পবিত্র মাহে রমজানকে সামনে রেখে বরগুনার বেতাগীতে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলছে। এতে করে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নিম্ম ও মধ্যম আয়ের মানুষ। এর সঙ্গে করোনা মহামারির প্রভাবে এখানকার জনজীবনে সংকট আগের চেয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় এমন পরিস্থিতিতে তারা আরও চরম বেকায়দায় পড়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাজার সমূহে এরই মধ্যে চাল, ভোজ্যতেল, আটা-ময়দা, চিনি, মুরগি, মাছ-মাংস, সবজিসহ বেশকিছু নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় চাপে পড়েছেন ক্রেতারা। বর্তমানে মোটা চাল কিনতে কেজিতে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা গুনছেন ক্রেতারা, যা গত বছর রমজানে ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। মাঝারি মানের বিআর-২৮ ও পাইজাম চালের দাম ৫২ থেকে ৫৬ টাকা। আর মিনিকেট পাওয়া যাচ্ছে ৬২ থেকে ৬৮ টাকায়। ভোজ্যতেলের দাম সম্প্রতি দুই দফায় বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো। নতুন করে আরও দাম বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব জমা দিয়েছে। ভোজ্যতেলের দাম লিটারে খোলা সয়াবিন ২ থেকে ৭ টাকা ও পাম সুপার ৩ থেকে ৬ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। আর টিসিবিতে বর্তমানে ৯০ টাকা লিটারে সয়াবিন তেল, ৫৫ টাকায় চিনি, ৫০ টাকা মসুর ডাল ও ২০ টাকায় এক কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে মাছ ও মাংসের দাম । গত বছরের তুলনায় এখন রুই ও কাতলা মাছের দাম ১২ থেকে ১৪ শতাংশ বেশি। বর্তমানে এ মাছ ২২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রোজা ঘনিয়ে আসায় মুরগির দাম আরও বেড়েছে। গত এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ব্রয়লার মুরগি ৩০ টাকা ও সোনালি ৫০ টাকা বেড়েছে। এক কেজি দেশি ব্র্যান্ডের গুঁড়া দুধের দাম ৫৪০ থেকে ৬০০ টাকা। গত বছর রমজানে ছিল ৪৪০ থেকে ৫৫৫ টাকা। এ হিসাবে কম দামের গুঁড়া দুধের দাম কেজিতে ১০০ টাকা বেড়েছে। গত এক মাসে কেজিতে গড়ে ২০ টাকা বেড়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এতে বিশেষ করে দৈনন্দিন খেটে খাওয়া মানুষগুলো পরিবার পরিজন নিয়ে আছে চরম উৎকন্ঠা আর সীমাহীন দুর্ভোগে। হিসেব মিলছেনা তাদের আয় ব্যয়ের সমীকরণে। একের পর এক পণ্যর দাম বৃদ্ধিতে বেতাগী বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির আহবায়ক পরেশ চন্দ্র কর্মকারসহ একাধিক ব্যবসায়ী যুক্তি হচ্ছে, বাজারে ক্রেতা সাধারণের চাহিদার তুলনায় পাইকারী ব্যবসায়ীরা কম আমদানি করতে পারছে। এতে করে কিছুটা সংকট দেখা দেওয়ায় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চাহিদার বীপরীতে আংশিক চড়া মূল্য নিেেচ্ছ যা মধ্যস্বত্তভোগী থেকে ক্রমন্বয়ে ভোক্তা সাধারণের উপর এর প্রভাব পড়ছে। উপজেলার উত্তর বেতাগী গ্রামের বাসিন্দা রিকশাচালক সৈয়দ আলী বলেন, নিত্যপণ্যের দাম যে হারে বেড়েছে সে হারে আয় বাড়েনি। বরং আগের চেয়ে আরও কমেছে। বর্তমানে সারাদিনে গড়ে ৩০০ টাকা আয় করা কঠিন। তাই প্রায়শই ধার-দেনা করে সংসারের খরচ চালাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: সুহৃদ সালেহীন বলেন, বর্তমান সময়ে সোয়বিন এবং চিনির দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বৃদ্ধির কারনে বাজার গুলোতে এর প্রভাব পড়েছে। তবে কেউ যাতে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি ও কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে এ বিষয়ে নিয়মিত পর্যক্ষেন করা হচ্ছে।