদউজ্জামান বদি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আলতাফ হোসেনের বয়স কম ছিল। আর আকতার হামিদ সিদ্দিকী মুক্তিযোদ্ধা নন বলে ছয়জন মুক্তিযোদ্ধা অভিযোগ উত্থাপন করেন।
কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মহসীন আলী সরদার বলেন, আকতার হামিদ সিদ্দিকী ডেপুটি স্পিকার থাকাকালে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নেন। সেসময় তিনি একটি জনসভায় ‘নওগাঁয় কোনো মুক্তিযুদ্ধ হয়নি’ বলে মন্তব্য করেন। কিন্তু নওগাঁর কয়েকটি উপজেলায় সম্মুখযুদ্ধ হয়। এর প্রতিবাদে তখন এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা একাধিক সমাবেশ করেছেন। যাচাই-বাছাইয়ে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবারও সেই অভিযোগ উত্থাপন করেন। উত্তরগ্রামের গয়েশ আলী সরদারের ব্যাপারে কমিটির সভাপতি বদিউজ্জামান বদি ও সদস্য মহসীন আলী সরদার বলেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন। কিন্তু সদস্য গোলাম নূরানী আলাল বলেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা। ফলে দ্বিধাবিভক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রয়াত আকতার হামিদ সিদ্দিকী নান্নুর ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার বলেন, সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখযোদ্ধা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলের চেষ্টা করছে। একইভাবে সাবেক ডেপুটি স্পিকারের বেলায়ও তাই করা হচ্ছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com