সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৯ পূর্বাহ্ন

রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবী রৌমারীতে সীমান্ত যুদ্ধ দিবসে শ্রদ্ধার ফুল

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২১

‘ওয়াহিদ, কাদের, মাহফুজ শহীদদের-আমরা তোমায় ভুলি নাই’ এই শ্লোগানের প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী সীমান্তে সংঘর্ষের বর্ষপূর্তি ২০ বছর উপলক্ষে সাবেক এমপি রুহুল আমিনের সহযোগীতায় এলাকাবাসির আয়োজনে রবিবার (১৮ এপ্রিল) সকালের দিকে বড়াইবাড়ী দিবসে শ্রদ্ধার ফুল দিয়ে পালিত হয়েছে। শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন সাবেক এমপি রুহুল আমিন, বড়াইবাড়ি বিজিবি ক্যাম্প, কলাবাড়ি বিবিসি উচ্চ বিদ্যালয়, বড়াইবাড়ি গ্রামবাসির পক্ষে, কুটিরটর স্কুল এন্ড কলেজ, বারবান্দা সুর্য্য সংঘ, বীরযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম লাল,যুবসংহতি, শহীদ পরিবারের পক্ষে, বড়াইবাড়ি ব্যবসায়ীসহ এলাকার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন। ২০০১ সালের এই দিনে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ বড়াইবাড়ী গ্রামে অবৈধ ভাবে প্রবেশ করে নারকীয় তান্ডব চালায়। অকুতোভয় তৎকালিন বিডিআর ও গ্রামবাসীদের মিলিত প্রতিরোধে পিচপা হয় আগ্রাসনকারী বিএসএফ। নিহত হয় বাংলাদেশের তিন বীর বিডিআর জোয়ান। ভারতীয় পক্ষে নিহত হয় ১৬ বিএসএফ সদস্য। সেই থেকে ঐতিহাসিক এই দিনটি পালিত হয় ‘বড়াইবাড়ী দিবস’ হিসেবে। এলাকাবাসির দাবী বিজিবি ক্যাম্পে সামনে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, চলমান নির্মিত ব্রিজ ও রাস্তা তিন শহীদদের নামে নাম করন ও ঐতিহাসিক দিবসটিকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানান। সাম্প্রতিক করোনা ভাইরাস এর কারনে সিমিত পরিসরে এক আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বড়াইবাড়ি, চুলিয়ারচর, বারবান্দা উদযাপন কমিটির আয়োজনে বেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রুহুল আমিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাজিবপুর ডিগ্রী কলেজের সহকারি অধ্যক্ষ মোকলেছুর রহমান, শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিল, চরশৌলমারী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কে.এম ফজলুল হক মন্ডল, রাজিবপুর উপজেলা শাখার জেপির সভাপতি আব্দুর রশিদ, মহোনগঞ্জ ইউনিয়ন আ“লীগের সাধারন সম্পাদক ও (অব:) বিজিবি আজিজুল হক, নিহত ওয়াহিদুজ্জামান এর ছেলে দেলোয়ার ওয়াহিদ প্রমূখ। উল্লেখ্য যে, ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল ভোর রাতে ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশী সীমান্তে অবৈধ ভাবে প্রবেশ করে বড়াইবাড়ী গ্রামের ঘুমন্ত মানুষের উপর হামলা চালায় ও বাড়ি-ঘর নির্বিচারে জ্বালিয়ে দেয়। ওই দিন হামলার দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিয়েছিল বিডিআর-জনতা। আর সেই প্রতিরোধে বিএসএফ এর ১৬ জনের লাশ ফেলে পালিয়ে যায় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীরা। শহীদ হয়েছিল ৩৩ রাইফেলস্ ব্যাটালিয়নের ল্যান্স নায়েক ওয়াহিদুজ্জামান, সিপাহী মাহফুজার রহমান এবং ২৬ রাইফেলস্ ব্যাটালিয়নের সিপাহী আঃ কাদের। এছাড়াও আহত হয় বিডিআর এর হাবিলদার আব্দুল গনি, নায়েক নজরুল ইসলাম, ন্যান্স নায়েক আবু বকর সিদ্দিক, সিপাহি হাবিবুর রহমান ও সিপাহি জাহিদুর নবী। বিএসএফ এর তান্ডবে পুড়ে ছাই হয়েছিল বড়াইবাড়ী গ্রামের ৮৯ টি বাড়ি। সরকারি হিসেবে মোট ক্ষতির পরিমান ছিল ৭২ লক্ষ টাকা। কাটেনি সীমান্তের আতংক। গ্রামের মানুষ এখনও দুঃসহ স্মৃতিতে হঠাৎ রাতে আতকে উঠে। শেষ হয়নি তাদের দুঃখের দিন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com