শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪৪ অপরাহ্ন

জামায়াতের সাবেক আমীর মকবুল আহমাদের ইন্তেকাল

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২১

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর মকবুল আহমাদ গত মঙ্গলবার ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। জামায়াতের ফেসবুক পেজে এ খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় গত কয়েকদিন ধরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
সাবেক আমিরে জামায়াত মকবুল আহমাদের ইন্তেকালে শোক প্রকাশ করেছেন সংগঠনটির বর্তমান আমির ডা. শফিকুর রহমান। তার ফেসবুক পেইজ থেকে বক্তব্যটি এখানে তুলে ধরা হলো। চলে গেলেন ইসলামী আন্দোলনের এক বর্ণালী মুজাহিদ সাবেক আমীরে জামায়াত জনাব মকবুল আহমাদ। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন…।আজীবনের এই দা’য়ী ইলাল্লাহ জামায়াতে ইসলামীর কঠিনতম সময়ের কা-ারী। আমাদের জন্য রেখে গেলেন অনেক শিক্ষা এবং উদাহরণ। রাব্বুল আলামীন তাঁর এই গোলামের তামাম জিন্দেগীর সমস্ত ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে নেকিতে পরিণত করে দিন। তাঁর নেক আমলগুলো কবুল করুন। শহীদ হিসেবে কবুল করে তাকে সম্মানিত করুন এবং জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করুন। মহান রবের কাছে আবেগ ও বুকভরা আকুতি।
সংক্ষিপ্ত জীবনী: অত্যন্ত সহজ সরল ব্যক্তিত্ব জনাব মকবুল আহমাদ ১৯৩৯ সালের ৮ই আগস্ট ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার ওমরাবাদ গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম নাদেরুজ্জামান। তাঁরা ৫ ভাই ও ৩ বোন। তাঁর পরিবারের সকল সদস্যই ইসলামী আন্দোলনের সাথে জড়িত।
শিক্ষা ও ক্যারিয়ার : মকবুল আহমাদের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় পূর্বচন্দ্রপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এখানে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে তিনি স্থানীয় দাগনভূঞা কামাল আতার্তুক উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। নবম শেণিতে তিনি জায়লস্কর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং এই স্কুল থেকে ১৯৫৭ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। প্রাথমিক পর্যায় থেকে মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সকল পরীক্ষায় তিনি কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের পরে তিনি ফেনী কলেজে ভর্তি হন। তিনি এ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং ১৯৬২ সালে বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বিএ পাশের পরে এক বছর সরকারী চাকুরী করার পরে চাকুরী ছেড়ে দেন এবং শিক্ষকতাকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করেন। তিনি নিজ এলাকার শরিষাদী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪ বছর এবং ফেনী সেন্ট্রাল উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন।
ইসলামী আন্দোলন : ছাত্রজীবন থেকেই তিনি সক্রিয়ভাবে ইসলামী আন্দোলনের সাথে জড়িত রয়েছেন। ছাত্রজীবন শেষ করে ১৯৬২ সালে জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন এবং ১৯৬৬ সালে জামায়াতে ইসলামীর রুকন (সদস্য) হন। ১৯৬৭ সাল থেকে ৬৮ সাল পর্যন্ত ফেনী শহর এবং ১৯৬৮ সাল থেকে ১৯৭০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তৎকালীন ফেনী মহকুমার আমীরের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য পদে ফেনী-সোনাগাজী নির্বাচনী এলাকা থেকে জামায়াতের প্রার্থী হিসাবে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ১৯৭০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ১৯৭১ সালের জুন মাস পর্যন্ত তিনি নোয়াখালী জেলা জামায়াতের আমীরের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ সালের জুনে জামায়াতের তৎকালীন আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে মকবুল আহমাদ ভারপ্রাপ্ত আমীরের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৬ সালের ১৭ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর তৃতীয় আমীর হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
পারিবারিক জীবন : তিনি ১৯৬৬ সালে লক্ষীপুর নিবাসী প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন ঢাকা আরমানিটোলা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের হেড মাওলানা মরহুম ওহিদুল হকের কনিষ্ঠা কন্যা জনাবা সুরাইয়া বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে।
সাহিত্যকর্ম ও দেশভ্রমণ : রাবেতা আল-আলম আল-ইসলামীর মেহমান হিসাবে তিনি ২বার হজ্জ পালন করেন। তিনি জাপান ও কুয়েত (সাংগঠনিক প্রয়োজনে) সফর করেন। একটি জাতীয় সাপ্তাহিক পত্রিকায় “জাপান সফর- দেখার অনেক, শিখার অনেক” এ বিষয় তার সফর অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি সুন্দর লিখা প্রকাশিত হয়।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com