মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪২ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে ২৯ জেলা 

শামছুল আরিফ:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩০ মার্চ, ২০২১

বিশ্বের ৩৩ তম দেশের তালিকায় বাংলাদেশ
দেশে করোনা সংক্রমণের ৩৮৭ তম দিন গত সোমবার। এই সময়ে দেশে নিশ্চিত করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিকে গুরুতর বলে বর্ণনা করেছেন গবেষকেরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ পর্যন্ত দেশে ৬ লাখ ৮৯৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ৮ হাজার ৯৪৯ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৩৮ হাজার ১৮ জন। মহামারির শুরু থেকে বিশ্বের সব দেশ ও অঞ্চলের করোনা সংক্রমণের হালনাগাদ তথ্য সংরক্ষণ করছে ওয়ার্ল্ডোমিটারস নামের একটি ওয়েবসাইট। তাদের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৬ লাখের বেশি, বিশ্বে এমন দেশের সংখ্যা এত দিন ছিল ৩২টি। এরমাধ্যমে বিশ্বের ৩৩ তম দেশ হিসেবে এই তালিকায় যুক্ত হলো বাংলাদেশ।
আইইডিসিআরের পরামর্শক মুশতাক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশে করোনায় সংক্রমিতের সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়িয়েছে মানে হলো, বিরতি ছাড়াই মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা যে গুরুতর জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতির মধ্যে আছি, সেই বার্তাই দিচ্ছে এই সংখ্যা।’

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনার সংক্রমণ শনাক্তের তথ্য জানানো হয়। গত ১৮ জুন দেশে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়ায়। ১৮ জুলাই ছাড়ায় ২ লাখ। শনাক্তের সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়ায় ২৬ আগস্ট। ৪ লাখ ছাড়ায় ২৬ অক্টোবর। ২০ ডিসেম্বর দেশে করোনা সংক্রমণের ২৮৮তম দিনে শনাক্তের সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়ায়। গত সোমবার সংক্রমণের ৩৮৭তম দিনে শনাক্ত ৬ লাখ ছাড়িয়েছে। ১০৩ দিনে প্রথম লাখ শনাক্ত হয়। দ্বিতীয় লাখ শনাক্ত হয় ৩০ দিনে। তৃতীয় লাখ শনাক্ত হয় ৩৯ দিনে। চতুর্থ লাখ শনাক্ত হয় ৬১ দিনে। পঞ্চম লাখ শনাক্ত হয় ৫৫ দিনে। আর ষষ্ঠ লাখ শনাক্ত হয় ৯৯ দিনে।
দেশে করোনার সংক্রমণ প্রবণতা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, শুরুর দিকে সংক্রমণ ধীরগতিতে ছড়িয়েছে। গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ দ্রুত ছড়াতে শুরু করে। জুনে পরিস্থিতি তীব্র আকার ধারণ করে। দেশে করোনার সংক্রমণ চূড়ায় (পিক) উঠেছিল গত বছরের জুন-জুলাই মাসে। সে সময় বিশেষ করে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার রোগী শনাক্ত হয়। আগস্টের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ কমতে দেখা যায়। বেশ কিছু সময় পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু এক মাসের বেশি সময় ধরে দেশে সংক্রমণ আবার ঊর্ধ্বমুখী।
সারাদেশে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বেড়ে গেছে। ১২ দিন আগেও দেশে উচ্চ সংক্রমিত ঝুঁকিপূর্ণ জেলা ছিল ৬টি। কিন্তু এর মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে ২৯টিতে দাঁড়িয়েছে। জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ফেনী, চাঁদপুর, নীলফামারী, সিলেট, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, কুমিল্লা, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, কুড়িগ্রাম, নরসিংদী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, মাদারীপুর, নওগাঁ ও রাজশাহী। গত সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, তারা প্রতি সপ্তাহেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের গতিধারা দেখে উচ্চ সংক্রমিত ঝুঁকিপূর্ণ জেলা চিহ্নিত করেন। গত ১৩ মার্চ তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণকালে তারা উচ্চ সংক্রমিত জেলার সংখ্যা মাত্র ছয়টি পান। পরবর্তীতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ মার্চ এ সংখ্যা বেড়ে ২০টি এবং ২৪ মার্চ বিশ্লেষণে এ সংখ্যা বেড়ে ২৯টিতে দাঁড়ায়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যদি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে চাই, একজনের কাছ থেকে আরেকজনে সংক্রমণ বন্ধ করতে চাই তাহলে প্রত্যেককে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। শুধুমাত্র উচ্চ সংক্রমিত ২৯টি জেলা নয়, আমাদের দেশের সবাইকে সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। শতভাগ মানুষকে মাস্ক পরিধান করা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা ইতোপূর্বে সাবান দিয়ে হাত ধৌত করার যে অভ্যাসটি করেছিলাম, সেটা অনেক ভালো ফলাফল বয়ে এনেছিল। করোনা সংক্রমণ হ্রাসের পাশাপাশি ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যাও কমে গিয়েছিল। সুতরাং হাত ধোয়ার অভ্যাসটিতে আবার ফিরে যেতে হবে এবং যত দূর সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। জীবন ও জীবিকাকে ব্যাহত না করে যত দূর সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’
উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জেলা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণ কেন্দ্রীয়ভাবে নাকি স্থানীয়ভাবে হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. ফ্লোরা বলেন, স্থানীয় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্বাস্থ্যবিভাগ যৌথভাবে স্থানীয় সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্য়ালোচনা করে সম্ভাব্য সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেছেন, দেশের ২৯টি জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বত্র মানুষে মানুষে করোনার সংক্রমণ দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। দেশের শতভাগ মানুষ মাস্ক পরাসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চললে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
গত একদিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ৫ হাজার ১৮১ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা বাংলাদেশে একদিনে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮৯৫ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩০ জন পুরুষ ও ১৫ জন নারী। এ নিয়ে দেশে মোট করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮ হাজার ৯৪৯ জনে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দেশে করোনা আক্রান্তের হার ছিল মাত্র ২ শতাংশের মতো। বর্তমানে তা হয়ে গেছে প্রায় ১৩ শতাংশ। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই মুহূর্তে করোনার উৎপত্তিস্থল বন্ধ করতে না পারলে দেশের অর্থনীতির চাকা থমকে যেতে পারে, মানুষের বড় রকমের আর্থিক সংকট দেখা দিতে পারে।’ করোনাভাইরাস সংক্রমণে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সরকারের ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। এ নির্দেশনা আগামী দুই সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতিপালন করতে হবে। এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দফতর/সংস্থাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।
টিকা পাওয়ার অনিশ্চয়তায় দ্বিতীয় ডোজ নিয়েই শঙ্কা: কেনা তিন কোটি ডোজ টিকার মধ্যে এখন পর্যন্ত ৭০ লাখ ডোজ দেশে এসে পৌঁছেছে। নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এর বাইরেও ৩২ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে দিয়েছে ভারত। গত ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে শুরু হওয়া টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় এরই মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫২ লাখের বেশি মানুষ। আগামী ৭ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ডোজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। তবে চুক্তি অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি ও মার্চে টিকা সরবরাহ করতে পারেনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট। এ দুই মাসে ৮০ লাখ ডোজ টিকা কম সরবরাহ হয়েছে। এতে দেশে চলমান টিকা কার্যক্রমে প্রথম পর্যায়ের দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে টিকা সরবরাহে বৈশ্বিক সংকটের কথা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও)।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারিতে সারা দেশে গণটিকা কর্মসূচি শুরু করে সরকার। গতকাল পর্যন্ত মোট ৫২ লাখ ৬৩ হাজার ২৪৮ জন নারী ও পুরুষ এ টিকা নিয়েছেন। গতকাল রোববার ৫৮ হাজারের কিছু বেশি মানুষ টিকা নিয়েছেন। আগামী ৭ এপ্রিল থেকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ শুরু করার কথা রয়েছে। এ সময় পর্যন্ত ৬০ লাখ মানুষ টিকা নিলে তাদের জন্য দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগের ক্ষেত্রে সংকট দেখা দেবে। বাংলাদেশের হাতে টিকা রয়েছে ৪৯ লাখের কিছু বেশি। গত নভেম্বরে নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ‘কোভিশিল্ড’ টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করে সরকার। টিকার দাম পরিশোধ করা হয় অগ্রিম। