বরিশালের পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় চলতি মৌসুমে তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে। এরই মধ্যে চাষীরা তরমুজ বিক্রি করতে শুরু করেছেন। চাহিদা বেশি থাকায় অনেকে ক্ষেত থেকেই বিক্রি করে দিচ্ছেন পাকা তরমুজ। ফলন ভালো হওয়ায় এবার চাষীরা ন্যায্য দাম পাবেন বলে আশাবাদী। উৎপাদন বেশি হওয়ায় এসব তরমুজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলাতেও পাঠানো হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হওয়ায় করোনা মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারবেন চাষীরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কলাপাড়ায় এ বছর তিন হাজার হেক্টর তরমুজের চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরেই প্রত্যাশিত ফলন পাওয়া গেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার তরমুজের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। মৌসুমের শেষ পর্যন্ত চাষীরা উৎপাদিত তরমুজ থেকে বিপুল পরিমাণ আয় করতে পারবেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে তরমুজের ক্ষেতে কাজ করছেন চাষী ও শ্রমিকরা। কেউ তরমুজ কাটছেন, কেউ স্তূপ করছেন। কেউ আবার বিক্রির উদ্দেশে তরমুজ ট্রলি-ট্রাকে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পাইকারি ক্রেতারা মাঠে এসেই কিনছেন তরমুজ। তারা দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় নিয়ে যাবেন এসব তরমুজ। কেউ কেউ আবার আগাম ক্ষেত কিনে নিতে আসছেন। স্থানীয় তরমুজচাষীরা বলছেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছর প্রতি হেক্টর থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ হবে। আগাম তরমুজ আবাদের মধ্য দিয়ে গত বছরের করোনার ধকল কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। মহামারী চলাকালীন নানা সংকট ও ঋণের বোঝা কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার প্রত্যাশা করছেন কৃষকরা। নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক মো. মনির হাওলাদার বলেন, প্রায় চার মাস আগে ১৫ একর তরমুজ চাষ শুরু করি। ক্ষেতে প্রত্যাশার চেয়ে ভালো ফলন হয়েছে। পুরো ক্ষেতের তরমুজ ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি। কৃষক মো. রাজ্জাক মুসল্লী বলেন, এ বছর আগাম তরমুজ চাষে ভালো ফলন হয়েছে। আড়াই একর তরমুজ চাষ করেছি। এতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় ২ লাখ টাকা। তরমুজ বিক্রি করে আমার প্রায় ৩ লাখ টাকা লাভ হয়েছে।
স্থানীয় বাজারের তরমুজ ব্যবসায়ী মো. কালাম বলেন, গত বছর করোনার প্রভাবে তরমুজ বাজারে বিক্রি করতে পারিনি। এবার তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে। তাছাড়া মহামারী পরিস্থিতি আগের চেয়ে স্বাভাবিক হয়েছে। এখন তরমুজের বাজারদর চড়া। আমরা চাষীদের কাছ থেকে গড়ে প্রতিটি তরমুজ ২০০-২৫০ টাকায় কিনছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মন্নান বলেন, উপজেলায় এ বছর তিন হাজার হেক্টর তরমুজের চাষ হয়েছে। চাষীদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছি আমরা। কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূল্যে তরমুজ বিক্রি করতে পারেন, সেজন্য কৃষকদের পাশে থেকে কৃষি কর্মকর্তারা সহযোগিতা করছেন।