প্রথম ধাপের আগামী পৌর ও ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দল আ.লীগের কেন্দ্রের উল্টো শ্রোতে হাটছে তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা। দলীয় কোন্দলে ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা দলীয় প্রতীক নৌকা। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ৩ ইউনিয়ন ও এক পৌরসভায় অনুষ্ঠিত হবে এ নির্বাচন। এজন্য কেন্দ্রের নির্দেশনাকে অমান্য করে ব্যক্তিস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে নৌকা ডুবাতে এ নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে দাঁড়িয়ে পড়েছে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের অনেক আ.লীগ নেতা। ইতিমধ্যে প্রার্থীদের শোডাউন করাকে কেন্দ্র করে গুলি বর্ষণের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ও ঘটেছে। সুষ্ঠু ও গ্রহণ যোগ্য নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন সাধারণ ভোটাররা। এদিকে বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় স্বতন্ত্রসহ বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে রাখা হয়েছে বৃহৎ সুযোগ। তবে এ সুযোগ আ.লীগের কোন কর্মী বা নেতার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, তাই দলীয় কোন্দলে নৌকা নিয়ে টানাপোড়ন হওয়ায় চলছে বিদ্রোহীরা চষেবেড়াচ্ছে। মাঠে ময়দানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। এমনকি কেউ কাউকে একবিন্দুও ছাড় দিতে নারাজ। সবাই যেন নাছোড় বান্দা। অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার মাতারবাড়ীতে ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হায়দারকে দলীয় মনোনয়ন নৌকা প্রতীক আবার একই ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক না পেয়ে জেলা পরিষদের সদস্য মাস্টার রুহুল আমিন, উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক রুহুল ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি আব্দু সত্তার করছেন নৌকার বিরোধিতায় একপায়ে হারা। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাড়িয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ। জনজরিপে তিনি অনেকটা জনপ্রিয় মনে করছেন ভোটারদের একটি অংশ। হোয়ানক ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাফা কামালকে কেন্দ্র থেকে নৌকার মাঝি করা হলেও একই ইউনিয়নে আ.লীগের সভাপতি মীর কাসেম ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ওয়াজেদ আলী মুরাদ নৌকা ডুবাতে বিরতিহীন কাজ করছেন। পাশাপাশি কুতুবজোম ইউনিয়নেও দেখা গিয়েছে একই চিত্র, ইউনিয়নটিতে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ কামালকে নৌকা দেওয়া হলেও নৌকার বিদ্রোহী হয়ে কাজ করছেন বর্তমান ইউপি সদস্য ও উপজেলা আ.লীগ নেতা খোকা। আবার দলের জন্য অনেকটা ত্যাগ তিতিক্ষা সয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে কিজয় ছিনিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন খোকন। জানাগেছে, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে ততই সব চেয়ে নির্বাচনি আমেজ বয়ে আসছে মাতারবাড়ীতে। হেতু হিসেবে দেখা যায়, বর্তমান সরকারের বৃহৎ মেগা প্রকল্পগুলি মাতারবাড়ীতে চলমান রয়েছে। যার দরূন বর্তমান সরকারের সবসময় নজর ক্ষুদ্রদ্বীপ মাতারবাড়ীর দিকে। এবারের নির্বাচনে বিরোধী দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় অনেক উপজেলা পর্যায়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা জানান, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন দলীয় প্রতীক রাখাটা দলের জন্য ক্ষতিকর। পাশাপাশি দলীয় প্রতীক দিয়ে দলের কিছু কিছু ত্যাগী ও পরিশ্রমী নেতাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। যার কারণে খোদ দলের কর্মীরাই বিদ্রোহী হয়ে কাজ করছে নৌকা ডুবাতে। আবার অনেকে মনে করছেন নৌকার মনোনীত প্রার্থী চেয়ে বিদ্রাহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অনেকটা জনপ্রিয়তার শীর্ষে দেখা গিয়েছে। মহেশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জুলকার নাঈম বলেন, নির্বাচনী এলাকায় কোন প্রার্থী সহিংসতা বা আচরণ বিধি লঙ্ঘন করলে শীঘ্রই প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।