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশে আসার কথা। গত জানুয়ারিতে ৫০ লাখ ডোজ টিকা এলেও ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ২০ লাখ ডোজ। চলতি মাসে কেনা টিকার চালান এসে পৌঁছেনি। তবে দুই দফায় বাংলাদেশকে ৩২ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে দিয়েছে ভারত। সম্প্রতি টিকা রফতানিতে স্থগিতাদেশ জারি করেছে দেশটি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে সংখ্যক টিকা রয়েছে, তাতে দ্বিতীয় ডোজ চালানো যাবে। এরপর কোভ্যাক্স থেকে টিকা আসবে। আমাদের কিছু সময় অপেক্ষা করতে হতে পারে। এটা গোটা পৃথিবীর সমস্যা, শুধু আমাদের দেশের নয়।’
এদিকে টিকার সংকটের কারণে বৈশ্বিক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। করোনাভাইরাসের তৃতীয় পর্যায়ের সংক্রমণে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর অবস্থার অবনতি হয়েছে। এ সময়ে ব্রিটিশ-সুইডিশ মালিকানাধীন অ্যাস্ট্রাজেনেকা চুক্তি অনুযায়ী সেসব দেশকে টিকা সরবরাহ করতে পারছে না বলে হতাশা প্রকাশ করেছে ইইউ। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টিকা সরবরাহ করতে না পারলে অন্যান্য দেশে রফতানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ইইউর প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডের লায়েন। সংকটের কারণে ডব্লিউএইচওর তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠা বৈশ্বিক জোট কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিভুক্ত দেশগুলোয় টিকা বিতরণ বিলম্বিত হবে। সেরাম ইনস্টিটিউটের রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে এ পরিস্থিতি হবে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। এপ্রিলে দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ শুরু হলে সে সময়ে নতুন করে প্রথম ডোজ প্রয়োগ ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করেন সরকারের করোনা বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ও ভাইরাস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘যাদের প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে, তাদের দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ শুরু করা যাবে। তবে ওই সময়ে প্রথম ডোজ প্রয়োগ শুরু করাটা কঠিন হয়ে যাবে। ভারত রফতানি বন্ধ করায় টিকা কার্যক্রম একটা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছে। এর ফলে করোনা টিকার জন্য গড়ে ওঠা বৈশ্বিক জোট কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি বাধার মুখে পড়ছে। টিকার ক্ষেত্রে এখন বৈশ্বিক সমস্যা তৈরি হয়েছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, চলতি মাসের শুরুতে সরকার আরো তিন কোটি ডোজ টিকা কিনতে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। করোনার টিকা প্রস্তুতকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। এছাড়া করোনাভাইরাসের টিকার জন্য গড়ে ওঠা বৈশ্বিক জোট কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ টিকা পাবে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ১ কোটি ৯ লাখ ডোজ শিগগিরই পাওয়ার কথা বলছেন কর্মকর্তারা। এছাড়া টিকার জন্য সেরাম বাদে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেনি সরকার। করোনার টিকা বিতরণ ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের টিকার ঘাটতি হবে না, যা আছে তা শেষ করতে আরো সময় লাগবে। এর মধ্যে নতুন করে তিন কোটি টিকা কেনার জন্য কার্যক্রম চলছে। কোভ্যাক্স থেকে টিকা পাওয়া গেলে কোনো সমস্যা হবে না।’
উল্লেখ্য, দেশে বর্তমানে ১ হাজার ৫টি কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এসব কেন্দ্রে মোট ২ হাজার ৪০০টি দল টিকা প্রয়োগের কাজ করছে। প্রতিটি দলে দুজন টিকা প্রয়োগকারী ও চারজন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন। প্রতিটি দল দৈনিক ১৫০ জনের শরীরে টিকা প্রয়োগে সক্ষম বলে জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে হিসেবে দৈনিক সাড়ে তিন লাখের বেশি মানুষের শরীরে টিকা প্রয়োগের সক্ষমতা রয়েছে। শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন বাদে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত টিকাদান কেন্দ্রে টিকা দেয়া হয়।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com