স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের তাৎপর্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখানে কি ভারতের প্রধানমন্ত্রী সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করতে আসছেন। নাকি পশ্চিমবঙ্গে যে নির্বাচন হচ্ছে, সেই নির্বাচনের প্রচারণা করতে আসছেন। পশ্চিমবঙ্গ, ভারতের পত্রিকা ও আমাদের দেশের পত্রিকায় সেই ধরনের ইঙ্গিতই আমরা পাচ্ছি। মূলত তার এই সফরের লক্ষ্য হচ্ছে, সেই সমস্ত মন্দিরগুলো পরিদর্শন করা যেগুলোতে তাদের অনুসারী রয়েছেন। তাদের পশ্চিমবঙ্গে যে ভোট রয়েছেন, তার জন্য তিনি চেষ্টা করছেন। এটা পত্রিকায় লেখা হচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে আহত বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলকে দেখতে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সুবর্ণজয়ন্তীতে বিদেশি মেহমানরা আসছেন, এই কারণ দেখিয়ে আমাদের কর্মসূচিগুলো বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। মানুষের চলাচলে সম্পূর্ণ বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের প্রতিবেশী ৩টি বন্ধু দেশের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি এসে গেছেন।
আগামী ২৬শে মার্চ বন্ধু দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসবেন বলে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা সব সময় দেশি-বিদেশি বন্ধুদের স্বাগত জানাই। সুবর্ণ জয়ন্তীতে আমরা তাদেরকে অবশ্যই স্বাগত জানাবো। কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে সরকার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করছে জনগণকে বাদ দিয়ে। জনগণ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সরকারের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানগুলোতে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনও অবস্থান নেই। এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোর কোনও অবস্থান নেই। শুধুমাত্র বিদেশি মেহমানদের নিয়ে এসে দেখানো হচ্ছে, বলানো হচ্ছে উন্নয়নের লহরী বয়ে যাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ ৫০ বছর হয়েছে, দুর্ভাগ্য হচ্ছে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো হারিয়ে ফেলেছি। মানুষের অধিকারগুলো হারিয়ে ফেলেছি। এখানে সরকার যে পরিস্থিতিতে দেশ পরিচালনা করছেন এটা কোনও মতেই গণতন্ত্রের জন্য সহায়ক নয়। তারা সংবিধানকে সংরক্ষণ করছে না। এমনকি আজকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হচ্ছে। এই বিষয়গুলো আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করছে। আমরা চাই দেশে শান্তি থাকুক ও বিদেশিরা আসুক।
তিনি বলেন, আমরা বরাবরই বলে আসছি, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নত করতে হলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে অভিন্ন নদীগুলো রয়েছে তার হিস্যা মীমাংসা হওয়া উচিত। সীমান্ত হত্যা বন্ধ হওয়া উচিত। এটা অমানবিক, পৃথিবীর কোনও দেশে এটা আছে কিনা জানি না। সরকার বলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের এতো বন্ধুত্ব সম্পর্ক, অথচ এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন না। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কানেক্টিভিটি আমাদের কি লাভ হচ্ছে তা জনগণের কাছে স্পষ্ট হওয়া উচিত বলে দাবি মির্জা ফখরুলের। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে পানির সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। ফেনীর পানিও তারা একতরফাভাবে নিয়ে গেছে। আমরা এখনও প্রত্যাশা করি বাংলাদেশ সরকার আমাদের দাবিগুলোকে সঠিকভাবে ভারতের কাছে উপস্থাপন করে সমাধান করবেন।
করোনা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের (সরকার) নিয়তই ঠিক নেই। তাদের লক্ষ্য প্রত্যকটি বিষয় থেকে দুর্নীতি করা। ভ্যাকসিন নিয়ে অনেক কথা এসেছে, যারা এখন করোনা আক্রান্ত হচ্ছে তারা প্রত্যকে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন। এসময় ঢাকা দক্ষিণ বিএনপি সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাসার, দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক আনন্দ শাহ বাকি বিল্লাহ ও ছাত্রদল নেতা শাকিল চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।