তিস্তা নদীবেষ্টিত রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ৩০টি চরে এবার তিন হাজার মেট্রিক টন মিষ্টি কুমড়া ও ৪৫ মেট্রিক টন স্কোয়াশ উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এসব ফসলের বাজার মূল্য প্রায় চার কোটি টাকা হতে পারে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। কাউনিয়ার চারটি ইউনিয়ন প্রতি বছর বন্যার কবলে পড়ে। এতে এখানকার মানুষের দুর্ভোগ পোহানোর পাশাপাশি ফসল ও গবাদিপশুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ উপজেলার ছোট-বড় ৩০টি চর রয়েছে। এসব চরের ২৪০০ হেক্টর জমির মধ্যে চাষাবাদ হতো ১৯৫০ হেক্টর জমিতে। এ বছর আরো ৮৩ হেক্টর অনাবাদি জমি চাষের আওতায় এনেছে উপজেলা কৃষি অফিস। উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে ৮৩ হেক্টর অনাবাদি বালুচরে মিষ্টি কুমড়া, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, স্কোয়াশ অন্যান্য সবজি চাষ করা হচ্ছে। চলতি মৌসুমে চরে উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া, স্কোয়াশ হবে সম্পূর্ণ বিষমুক্ত। ৫০০ কৃষককে মিষ্টি কুমড়া চাষের প্রশিক্ষণ ও ২০০ জনকে বীজ, সারসহ কারিগরী সহায়তা দিয়েছে কৃষি বিভাগ। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, চড়ে প্রায় তিন হাজার মেট্রিক টন মিষ্টি কুমড়া ও ৪৫ মেট্রিক টন স্কোয়াশ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এসব ফসলের বাজার মূল্য হতে পারে প্রায় তিন কোটি ৯০ লাখ টাকা। রংপুর বিএডিসির নিবাহী প্রকৌশলী এসএম মিজানুল ইসলাম জানান, চরের জমিতে সেচ সুবিধা দিতে সৌরশক্তি চালিত ভ্রাম্যমাণ নৌকায় এলএলপি স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ১৮ হেক্টর জমিতে সেচ প্রদান করা হচ্ছে। একর প্রতি সেচ প্রদানের খরচ আট হাজার থেকে এক হাজার টাকায় নেমে এসেছে। এ স্কিমের আওতাভুক্ত পানি ব্যবহারকারী কৃষকদের সুবিধায় স্থানান্তরযোগ্য সভাকক্ষ, বিশ্রামাগার শেড এবং পৃথক শৌচাগারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। রংপুর বিএডিসির তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সঞ্চয় সরকার জানান, চরের অনাবাদি জমি চাষের আওতায় এসেছে। সেই সঙ্গে মৌসুমি বেকার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ নৌকা ও ট্রলিতে সৌরশক্তি চালিত এলএলপি স্থাপন করা হয়েছে। এইচডিপিই পাইপ, ফিতা পাইপের মাধ্যমে পোর্টেবল সেচ প্রদান ব্যবস্থা ফলপ্রসূ হয়েছে। আশা করছি, এসব পদক্ষেপ সুফল বয়ে আনবে। চরের অনাবাদি জমিগুলোতে এবার কয়েক কোটি টাকার ফসল উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।