শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১০:২৩ অপরাহ্ন

রমজানের প্রস্তুতি হোক শাবানেই

ইসলাম ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ২০ মার্চ, ২০২১

আরবি ক্যালেন্ডারে এখন শাবান মাস। আসছে রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের মাস রমজানুল মোবারক। শাবান মাসে আমাদের প্রিয় নবী (সা.) রমজানের আগমনের জন্য দিনক্ষণ গণনা করতেন।
আম্মাজান আয়েশা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসূল শাবান মাসের (দিন-তারিখের হিসাবের) প্রতি এত অধিক লক্ষ রাখতেন, যা অন্য মাসের ক্ষেত্রে রাখতেন না। (আবু দাউদ, হাদিস ২৩২৫)।
রমজানের গুরুত্বের জন্য প্রিয় নবী (সা.) উম্মতকে শাবান মাসের হিসাব রাখার জন্য নির্দেশও দিয়েছেন, যেন রমজান আগমনের বিষয়ে সন্দেহে পতিত হতে না হয়। তিনি বলেন, ‘তোমরা রমজানের জন্য শাবানের চাঁদের হিসাব রাখ। (সিলসিলাতুস সহিহাহ, আলবানি, ২/১০৩)।
রমজান মানেই সওয়াবের অনন্ত উৎসধারা। নেক আমলের ভরা বসন্ত। রমজান মুমিনের জন্য পরম সৌভাগ্যের মাস।
এ সৌভাগ্যের মাস যেন কপালে জোটে এ জন্য রাসূল (সা.) উম্মতকে একটি দোয়া শিখিয়ে গেছেন; যা রমজানের দুই মাস আগ থেকেই তথা শাবানের আগের মাস রজব থেকেই করতে হয়।
হজরত আনাস (রা.) বলেন, যখন রজব মাস প্রবেশ করত, তখন রাসূল (সা.) বলতেন, ‘হে আল্লাহ! রজব ও শাবান মাস আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দিন। (তাবারানি, হাদিস ৩৯৩৯; বাইহাকি, হাদিস ৩৫৩৪)।
এ মাসটির জন্য মুমিন হৃদয় থাকে ব্যাকুল। আল্লাহর পিয়ারা রাসূল (সা.) নিজেও অতিশয় আনন্দিত হতেন এবং বিভিন্ন সময়ে রহমত-বরকত ও কল্যাণ বর্ষণ এবং অবতরণের উপলক্ষ ও অনুষঙ্গগুলোর কারণে আনন্দিত হতেন। সাহাবিদের বলতেন, ‘তোমাদের দ্বারে বরকতময় মাস রমজান এসেছে’। (নাসায়ি, হাদিস ২১০৬)।
একটি মাস দিনে সিয়াম আর রাতে কিয়াম পালন করতে হয় মুমিনের। এ মাসের গুরুত্ব আল্লাহর কাছে অনেক অনেক গুণ বেশি। এ জন্য এ মাসটি যেন সুন্দরভাবে ইবাদত পালনে কাটানো যায়, তাই আগ থেকেই প্রস্তুতি নিতে হয়।
প্রিয় নবী (সা.)-এর প্রস্তুতি প্রসঙ্গে আম্মাজান আয়েশা (রা.) বলেন, ‘শাবানের তুলনায় অন্য কোনো মাসে আমি তাঁকে এত অধিক হারে রোজা পালন করতে দেখিনি। তিনি শাবানের প্রায় পুরোটাই রোজায় অতিবাহিত করতেন, তবে (রমজানের প্রস্তুতির জন্য) কিছু দিন বাদ রাখতেন। (মুসলিম, হাদিস ১১৫৬)।
রাসূল (সা.) সাহাবিদের রমজানের পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করার জন্য নানাভাবে উৎসাহ-উদ্দীপনা প্রদান করতেন। তিনি তাদের উৎসাহ দিয়ে বলতেন, রমজান বরকতময় মাস তোমাদের দুয়ারে উপস্থিত হয়েছে। পুরো মাস রোজা পালন আল্লাহ তোমাদের জন্য ফরজ করেছেন।
এ মাসে আল্লাহ কর্তৃক একটি রাত প্রদত্ত হয়েছে, যা হাজার মাস থেকে উত্তম। যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে বঞ্চিত হলো (মহাকল্যাণ থেকে)। (নাসায়ি, হাদিস ২১০৬)।
এ জন্য রমজান আসার আগেই নিজেকে মানসিক, শারীরিক ও সর্বোতভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে। মহামূল্যবান এ মাসকে কীভাবে অধিক ইবাদত বন্দেগিতে কাটানো যায়?
সে প্রস্তুতি এখন থেকেই নেওয়া প্রয়োজন। সেই সঙ্গে রমজানে ইবাদতের সুষ্ঠু পরিবেশ ও রমজানের পবিত্রতা রক্ষা এবং দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার বিষয়ে গণসচেতনতা গড়ে তোলা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।
লেখক : আলেম ও ধর্মীয় নিবন্ধকার




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com